ইসলামপন্থী মিলিশিয়ারাই ইউনিসকে হত্যা করেছে

লিবিয়ার বিদ্রোহীদের সামরিক শাখার প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ ইউনিসকে হত্যা করেছে একটি ইসলামপন্থী মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সদস্যরা। গত শুক্রবার বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়েছে।
তবে মুয়াম্মার গাদ্দাফির সরকার এ হত্যাকাণ্ডের জন্য আল-কায়েদাকে দায়ী করেছে। এদিকে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে বিদ্রোহীরা।
এদিকে ব্রাসেলসে ন্যাটোর বিবৃতিতে বলা হয়, লিবিয়ার তিনটি টেলিভিশনের ট্রান্সমিটার লক্ষ্য করে ন্যাটোর বিমান থেকে নির্ভুল নিশানায় হামলা চালানো হয়। গাদ্দাফির সরকারের ‘সন্ত্রাসী প্রচারণা’ স্তব্ধ করতে এ হামলা চালানো হয়েছে।
বিদ্রোহীদের জাতীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের (এনটিসি) তেলমন্ত্রী আলী তারহুনি বলেন, ‘এনটিসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা তদন্তে পাওয়া সব তথ্য প্রকাশ করব।’ তিনি বলেন, ওবাইদা ইবনে জাররাহ ব্রিগেডের সদস্যরাই জেনারেল ইউনিসকে হত্যা করেছে।
নিহত ইউনিস লিবিয়ার নেতা গাদ্দাফির খুব বিশ্বস্ত ছিলেন। তিনি ১৯৬৯ সালের অভ্যুত্থানে অংশ নেন। ওই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন গাদ্দাফি। ইউনিস পরে গাদ্দাফির পক্ষ ত্যাগ করে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দেন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে গাদ্দাফিকে হটাতে লড়াই করে আসছিলেন তিনি।
তারহুনি জানান, ইউনিসের লাশ গত শুক্রবার বেনগাজির উপকণ্ঠে পাওয়া যায়। তিনি জানান, অপরাধের নেপথ্যে থাকা একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর প্রধানের স্বীকারোক্তির পর বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা ইউনিসের মৃত্যুর সংবাদ পান।
তারহুনি বলেন, ‘ওই মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান এখন কারাবন্দী।’ তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো পরিষ্কার নয়।
তারহুনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী কয়েকজন ব্যক্তিকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না যে তারা কার পক্ষে এ কাজ করেছে।’
ত্রিপোলি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য আল-কায়েদাকে দায়ী করেছে। গাদ্দাফি সরকারের মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম ত্রিপোলিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ কাজের মাধ্যমে আল-কায়েদা এ অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি ও প্রভাবের বিষয়টি বোঝাতে চেয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের অন্য সদস্যরা এ সম্পর্কে জানেন। তবে তাঁরা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছেন না। কারণ, তাঁরা আল-কায়েদার ভয়ে আতঙ্কিত।’
এ হত্যাকাণ্ডকে ব্রিটিশ সরকারের মুখে চপেটাঘাত হিসেবেও বর্ণনা করেন মুসা ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘এটা ব্রিটিশ সরকারের জন্য একটি বড় আঘাত। যে কাউন্সিলকে তারা স্বীকৃতি দিয়েছে, সে কাউন্সিল নিজেদের সেনাবাহিনীর কমান্ডারকে রক্ষা করতে পারে না।’
গাদ্দাফি সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, এ হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে যে বিদ্রোহীদের লিবিয়া শাসনের সামর্থ্য নেই।
মুসা ইব্রাহিম গত শুক্রবার বলেন, গাদ্দাফির অনুগত বাহিনী গত বুধবার থেকে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে কমপক্ষে ১৯০ জন বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে।

No comments

Powered by Blogger.