চীনা প্রস্তাব বাতিল করায় সুবিধা হয়েছে ভারতের

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্কের কারণে নয়া দিল্লি বাংলাদেশের নতুন গভীর সমুদ্র বন্দর পায়রায় উন্নয়নে আগ্রহ দেখিয়েছে। এটা ভারতের একটি বড় উদ্যোগ। অন্যদিকে আলাদাভাবে কক্সবাজার উপকূলে মাতারবাড়ি বন্দরের উন্নয়ন কাজ করতে পারে জাপান। তবে এক্ষেত্রে কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় চীনের যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা ছিল তা বাতিল করেছে ঢাকা। এতে সুবিধা হয়েছে ভারতের। অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। ইন্দ্রানি বাগচির লেখা প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মধ্যে হামবানটোটা ও গোদার বন্দরের মতো সোনাদিয়া বন্দরকে নিয়ে বিস্তার আলোচনা। বলা হয়, ভারতের জলসীমার চারপাশে কৌশলগত অবস্থানের জন্য এ বন্দরগুলো হলো চীনের জন্য মুক্তোর মালা। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চট্টগ্রামের কাছে পায়রা বন্দরের অবস্থান। এটি ভারতের উপকূল থেকেও কাছে। তবে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সোনাদিয়া বন্দরের উন্নয়ন কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল চীন। যদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারতো চীন তাহলে ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের খুব কাছে চীন তার অবস্থান পাকাপোক্ত করতে পারতো। ওদিকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে মাতারবাড়ির উন্নয়ন কাজ করছে জাপান। সোনাদিয়া বন্দরের উপযোগ্যতাই শুধু চীন যাচাই করে নি, একই সঙ্গে তারা এ বন্দরে বড় অংকের অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে শোনা যায়। চীনের এই প্রস্তাব বাংলাদেশ বাতিল করেছে। পরিষ্কারভাবে বলা যায়, এটা বাংলাদেশের কৌশলগত সিদ্ধান্ত। সন্দেহ নেই তাতে ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশ সহায়ক হয়েছে। পায়রা বন্দরের বিষয়ে ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের অধীনে প্রতিষ্ঠা করা হয় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বন্দরটি তৈরি হবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। সূত্রগুলো বলেছেন, এর উপযুক্ততা যাচাই করছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। বন্দরটি নির্মাণ করতে সময় লাগবে সাত বছরের বেশি। তবে এটা শুধু একটি বন্দরই নয়, একই সঙ্গে এটি একটি গভীর চ্যানেল হিসেবে কাজ করবে, যাতে বড় বড় জাহাজগুলো বন্দরে আসা-যাওয়া করতে পারে। চট্টগ্রাম বন্দরে এত বেশি পলি পড়ে যে, শুধু ছোট ছোট জাহাজ সেখানে প্রবেশ করতে বা বের হতে পারে। সেটা নির্ভর করে জোয়ার ভাটা কখন আসবে যাবে তার ওপর। পায়রা বন্দরে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন কোম্পানি। একই সঙ্গে চীনা কোম্পানিগুলোকে এ বন্দর নির্মাণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা থেকে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, এ প্রকল্পে ১০টি দেশ তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। শ্রীলংকায় একই রকম প্রতিযোগিতায় কাজ হারানোর পর চীন একই ভাবে সোনাদিয়া ইস্যুতে হেরে গেল।

No comments

Powered by Blogger.