সাঙ্গাকারার পর মঞ্চে মুরালি

তাঁর শেষ বিশ্বকাপই শুধু নয়, শেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টও। এর পরই অবসর। শেষটা কোথায় রাঙিয়ে দেবেন তা না, মুত্তিয়া মুরালিধরনকে যেন চেনাই যাচ্ছিল না। প্রথম চার ম্যাচে ৪ উইকেট। এর মধ্যে একটিতে বৃষ্টি বল হাতেই নিতে দেয়নি। আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়েও আড়ালে।
মুরালি ছায়া হয়ে থাকতে ভালোবাসেন না। কাল মুম্বাইয়ে তাই মঞ্চের আলোটা কেড়ে নিলেন নিজের ওপর। সেই ঘূর্ণিজাদু। ব্যাটসম্যানদের জন্য দুর্বোধ্য একেকটি ডেলিভারি। ফাঁদে ফেলে স্টাম্পিং। টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফিরতি ক্যাচ দিতে বাধ্য করা। মুরালি যেন ফিরে গিয়েছিলেন টগবগে তারুণ্যে। নিজের শেষ দুটো ওভার করার সুযোগই পেলেন না। পারলেন না বিশ্বকাপে ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার শূন্যতা মুছে ফেলতে। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ১১২ রানের বিশাল জয়ে অবদান রাখলেন ২৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে।
ম্যাচের নায়ক অবশ্য আছেন আরেকজন। ম্যান অব দ্য ম্যাচও হয়েছেন তিনি—কুমার সাঙ্গাকারা। লঙ্কান অধিনায়কের ১১১ রানের ইনিংসটিই যে শ্রীলঙ্কাকে এনে দিয়েছিল ২৬৫ রানের পুঁজি। সেই ইনিংসটিও খেলেছেন দলের ভীষণ প্রয়োজনের মুহূর্তে। আগের ম্যাচে ওপেনিং জুটির নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়া থারাঙ্গা-দিলশান দুজনই ৩ রান করে ফিরে এলে জয়াবর্ধনেকে নিয়ে ১৪৫ রানের জুটি গড়েন সাঙ্গাকারা।
শেষ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত কিউই অধিনায়ক রস টেলর ‘অগুরুত্বপূর্ণ’ ম্যাচটিকে বোলারদের অনুশীলনের জন্যই ব্যবহার করলেন। হাত ঘোরালেন আটজন বোলার! সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনেও হয়তো ভেবেছিলেন, তাঁদের কারণে বাকিদের ব্যাটিং অনুশীলন বাদ যাবে কেন? ৩১.৪ ওভার ধরে চলা জুটিটা ভাঙল। ৬৬ রান করে ফিরলেন জয়াবর্ধনে, চার ওভার পর সাঙ্গাকারাও। তবে বাকিরা আর ব্যাটিং অনুশীলনের সুযোগ নিতে পারেননি। শেষ ১০ ওভারে ৬৩ রান তুলতে শ্রীলঙ্কা হারাল আরও ৬ উইকেট।
শেষদিকে বোলারদের এই উজ্জীবিত লড়াইয়েও নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা প্রেরণা খুঁজে নিতে পারেননি। কুলাসেকারা-ম্যাথুস-মেন্ডিসের ত্রিমুখী আঘাতে ৮২ রানেই ৩ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এর পরই মুরালি টানা তিন ওভারে তুলে নেন উইলিয়ামসন, টেলর ও স্কট স্টাইরিসকে। পরে ফেরান ফ্রাঙ্কলিনকেও। বিশ্বকাপে নিজের উইকেটসংখ্যা ৬৪-তে নিয়ে গেলেও ইনিংসে ৫ উইকেট পাওয়া হলো না। হলো না সাঙ্গাকারা মেন্ডিস আর মালিঙ্গাকে আরেকটু বোলিংয়ের সুযোগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়।

No comments

Powered by Blogger.