স্বর্ণের খনি বিমানবন্দর- দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ হচ্ছে

আকাশপথে চোরাচালানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বজুড়ে কুখ্যাতি অর্জন করেছে। দেশের প্রধান বিমানবন্দর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি সপ্তাহেই স্বর্ণ ধরা পড়ছে। যেন ঢাকার বিমানবন্দর হয়ে উঠেছে ‘স্বর্ণের খনি’। এক বছরের বেশি সময় ধরে এ ধরনের চোরাচালানকৃত বিপুল স্বর্ণ উদ্ধার করা হলেও তা বন্ধ হচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে, আসলে কতটুকু উদ্ধার হচ্ছে আর কতটুকু বাইরে যাচ্ছে। যদি চোরাচালানের সব স্বর্ণ আটক করা হয়ে থাকে, তাহলে চোরাচালানিদের এই বিমানবন্দরকে আর ব্যবহার করার কথা নয়।
চোরাচালানের জন্য বাংলাদেশ কতটা নিরাপদ রুট, তার প্রমাণ পাওয়া গেল উত্তর কোরিয়ার এক কূটনীতিকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ উদ্ধারের মাধ্যমে। বিশ্বজুড়ে উত্তর কোরিয়ার ইমেজ ভালো নয়। দুর্বিনীত রাষ্ট্র হিসেবে এর পরিচয়। সে দেশের একজন কূটনীতিক স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত থাকা খবর হিসেবে বেশ চমকপ্রদ। কিন্তু সেই সাথে এই খবরও সব দেশে যাচ্ছে যে, এমন এক দেশের বিমানবন্দরে ঘটনাটা ধরা পড়ল যে দেশের বিমানবন্দর স্বর্ণ চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে পরিচিত। এমনিতেই রাজনৈতিক কারণে উত্তর কোরিয়ার সাথে বাংলাদেশের তুলনা হচ্ছে। এবার স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে নামটি জড়িয়ে গেল।
এতে বাংলাদেশের ইমেজ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ হচ্ছে। বিমানবন্দর থেকে নিরাপদে বেরিয়ে আসার নিশ্চয়তা না পেলে কেউ এভাবে কোটি টাকার স্বর্ণ আনার কথা নয়। তাহলে বিমানবন্দরে এদের সহায়তার জন্য প্রভাবশালী কেউ-না-কেউ কাজ করছে। হয়তো যোগাযোগ বা দেনদরবারের ঘাটতির কারণে দু-একটি চালান আটকে যাচ্ছে। চোরাচালান বন্ধ করতে হলে সর্ষের ভেতরের ভূত আগে তাড়াতে হবে। তা না হলে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধ করা যাবে না। আমরা আশা করব, বিমানবন্দরে কঠোরভাবে শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে। যারা চোরাচালানের সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.