কাবুলে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ১৪ জনের প্রাণহানি

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে তালেবান জঙ্গিদের হামলার ঘটনা গতকাল বুধবার ১৪ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে তালেবান জঙ্গিরা বোমা ও ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাবুলে ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা-সহায়তা বাহিনীর (আইএসএএফ) সদর দপ্তর, মার্কিন দূতাবাস ও আফগান গোয়েন্দা সংস্থায় সমন্বিত হামলা শুরু করে।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিদ্দিক সিদ্দিকি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ১৯ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর শেষ হামলাকারীকে হত্যা করা হয়েছে এবং লড়াইয়ের অবসান হয়েছে। তিনি বলেন, হামলায় ছয় জঙ্গি অংশ নিয়েছিল। তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। সিদ্দিকি বলেন, হামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ২৮ জনের মতো মানুষ আহত হন। তাঁদের অধিকাংশই বেসামরিক লোক।
আইএসএএফের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিমি কামিংস বলেন, হামলায় তিন শিশুসহ ১১ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ছয় বিদেশি সেনা আহত হয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে কাবুলে পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে কয়েকটি হামলার ধারাবাহিকতায় তালেবান জঙ্গিরা মঙ্গলবার থেকে প্রায় দুই দিন শহরটিকে কার্যত জিম্মি করে রাখে। এসব ঘটনায় তালেবান জঙ্গিদের মনোবল আরও চাঙ্গা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন।
গত মাসে কাবুলে যুক্তরাজ্যের একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আত্মঘাতী হামলা হয়। গত জুনে বিলাসবহুল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলেও হামলা চালানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার চালানো হামলায় কাবুলের নিরাপত্তাব্যবস্থা ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছে, বিশ্লেষকেরা এমন আভাসই দিচ্ছেন। তবে কাবুলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রায়ান ক্রোকার বিষয়টি মানতে নারাজ। যদিও ব্রিটিশ দূতাবাসে রকেটচালিত ছয়টি গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে।
গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎ কারে ক্রোকার বলেন, ব্রিটিশ দূতাবাসে হামলা খুব বড় ঘটনা নয়। তবে সেটা দূতাবাস ও আমার কর্মকর্তাদের জন্য একটি কঠিন দিন ছিল। ওই হামলার জন্য ক্রোকার তালেবানের সঙ্গে সম্পৃক্ত গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্ককে দোষারোপ করেছেন।
মঙ্গলবার বেলা দেড়টার পরপরই তালেবান জঙ্গিরা আত্মঘাতী সরঞ্জাম ও রকেটচালিত গ্রেনেড নিয়ে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে এবং গুলি ছোড়ে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এক দোকানি বলেন, ‘আমি তখন দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ পরপর দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনি। এরপরই লোকজন সড়কে ছোটাছুটি শুরু করে।’

No comments

Powered by Blogger.