শ্রীলঙ্কায় উন্নয়ন নিয়ে সন্তুষ্ট নয় তামিলরা

শ্রীলঙ্কার সংখ্যালঘু তামিলরা বলছে, উত্তরাঞ্চলের সাবেক যুদ্ধ এলাকায় প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে যুদ্ধ-পরবর্তী উন্নয়ন ও অবকাঠামোর যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, তাতে তাদের আসল উদ্বেগের এখনো সমাধান হয়নি। গতকাল শনিবার স্থানীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে সাংবাদিকদের তারা এ কথা জানায়।
উত্তরাঞ্চলের সাবেক যুদ্ধকবলিত এলাকাসহ দেশটির অনেক জায়গায় গতকাল স্থানীয় নির্বাচনে ভোট নেওয়া হয়। এ সময় সহিংসতায় একজন নিহত হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাফনার তামিলরা মনে করছে, এ নির্বাচন থেকে তাদের পাওয়ার আছে সামান্যই। থুবারাকি নাসেকওয়ারান নামের এক ভোটার বলেন, ‘এখানে আগেও এ ধরনের নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু পরিবর্তন আসেনি। এবারের নির্বাচনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলে মনে হচ্ছে।’
সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী থুবারাকি নাসেকওয়ারান (২২) এবারই প্রথম ভোট দিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের ভোট দেব, যাঁরা তামিলদের সহায়তার কথা ভাববেন।’
জাফনায় সেনা সদস্যদের বিপুল উপস্থিতির মধ্যে ভোট নেওয়া শুরু হয়।
পুলিশ জানায়, এর কয়েক ঘণ্টা আগে অনুরাধাপুর জেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্সের একজন কর্মী নিহত হয়েছেন।
সরকারি গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও সেনাদের উপস্থিতির কারণে জাফনা শহরের বাসিন্দা তামিলরা প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে অস্বীকৃতি জানায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সাংবাদিকেরা মতামত জানতে চাইলে অনেকে ‘কোন মন্তব্য নয়’ বলে একবাক্যে জবাব দেন।
পুনর্গঠন কর্মসূচির আওতায় শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলে অনেক অবকাঠামো প্রকল্প হাতে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে। এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য নর্দার্ন স্প্রিং’।
তবে প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে ও তামিলদের মধ্যে আস্থা স্থাপন করা খুব কঠিন কাজ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। উল্লেখ্য, রাজাপক্ষে জাতিগতভাবে সিংহলি। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে কোনো সরকারই তামিলদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি। অনেক তামিলই এলটিটিইর বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সিংহলি-বিরোধী তত্ত্বে উদ্বুদ্ধ হয়ে বেড়ে উঠেছেন।

No comments

Powered by Blogger.