ইরানের বিরোধী দলকে অর্থ দিতে চেয়েছিলেন মাহমুদ আব্বাস

ইরানে ২০০৯ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর সে দেশের বিরোধী দলকে একটি বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে সহযোগিতা করার ব্যাপারে একজন ফিলিস্তিনি ব্যবসায়ীকে প্রভাবিত করেছিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সম্প্রতি ফাঁস হয়ে যাওয়া এক গোপন নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আল-জাজিরার প্রকাশিত নথির উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, ২০০৯ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত জর্জ মিশেলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থার (পিএলও) মুখ্য আলোচক সায়েব এরাকাতের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এরাকাত মিশেলকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এখন এক কঠিন সময় চলছে। গাজা ও লেবাননে আহমাদিনেজাদের একচেটিয়া প্রভাব। আরব রাষ্ট্রগুলোও তেমন কিছু করছে না। আপনি জানেন, মুসাভিকে (ইরানের বিরোধীদলীয় নেতা) বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে মাহমুদ আব্বাস (ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট) একজন ফিলিস্তিনি ব্যবসায়ীকে প্রভাবিত করছেন। পরে জানা গেছে, আব্বাস ফিলিস্তিনি ওই ব্যবসায়ীকে ইরানের বিরোধীদলীয় নেতা মির হোসেন মুসাভিকে পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার দিতে বলেছিলেন। গাজায় হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাকে ইরান অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে। পিএলওকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে থাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইরানকে প্রতিরোধের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে আব্বাস ওই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গোপন নথি থেকে জানা যায়, এরাকাত আরেক বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তাদের বলেন, আলজাজিরা টেলিভিশনের মালিক কাতারের আমির ব্যক্তিগতভাবে আব্বাসের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২০০৯ সালের মে মাসে আরেক বৈঠকে এরাকাত জানান, তিনি ইরাকের কুর্দিস্তান সফর করেছেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রভাব খুব বেশি।
হামাস প্রসঙ্গে এরাকাত বলেন, ইরান হামাসকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করছে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের আধুনিকায়নের জন্য ইসরায়েলের পাশে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রয়োজন। তিনি বলেন, আজ যদি কায়রোতে ইসরায়েলের দূতাবাস না থাকত তাহলে আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেন হয়তো মিসরেই থাকতেন। তাঁর সহকারী আয়মান আল জাওয়াহিরিকেও সেখানে কোনো দোকান গড়ে বসে থাকতে দেখা যেত।

No comments

Powered by Blogger.