বন্দি অ্যাসাঞ্জ কি অসুস্থতার গ্রাসে

দীর্ঘদিন বাদে ইকুয়েডর দূতাবাসের ব্যালকনিতে দেখা গেল উইকিলিক্সের প্রতিষ্ঠাতাকে৷ হাতে জাতিসংঘের সেই রিপোর্ট, যা দু'দিন আগেই জানিয়েছে, লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে বেআইনিভাবে আটক করে রাখা হয়েছে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে৷ সেই রিপোর্ট তুলে ধরেই অ্যাসাঞ্জ জানালেন এই মুহূর্তে জাতিসংঘের দূতাবাস ছেড়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা তার নেই৷ কারণ, জাতিসংঘের রিপোর্টকে ফুত্কাপরে উড়িয়ে দিয়ে বৃটিশ বিদেশ সচিব ফিলিপ হামন্ড জানিয়েছেন, এই দাবি খুবই হাস্যকর৷ বৃটিশ প্রশাসনের অবস্থান এতে মোটেই বদলাচ্ছে না৷ অর্থাত্, অ্যাসাঞ্জ যদি দূতাবাস ছেড়ে বেরোন, তবে তাকে গ্রেফতার করা হবে৷ অথচ, জাতিসংঘ জানিয়ে দিয়েছে, এর পরও যদি অ্যাসাঞ্জকে জাতিসংঘে আটক করে রাখা হয়, তবে তাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত৷ তবে, বৃটিশ প্রশাসনের অনড় অবস্থানকে এ দিন কার্যত তুলোধনা করেছেন অ্যাসাঞ্জ৷ তার কথায়, 'এটা আমার কাছে কোনো আঘাত নয়৷ বৃটিশ প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে আমার মনোবল আরও জোরদার হবে৷ কিন্ত্ত আমার সন্তানরা যে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে তাদের বাবার সঙ্গ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তার দায় কে নেবে? কোনো দেশে কোনো যথাযথ অভিযোগ ছাড়াই এ ভাবে আমাকে আটকে রেখে আমার সন্তানদের বঞ্চিত করার অধিকার আমেরিকা, সুইডেন বা বৃটিশ সরকারের রয়েছে কি?' প্রসঙ্গত, সুইডেনে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে ২০১০ সালে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়৷ উনি অবশ্য বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷ এর পরই অ্যাসাঞ্জকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আন্তর্জাতিক পরোয়ানা জারি করে সুইডেনের আদালত৷ এই প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে বৃটেনের আদালতে আবেদন জানান অ্যাসাঞ্জ৷ কিন্ত্ত তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়৷ এর পরই দূতাবাসে আশ্রয় নেন তিনি৷ বৃটেন পুলিশ জানিয়ে দেয়, দূতাবাস থেকে বেরোলেই অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করা হবে৷ এখনই দূতাবাস থেকে মুক্তি না পেলেও জাতিসংঘের রিপোর্টে বেজায় খুশি উইকিলিক্সের প্রতিষ্ঠাতা৷ তার কথায়, 'এটা বড়সড় জয়, তা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই৷ এটা শুধু আমার জন্য নয়, আমার পরিবার ও সন্তানদের জন্যও বড়সড় জয়৷' তবে, সুইডিশ যে মহিলা অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন, তার আইনজীবীর মতে, জাতিসংঘের এই রিপোর্ট খুবই 'অপমানজনক'৷ তার মতে, 'অ্যাসাঞ্জের উচিত এখনই তার ব্যাগপত্তর গুছিয়ে দূতাবাস ছেড়ে বেরিয়ে পড়া এবং পুলিশ ও তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করা৷

No comments

Powered by Blogger.