জলবায়ু পরিবর্তনে সবুজ হয়ে উঠছে এন্টার্কটিকা

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবুজ হয়ে উঠছে এন্টার্কটিকা মহাদেশ। দক্ষিণ মেরুর বরফ ছাওয়া ধবল জমিনে দিন দিন বাড়ছে সবুজের বিস্তৃতি। নতুন এক গবেষণার ভিত্তিতে এই তথ্য তুলে ধরেছেন একদল বিজ্ঞানী। তারা দাবি করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার কারণে বদলে যাচ্ছে এন্টার্কটিকার হিমেল রাজ্যের পরিবেশ। বরফাবৃত এ মহাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় উপদ্বীপের উপকূলগুলোতে এক ধরনের শৈবাল দ্রুতই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, গত ৫০ বছরে ওই এলাকাগুলোতে শৈবালের পরিমাণ এবং গাছ জন্মানোর হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অর্থ মহাদেশটি ভবিষ্যতে সবুজ গাছপালায় ভরে যেতে পারে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। গবেষণাটি বৃহস্পতিবার কারেন্ট বায়োলজি নামে জার্নালে প্রকাশিত হয়। যুক্তরাজ্যের এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ম্যাথিউ আমেসবারি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রিটিশ এন্টার্কটিকা সার্ভে এবং ডরাহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নিয়ে গবেষণাটি করেছেন। এন্টার্কটিকা উপদ্বীপের উত্তরাংশের প্রায় ৪০০ মাইল বা ৬৪০ কিমি. এলাকাজুড়ে গবেষণাটি চালিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণায় বর্তমানে এন্টার্কটিকা মহাদেশের এক শতাংশের কম এলাকায় শৈবাল জাতীয় গাছ রয়েছে বলা হয়েছে। এখানকার মাটির নমুনা পরীক্ষা করে তারা দেখতে পেয়েছেন, এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে আরও ১৫০ বছর আগে। সহকারী গবেষক ম্যাথিউ আমেসবারি বলেন, গত ৫০ বছরে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলে শৈবালের মতো গাছের বৃদ্ধি নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে এন্টার্কটিকার বিশাল অঞ্চল বরফশূন্য হয়ে পড়বে এবং ভবিষ্যতে এন্টার্কটিকা উপদ্বীপ আরও সবুজ হয়ে উঠবে।
গবেষণায় এন্টার্কটিকার এলিফ্যান্ট আইল্যান্ড, আর্ডলি আইল্যান্ড ও গ্রিন আইল্যান্ডকে জরিপের আওতায় আনা হয়। এ তিনটি এলাকায়ই সবচেয়ে পুরু ও পুরনো শৈবাল দেখা গেছে। আমেসবারি বলেন, পুরো এন্টার্কটিকা সবুজ হবে না। তবে বর্তমানে যেমনটা তার চেয়ে সবুজ ভবিষ্যতে দেখা যাবে। এর আগে যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীরা একই বিষয়ে গবেষণা চালান। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারে গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়। গবেষণা প্রতিবেদন মতে, এন্টার্কটিকা বলতে বারো মাস জমাট বরফে ঢাকা যে মহাদেশটিকে বোঝাত, এখন সেখানে একচেটিয়া শুভ্রতা নেই। বড় গাছপালা বলতে যা বোঝায়, এখনও এর অস্তিত্ব সেখানে নেই। তবে ফুল হয় এমন দুটি উদ্ভিদ গত ৫০ বছরে বেশ ছড়িয়ে পড়েছে। এগুলো হচ্ছে ‘এন্টার্কটিক হেয়ারগ্রাস’ নামে এক ধরনের দূর্বাঘাস। অন্যটি ‘এন্টার্কটিক পার্লওর্ট’, যা এক ধরনের ছোটখাটো ঝুপালো গাছ। এন্টার্কটিকার পশ্চিমাঞ্চলীয় উপদ্বীপ ও আশপাশের দ্বীপে রয়েছে এই উদ্ভিদ দুটি। এর মধ্যে হেয়ারগ্রাসের বিস্তার বেশ দ্রুত ঘটছে বলে বিজ্ঞানীদের দাবি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার কারণে বরফ গলে যাওয়ায় বিস্তৃত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে এসব উদ্ভিদ। যুক্তরাজ্যের ব্যাঙ্গর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী পল হিল বলেন, ‘এন্টার্কটিকার কিছু এলাকা ক্রমেই সবুজ হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.