ভোলায় নর্থ-১ ক্ষেত্র থেকে পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন শুরু

ভোলা নতুন গ্যাসক্ষেত্র ভোলা নর্থ-১ এ পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে।শনিবার দুপুর ১টায় ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝিরহাটের গ্যাসক্ষেত্রে বাপেক্সর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওশাদ ইসলাম বার্নারে আগুন প্রজ্বলন করে গ্যাসের অস্তিত্বের প্রমাণ ও মজুত পরীক্ষা ( ডিএসটি) করেন। এ সময় ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাংবাদিকদের জানান, এটি দেশের ২৭তম গ্যাসক্ষেত্র। এর নর্থ-১ কূপের ৩ হাজার ২০০ মিটার গভীরতায় গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেছে। গ্যাসের মজুত ও চাপ পরীক্ষাকে বলা হয় ডিএসটি । এমন ডিসটি-১ ও ডিএসটি-২ পরীক্ষা শেষেই গ্যাসের প্রকৃত মজুতের পরিমাণ নিশ্চিত হবে। তবে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে মজুত ৬০০ বিলিয়ন ঘনফুট ছাড়িয়ে যাবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ভোলা নর্থ-১ কূপের প্রকল্প পরিচালক মো. ফজলুর রহমান, বাপেক্সের ডিজিএমসহ কর্মকর্তারা। সূত্র জানায়, ভোলা নর্থ-১ কূপখননের কাজ শুরু হয় ৯ ডিসেম্বর। জ্বালানি সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী খননকাজের উদ্বোধন করেন। গত সপ্তাহে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন গ্যাসক্ষেত্রে গ্যাসের সন্ধান মিলেছে বলে জানান। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শনিবার ওই কূপ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার চাপে গ্যাস বের হয়ে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাপেক্স কর্মকর্তরা। দুই বছর আগে পেট্রোবাংলার অধীন সিসিমিক জরিপে মাঝির এলাকায় গ্যাস জোনের অস্তিত্ব মেলে। ওই জরিপের ভিত্তিতেই রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাপেক্স এ তত্ত্বাবধানে রাশিয়ান কোম্পানি গাজপ্রম খননকাজ করছে। কূপের ম্যানেজার ও ড্রিলিং মনিটরিং টিমের প্রধান হেলাল উদ্দিন জানান, ড্রিলিং কাজ শেষে মজুত পরিমাপের জন্য ডিএসটি-১ কাজ শুরু করা হয়েছে।
এটি সম্পূর্ণ আলাদা জোন। এটি দেশের জন্যও সুখবর। সূত্রটি জানায়, ভোলায় এ নিয়ে ৩টি গ্যাসক্ষেত্রে ৬টি কূপখনন করা হয়েছে। ইস্ট-১ ও নর্থ-১ কূপখনন করে রাশিয়ান গাজপ্রম কোম্পানি। ওই কোম্পানি দেড় মাস আগে ৬০ কিলোমিটার দূরের বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুর ইস্ট-১ কূপখনন করেছিল। ওই কূপে ৭০০ বিলিয়ন গ্যাসের মজুত পাওয়া যায়। ভোলায় ৬টি কূপের গ্যাসের মজুত প্রায় পৌনে ২ ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে যাওয়ার ধারণা করছেন বাপেক্স কর্মকর্তারা। ফলে এ অঞ্চলে মজুত গ্যাস দিয়ে কলকারখানা স্থাপনে আর কোনো বাধা থাকছে না বলেও জানান, বিশেষজ্ঞরা। বাপেক্স সূত্র জানায়, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া এলাকায় ৪টি ও টবগি এলাকায় ১টিসহ ৫টি কূপ ইতিমধ্যে খনন শেষে গ্যাসের মজুত নিশ্চিত হয়েছে। ৪টি থেকে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তবে এই ৫টি কূপের গ্যাসের স্তর কাছাকাছি রয়েছে। ভোলা-নর্থ কূপ সর্বশেষ খননকৃত শাহবাজপুর ইস্ট-১ কূপ থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। এ কূপে গ্যাসের আলাদা জোন রয়েছে। প্রথম ১৯৯৫ সালে বোরহানউদ্দিন কাচিয়া ইউনিয়নের প্রথম কূপখননের পর বের হয়ে আসা গ্যাস প্রজ্বলন করা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই এলাকায় আরও ৪টি কূপখনন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভোলায় আরও কয়েকটি গ্যাসের জোন রয়েছে। ওই স্থানেও কূপখনন করা হলে গ্যাসের মজুত আরও বাড়বে।

No comments

Powered by Blogger.