সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের জবাবে আ.স.ম রবের আলটিমেটাম

সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন আ.স.ম আবদুর রব। গতকাল চৌমুহনীর পাবলিক হলে বেগমগঞ্জ উপজেলা ও পৌর শাখা জেএসডির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে রব বলেন, সিরাজুল আলম খানকে অস্বীকার করলে অনেক কিছুই তো থাকে না। বঙ্গবন্ধুর উপাধির বা কী হবে? মনে করতে হবে- ১৯৬২ সালে নিউক্লিয়াস গঠন করে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি না নিলে ৬ দফা, ১১ দফা, জাতীয় পতাকা ও জয়বাংলা স্লোগান সৃষ্টি হতো না। আসম রব বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার মহানায়ক হলে সিরাজুল আলম খাঁন স্বাধীনতার রূপকার। আসম রব বলেন, অপ্রিয় অনেক সত্যকথা বলতে চাই না। সিরাজুল আলাম খাঁনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কি সম্পর্ক ছিল আমার চেয়ে কেউ  বেশি জানে না। রাজনৈতিক তাত্ত্বিক গুরু দাদাভাই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে আপনার বাবাকে বাঁচিয়ে এনেছেন। উল্লেখ্য, ৮ই মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিরাজুল আলম খাঁনকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কলকাঠি নাড়ানোর অভিযোগ আনেন। ওই বক্তব্য ৭ দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দিয়ে আসম রব বলেন, আপনার দলের নেতারা স্বাধীনতার সময় কে কি করেছেন তা বলতে বাধ্য হবো। একজন রাজনৈতিককে সাজা দিয়েছেন। আর হাজার হাজার কোটি টাকার লুট করার জন্য আপনার দলের নেতা কর্মীদের বিচার করছেন না। হিটলার মসুলিনি নেই, আপনিও থাকবেন না। স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদ বেশিদিন টিকতে পারে না। তিনি বলেন, ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে। ঘুষ, দুর্নীতি, অপহরণ, হত্যা, নারী ধর্ষণ ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ এটাই কি আপনার উন্নয়ন। স্বাধীন দেশে পারমিশান নিয়ে রাজনীতি করি না, করব না। লুটপাটকারীরা, চোররা এখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ছবক দিচ্ছেন আমাদের। এ ডিক্টেটরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের অপশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিতে হবে। আনোয়ারুল কবির মানিকের সভাপতিত্বে সভায় কেন্দ্রীয় জেএসডি সেক্রেটারি আবদুল মালেক রতন, মিসেস তানিয়া রব, আতাউল করিম ফারুক, মো. সিরাজ মিয়া, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জেলা সভাপতি আবদুল জলিল চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি এডভোকেট কাউসার নিয়াজী, শহীদুল ইসলাম খোকন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে জাসদের দ্বিমত
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) তাত্ত্বিক গুরু ‘সিরাজুল আলম খানের’ ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পূর্বে ও পরের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতিবাচক মন্তব্যে দ্বিমত জানিয়েছে জাসদ। শনিবার দলের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দ্বিমত জানান। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ১৯৭১ সালের ১লা থেকে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত নিউক্লিয়াসের পরিচালনায় স্বাধীন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন, ইশতেহার পাঠ, জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচন, রাজপথে প্রকাশ্যে সামরিক কুচকাওয়াজ ও প্রশিক্ষণ ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণের ইস্পাতসম ঐক্য গড়ে তোলে। যার ফলে ২৫শে মার্চ হানাদার বাহিনীর গণহত্যা শুরুর মুহূর্ত থেকেই দ্বিধাহীন চিত্তে সমগ্র দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে দাবি জানানো ও ভাষণের পর তা নিয়ে কথা বলা দেশবাসী তথা স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রযোদ্ধা ছাত্র-তরুণদের দুর্বার আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন। আর ছাত্র-তরুণদের আকাঙ্ক্ষাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সবসময়ই সযত্নে লালন করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.