শত্রুতা ঘুচিয়ে বন্ধুত্বের পথে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের অহিনকুল সম্পর্ক। একসময় জোট করলেও দুই দলের অবস্থান দুই মেরুতে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দল দুটির কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে, তারা শত্রুতা ঘুচিয়ে বন্ধুত্বের পথে এগোচ্ছে। দেশজুড়ে কোথাও বিজেপির পক্ষে, আবার কোথাও বিপক্ষে হাওয়া বইছে।
বিজেপির ঘাঁটি মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশে স্থানীয় সরকার ও বিধায়ক পদে উপনির্বাচনে কংগ্রেসের পক্ষে হাওয়া ঘুরেছে। কংগ্রেসের নতুন দলীয় প্রধান রাহুল গান্ধী বুঝতে পেরেছেন, বিজেপির ওপর মানুষের মোহ ভাঙতে শুরু করেছে। তাই আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করাবে কংগ্রেস। তখন এমন ঘটনা ঘটতে পারে যে এককভাবে সরকার গড়ার মতো আসন বিজেপি না-ও পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে জোট করে ক্ষমতায় যেতে হবে তাদের। তাই আগে থেকেই বিজেপিবিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছেন রাহুল। তাঁর পরিকল্পনায় আছে, বিজেপি ও কংগ্রেস কাছাকাছি আসন পেলে জোট করে যাতে কংগ্রেস ক্ষমতায় যেতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা। সরকার গড়তে গেলে মমতার তৃণমূলের সমর্থন যে জরুরি-তিনি সেটি অনুধাবন করতে পেরেছেন। তাই মা কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে সঙ্গে নিয়ে ছেলে রাহুল তৃণমূলের মমতার সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন।
যোগাযোগও শুরু হয়ে গেছে। গত শুক্রবার মুম্বাইয়ে এক অনুষ্ঠানে সোনিয়া গান্ধী জানান, শিগগিরই সমমনা দলগুলোর নেতাদের নিয়ে নয়াদিল্লিতে ভোজের আয়োজন করছেন তিনি। সেখানে থাকবেন মমতাও। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির এক বৈঠকে মমতা ঘোষণা দেন, আসন্ন রাজ্যসভার পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি শূন্য আসনের মধ্যে একটিতে তাঁরা কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভিকে সমর্থন দেবেন। রাজ্য কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে চায় না। তবে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই শেষ কথা। কেন্দ্রীয় কংগ্রেসের সিদ্ধান্তেই অভিষেকের প্রার্থিতা চূড়ান্ত হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.