'টরেটক্কায়' দাঁড়ি টানছে ভারত

মোবাইল ফোন, ই-মেইল, এসএমএস, ইন্টারনেটে চ্যাটিং- এসব এখন হাতের মুঠোয়। বোতাম চাপলে মুহূর্তেই পৃথিবীর এক প্রান্তের খবর পৌঁছে যাচ্ছে আরেক প্রান্তে। টেলিগ্রাম নামে কিছু আছে- এ কথা মানুষ ভুলতে বসেছে।
নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে টেলিগ্রামের অস্তিত্ব সংকট শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। ধুঁকতে থাকা এ সেবা তাই বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। আগামী ১৫ জুলাই থেকে ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হবে টেলিগ্রাম সেবা। ওই দিন ইতি ঘটবে ১৬০ বছরের পুরনো এ সেবার। আর শোনা যাবে না টরেটক্কা।
ভারতের রাষ্ট্রীয় টেলিযোগাযোগ সংস্থা- বিএসএনএল জানিয়েছে, ১৫ জুলাই থেকে কোনো টেলিগ্রাফ অফিস আর টেলিগ্রামের জন্য কোনো বুকিং নেবে না।
২৫-৩০ বছর আগেও ভারতে ব্যাপক হারে টেলিগ্রাম পাঠানোর চল ছিল। দূর-দূরান্তে খবর পাঠাতে এটাই ছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ভরসা। কিন্তু এখন ফেসবুক-টুইটারের যুগে টেলিগ্রামের কার্যকারিতা বহু দিন ধরেই অবলুপ্ত প্রায়। ছেদ-যতি-ফাঁক ব্যবহারের খরচ বাঁচানোর জন্য বানান করে 'স্টপ' লেখার প্রয়োজন শেষ। ডাক বিভাগের সঙ্গে আলোচনার পরই টেলিগ্রাম সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ। উদ্বৃত্ত কর্মীদের অন্য বিভাগে কাজ দেওয়া হবে।
টেলিগ্রামের জন্ম উনিশ শতকের মাঝামাঝি। ১৮৪৪ সালের ২৬ মে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন থেকে বাল্টিমোর পৌঁছেছিল স্যামুয়েল মোর্সের প্রথম টেলিগ্রাম। ১৮৪৫ সালের পর থেকে একে একে গড়ে উঠতে থাকে টেলিগ্রাফ সংস্থা। শুধু ব্যক্তিগত বার্তা আদান-প্রদান নয়, ব্রেকিং নিউজের আগের যুগে সে রকম গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনা ঘটলেও টেলিগ্রাম প্রকাশ করে জানানো হতো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর খবরও প্রথম জানানো হয়ছিল টেলিগ্রামের মাধ্যমেই। সূত্র : আনন্দবাজার।

No comments

Powered by Blogger.