মাছের আকাল ঠেকাতে এর ব্যবহার বন্ধের বিকল্প নেই -কারেন্ট জালের যথেচ্ছ ব্যবহার

কারেন্ট জাল ব্যবহারের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে, এ থেকে জাটকা বা পোনা মাছও রেহাই পায় না। ফলে তা দীর্ঘ মেয়াদে মত্স্যসম্পদের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কারেন্ট জাল নিষিদ্ধ থাকলেও এর ব্যবহার থেমে নেই। প্রথম আলোর ক্রোড়পত্র ‘আলোকিত চট্টগ্রাম’-এ ৫ নভেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, কক্সবাজারে প্রায় ছয় হাজার ট্রলারে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরা হচ্ছে। কক্সবাজার শহরের ফিশারিঘাট, নুনিয়াছটা ও বাঁকখালী নদীর মত্স্য অবতরণকেন্দ্রে বেশি পরিমাণে এ ধরনের জালের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলাতেও এর যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে। এসব জাল থেকে মা-ইলিশ, জাটকাসহ অন্যান্য প্রজাতির ছোট মাছও রক্ষা পাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে মাছের আকাল দেখা দিতে পারে।
কক্সবাজার জেলা মত্স্য বিভাগ অনিয়মিতভাবে কিছু অভিযান পরিচালনা করে ঠিকই, কিন্তু তাতে কারেন্ট জালের ব্যবহার কিছুতেই কমছে না। বোটমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেছেন, মত্স্য বিভাগের তদারকি না থাকায় সাগর-উপকূলে নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বাড়ছে। কক্সবাজারে হাজার হাজার কারেন্ট জালের ব্যবহার যেন সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে ব্যঙ্গ করছে।
শুধু কক্সবাজারই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে জাটকা, রেণু পোনা ও ডিমওয়ালা মাছ নিধন করা হচ্ছে। এই নিধনের ফলে দেশের মত্স্যসম্পদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ অশুভ প্রবণতা বন্ধ না হলে অচিরেই মাছের আকাল দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে জনগণের একটি বড় অংশ প্রাণিজ আমিষ থেকে বঞ্চিত হতে পারে। তাই মত্স্যসম্পদ রক্ষায় কারেন্ট জালের ব্যবহার, উত্পাদন ও বিপণন বন্ধ করার বিকল্প নেই। এ জন্য নদীগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরদারি, অভিযান চালানো ও নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।

No comments

Powered by Blogger.