ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি!

প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যখন অপকর্ম ও অবৈধ কাজে জড়িত থাকেন, তখন তাঁদের প্রতিহত করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। জামালপুর সদর উপজেলার জয়রামপুর ও ভাটিপাড়া এলাকায় কৃষকের ফসলি জমি থেকে মাটি বিক্রি করার কাজটি সে কারণেই ঘটতে পারছে। গতকাল শনিবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জালাল উদ্দিন নামের আওয়ামী লীগের এক সমর্থকের নেতৃত্বে ছয় মাস ধরে জয়রামপুর ও ভাটিপাড়া এলাকায় ১০-১৫ জন কৃষকের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে উল্টো কৃষকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মাটি কেটে নেওয়ায় এসব জমিতে কয়েক বছর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। এভাবে অবাধে কৃষিজমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে, তা কি স্থানীয় প্রশাসনের চোখে পড়ছে না?
তাদের কি কোনো দায় নেই? জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তরই–বা কী করছে? এ ব্যাপারে তাদের কোনো পদক্ষেপ নেই কেন? নাকি প্রভাবশালী বলে কেউ জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? জালাল উদ্দিনের বক্তব্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও জেলার সরকারদলীয় অনেক নেতার সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক রয়েছে। অবস্থা তো অনেকটা মগের মুল্লুকের মতো। যাঁর যা খুশি করছেন, কিন্তু কারও যেন কিছু বলার নেই। এভাবে মাটি কাটার কারণে কৃষিজমিগুলো যে ক্ষতির মুখে পড়ছে, তা সহজেই পূরণ হওয়ার নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির উপরিভাগের চার-ছয় ইঞ্চি মাটিতেই মূলত পুষ্টিগুণ থাকে বেশি। তাই ওপরের অংশ কেটে নিলে দীর্ঘ সময়ের জন্য কৃষিজমি অনুর্বর হয়ে পড়ে। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ফসলের উৎপাদন কমে যায়। এ ছাড়া মাটি কাটার কারণে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে। কাজেই এ ব্যাপারে হেলাফেলা করার কোনো সুযোগ নেই। স্থানীয় প্রশাসনকে অবিলম্বে এই অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধ করতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রভাবশালী বলে তাঁকে ছাড় দেওয়া যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.