এবার দূরপাল্লার রকেট ছুড়ল উত্তর কোরিয়া

এবার কংমিয়ংসং-৪ নামের শক্তিশালী দূরপাল্লার রকেট
উৎক্ষেপণ করল উত্তর কোরিয়া। রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত
উত্তর কোরিয়ান
টেলিভিশন থেকে গতকাল ছবিটি ধারণ করা হয় l এএফপি
হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার এক মাস পর উত্তর কোরিয়া এবার শক্তিশালী দূরপাল্লার রকেট উৎক্ষেপণ করেছে। তবে দেশটির দাবি, সফলভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে তারা। খবর বিবিসি ও এএফপির।পশ্চিমাদের হুমকিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গতকাল রোববার উত্তর কোরিয়া উত্তর পিয়ংগান এলাকার সোহাই মহাকাশকেন্দ্র থেকে এই রকেট উৎক্ষেপণ করে।
উত্তর কোরিয়ার এ কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিউইয়র্কে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। বৈঠক শেষে জানানো হয়, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে শিগগির নতুন করে অবরোধ প্রস্তাব আনা হবে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুসারে, উত্তর কোরিয়া কোনো ধরনের পারমাণবিক বোমা বা ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারবে না।
উত্তর কোরিয়া অবশ্য আগেই জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে জানিয়েছিল, তারা কক্ষপথে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে চায়। তবে পিয়ংইয়ং কৃত্রিম উপগ্রহ নয়, বরং নিষিদ্ধ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির পরীক্ষা চালিয়েছে বলে বলছেন সমালোচকেরা।
রকেট উৎক্ষেপণের খবরে জরুরি বৈঠকে বসেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাই। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুন স্যাং-জিয়ুং বলেন, সকাল ৯টা ৩১ মিনিটে তাঁদের একটি যুদ্ধজাহাজ থেকে গতকাল এ রকেট উৎক্ষেপণের ঘটনা প্রথম ধরা পড়ে।
উৎক্ষেপণের চার মিনিট পর রকেটটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৪০ মাইল উঁচুতে থাকাকালে রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। তখন রকেটটি উৎক্ষেপণস্থল থেকে ৪৯০ মাইল দূরে দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের কাছাকাছি ছিল। জাপানের দক্ষিণ ওকিনাওয়া দ্বীপের ওপর দিয়ে অতিক্রম করে রকেটটি।
তবে এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার জাতীয় মহাকাশ উন্নয়ন সংস্থা বলেছে, পৃথিবী পর্যবেক্ষণের জন্য কংমিয়ংসং-৪ নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। প্রায় ১০ মিনিট পর এটি কক্ষপথে প্রবেশ করেছে। পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, নেতা কিম জং-উনের নির্দেশেই এ উৎক্ষেপণ চালানো হয়। ভবিষ্যতে এ রকম উৎক্ষেপণ আরও করা হবে।
উত্তর কোরিয়ার এ পদক্ষেপকে জাতিসংঘ প্রস্তাবের ‘ঘোর লঙ্ঘন’ আখ্যায়িত করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সতর্ক করে বলেন, পিয়ংইয়ংকে জবাবদিহির আওতায় আনতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উত্তর কোরিয়ার দাবি, তাদের মহাকাশসংক্রান্ত প্রকল্প পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক গবেষণাধর্মী বিষয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, এমনকি চীনও এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

No comments

Powered by Blogger.