বার্সা-পরিবারে ফ্যাব্রিগাস

বার্সেলোনার ঘরের ছেলেকে ফিরে পাওয়ার অপেক্ষার অবসান হলো। প্রায় দুই বছরের দেনদরবার শেষে ছেলেবেলার ক্লাব বার্সেলোনায় ফিরেছেন আর্সেনালের সেস ফ্যাব্রিগাস।
পরশু সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বার্সেলোনা যখন রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি, কাতালানদের অপেক্ষার অবসানের খবরটি আসে তখনই। ২৪ বছর বয়সী মিডফিল্ডারকে নিয়ে আর্সেনাল-বার্সেলোনা সমঝোতায় পৌঁছায়। আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার তাঁর ক্লাবের ওয়েবসাইটে ফ্যাব্রিগাসের বার্সায় যাওয়ার ব্যাপারটা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সেসের নিজের শহরের ক্লাব বার্সেলোনায় যাওয়ার আকাঙ্ক্ষাটা আমরা বুঝতে পেরেছি। বার্সেলোনার প্রস্তাবটিও তাই আমরা গ্রহণ করেছি।’
ফ্যাব্রিগাসের বার্সেলোনায় যাওয়া নিয়ে আলোচনার শুরু গত মৌসুমের শুরুর দিকে। স্পেন বিশ্বকাপ জয়ের পর তো তাঁর স্প্যানিশ সতীর্থ পিকে-জাভিরা বিশ্বকাপ-উদ্যাপন মঞ্চে বার্সেলোনার জার্সি পরিয়ে দিয়েছিলেন ফ্যাব্রিগাসকে। তখন মনে হচ্ছিল, ফ্যাব্রিগাসের বার্সায় যাওয়া শুধুই সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু আর্সেনাল তাঁকে বিক্রি করতে চায়নি কিছুতেই। ‘ফ্যাব্রিগাস বিক্রির জন্য নহে’—এই ট্যাগ ঝুলিয়ে দিয়েছিল ‘গানার’রা। গত মৌসুমের অনিষ্পন্ন চুক্তিটি এবার আলোচনায় আসে জোরেশোরে। ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরাতে উঠে-পড়ে লাগে বার্সা। কিন্তু মিলছিল না টাকাপয়সার হিসাব। বার্সেলোনা ফ্যাব্রিগাসের জন্য যা দিতে রাজি হয়েছিল, তা আর্সেনালের চাওয়ার ধারেকাছেও ছিল না। আর্সেনালের চাওয়াই পূরণ করেছে বার্সা। ধারণা করা হচ্ছে, চুক্তিটি ৫৭ মিলিয়ন ডলারের।
কাল ডাক্তারি পরীক্ষাটাও হয়ে গেছে ফ্যাব্রিগাসের। আগামীকাল ন্যু ক্যাম্পে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে সুপার কাপের দ্বিতীয় লেগে বার্সেলোনায় তাঁর অভিষেক হতে পারে। অথচ এটা হতে পারত অনেক আগেই। অন্য সবার সঙ্গে বার্সার খেলোয়াড় তৈরির কারখানা ‘লা মাসিয়া’তেই জন্ম ফুটবলার ফ্যাব্রিগাসের।
বার্সেলোনা জুনিয়র দলে থাকতেই আর্সেনালের স্কাউটদের চোখে পড়েন। ২০০৩ সালে পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। ১৬ বছর বয়সেই আর্সেনাল-অভিষেক হয়, যা সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে আর্সেনালের শুরুর একাদশে জায়গা করে নেওয়ার রেকর্ডও। আর্সেনালের অধিনায়কত্বও করেন ফ্যাব্রিগাস। বলতে পারেন বার্সার সেই ছোট্ট ফ্যাব্রিগাস তাঁর ঘরে ফিরেছেন পরিপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে।
বার্সেলোনা সভাপতি সান্দ্রো রোসেল ও কোচ পেপ গার্দিওলার কণ্ঠেও ঘরের ছেলেকে ফিরে পাওয়ার উচ্ছ্বাস। ‘প্রায় দুই বছরের ব্যাপার এটি। অনুভূতিটা এ রকম যেন ছেলে অনেক দিন পর বাড়ি ফিরে আসছে। আমরা তো তাকে আমাদেরই একজন মনে করি’—বলেছেন রোসেল। গার্দিওলার কথা, ‘সবকিছুর সমাধান হয়েছে এবং তাকে এখানে স্বাগত।’

No comments

Powered by Blogger.