জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে রিমান্ডে

জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে রিফাত আবদুল্লাহ খানকে জামিন না দিয়ে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার বিষয়ে করা বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে জামিন আবেদন নাকচ করেন আদালত।
রোববার পল্লবী থানায় দায়ের করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই মিজানুর রহমান তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম স্নিগ্ধা রাণী চক্রবর্তীর আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চান। আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল করে জামিন চায়। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে উপরোক্ত মর্মে নির্দেশ দেন। আইনজীবী তার পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা চাইলে আদালত উপরোক্ত মর্মে নির্দেশ দেন।
আইনজীবীরা আদালতে বলেন, গত শুক্রবার রিফাত আবদুল্লাহ খানকে ঢাকার উত্তরা থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সময় হল থেকে সাদা পোশাকধারীরা নিয়ে যায়। পরে বিভিন্ন পত্রিকায় তার মায়ের আকুতি-সংবলিত বক্তব্য প্রচার হলে রোববার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তিন দিন সাদা পোশাকধারীরা তাকে কোথায় নিয়ে রেখেছে এবং তাকে নিয়ে কেন নির্যাতন করেছে সে বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই পুলিশের। পুলিশ তাকে ধরে উত্তরা পরীক্ষার হল থেকে। আর মামলা করেছেন পল্লবী থানায়। এ ব্যাপারে এজাহারে কোনো বক্তব্য নেই। তবে আসামির বিরুদ্ধে কেবল বক্তব্য আছে।
আইনজীবীরা বলেন, তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছে। আদালতকে দেখতে হবে তার বয়স ১৬ বছর। সে এসএসসি পরীক্ষার্থী। সেদিকে বিবেচনা করা প্রয়োজন। তার পিতা রাজনীতি করলেও সে কোনো রাজনীতি করেনি। সে নাবালক ছেলে। সেজন্য তার প্রতি মানবিক দৃষ্টি দেয়া উচিত। আদালত সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে আদালতকে।
তারা বলেন, রিফাতকে ধরে নিয়ে কোনো মামলার প্রথমে না দিয়ে তার বাসা নিয়ে যায় সেখানে তার পড়ার রুমে যায় এবং বিভিন্ন জিনিসপত্র তছনছ করে। অতপর কোনো কিছু না পেয়ে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে পুলিশ নিজেরা তৈরি করে এই মামলা দিয়েছে। সেজন্য তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তারা পায়নি। স্রেফ তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না পেয়ে ও পুলিশ অতি উৎসাহিত হয়ে এই মিথ্যা মামলা দেয়ায় তাকে রিমান্ড না দিয়ে জামিন দেয়া প্রয়োজন এবং তার পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মোঃ মশিউল আলম, মোঃ আঃ রাজ্জাক, এস এম কামালউদ্দিন, মোঃ দেলোয়ার হোসাইনসহ বেশকিছু আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে বলা হয়েছে, আসামি তার ফেসবুকে উল্লেখ করেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে সম্মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন। উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের জীবননাশের হুমকি প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়েছিল। এতে লোক ছিল ১৫/২০ জন। আর মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব এর মৃত্যু নয়, মৃত্যুর একটি ঘোষণা হয়েছে মাত্র; সাথে সাথে সারা দেশে প্রায় ২০০ মানুষ জীবন দিল। ৫ হাজার লোক গুলিবিদ্ধ এবং লাখ লাখ লোক জীবন দিতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেন।
আসামি তার ফেসবুকে আরো উল্লেখ করেন, ‘শেখ হাসিনা শুধু নাস্তিক-ই না, শেখ হাসিনা একটা নব্য ফেরাউন মিশরের বাদশা ফেরাউন প্রকাশ্যে নিজেকে খোদা দাবি করতো; আর রাতের অন্ধকারে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতো যেন পৃথিবীতে আল্লাহ তাকে লজ্জা না দেন।’
শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে আল্লাহকে মানে (ভান করে) আর রাতের অন্ধকারে (অ-প্রকাশ্যে) মহান আল্লাহর দ্বীন ‘ইসলাম’কে ধ্বংস করার পায়তারা করে।
পার্থক্যটা শুধু এখানেই, একজন জনসম্মুখে খোদা দাবি করে আর অন্যজন জনতার আড়ালে খোদাই দাবি করে। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, ‘মিসরের ফেরাউনের মতো শেখ হাসিনা নামক নব্য ফেরাউনকে যে ভবিষ্যতের জালিমদের জন্য হুশিয়ারির দৃষ্টান্ত রাখেন।
কেন আসামি এই মন্তব্য করেছে তার সাথে কারা জড়িত, সেজন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.