মিয়ানমার ছেড়ে পালাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ

মিয়ানমারের লক্ষাধিক বাসিন্দা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চীনে পালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধাতঙ্কে মিয়ানমার ছেড়ে চীনে পালিয়ে যাচ্ছে দেশটির লাখ লাখ নাগরিক। বুধবারও প্রায় ৯০ হাজার বাসিন্দা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পালিয়ে গেছে। পলাতকদের প্রকৃত সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সরকারি কর্মকর্তাদের আনুমানিক ধারণা, ‘প্রায় কয়েক লাখ নাগরিক মিয়ানমার থেকে পালিয়ে গেছে।’ সম্প্রতি চীন সীমান্ত সংলগ্ন শান প্রদেশে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির (এমএনডিএএ) লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৯ সালের পর থেকে চীনসমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী এমএনডিএএ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আসছে। পরবর্তী সময়ে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেছিল এমএনডিএএ। তবে ২০০৯ সালে এ শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিল বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। জাতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে নিজেদের সদস্যদের অন্তর্ভুক্তিই তাদের মূল দাবি। এরপর থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছে। গত ৯ ফেব্র“য়ারি শান প্রদেশের কংগিয়ান এলাকায় একটি সামরিক ঘাঁটিতে মর্টার হামলা চালালে ৪৭ সেনাসদস্য নিহত হয়। এরপর থেকেই ওই এলাকার লোকজন সীমান্ত পাড়ি দিতে শুরু করে।
বুধবার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ২ ফেব্র“য়ারি থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারের নাগরিকদের ৩০ হাজার বার সীমান্ত পাড়ির ঘটনা ঘটেছে। চীনা কর্তৃপক্ষ তাদের খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। এই প্রথমবারের মতো শরণার্থীদের সংখ্যা প্রকাশ করল চীন সরকার। লিস সেন নামে এক স্বেচ্ছাসেবক জানান, তার ধারণা গত এক সপ্তাহে সংঘাতকবলিত কোকাং এলাকা থেকে ৩০ থেকে ৫০ হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং মিয়ানমার সরকার ও এমএনডিএএকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। কোকাং প্রদেশে সামরিক আইন জারি : মিয়ানমারের কোকাং প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে তিন মাসের জন্য সামরিক আইন জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইনসেইন। খবর বিবিসি, এএফপি। স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশটির রাজধানী লোকাইয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশটির সেনাবাহিনী ও কোকাং বিদ্রোহীদের মধ্যে সিরিজ সংঘর্ষের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে মঙ্গলবার বলা হয়েছে, ১২ ফেব্র“য়ারি থেকে কারফিউ চলার পরও প্রদেশটিতে বিদ্রোহীদের অব্যাহত সংঘর্ষে সরকার সেখানে সামরিক আইন জারির সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ মিন অং হ্লেইংকে কোকাংয়ের প্রশাসনিক ও বিচারিক ক্ষমতা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। হ্লেইংকে তার ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ বা হস্তান্তরের অধিকারও দেয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.