যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও লিবিয়ায় যুদ্ধ চলছে

লিবীয় নেতা কর্নেল গাদ্দাফি একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, সেখানে এখনো যুদ্ধ চলছে। গতকাল শনিবারও বিভিন্ন শহরে সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখে। এদিকে লিবিয়া সরকার জানিয়েছে, দেশটির সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি বেনগাজির পশ্চিমে প্রবল হামলার মুখে পড়েছে। সরকারি বার্তা সংস্থা জানার এ কথা জানায়।
বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমাঞ্চলীয় মিসরাতা শহরের বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সেখানে যুদ্ধবিরতির কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। শহরে গাদ্দাফি বাহিনী অব্যাহত বোমা ও কামানের গোলা নিক্ষেপ করছে। শহরটির চারপাশ ঘিরে রেখেছে গাদ্দাফি বাহিনী।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, আল-মাগরুন ও স্লুুক শহরে গাদ্দাফি বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে লিবিয়ার কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। তাঁরা পরিস্থিতি মূল্যায়নে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের লিবিয়া আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি বলেছেন, লিবিয়ায় নো ফ্লাই জোন ঘোষণা ও সামরিক অভিযান চালাতে জাতিসংঘ যে অনুমোদন দিয়েছে, সেটা নির্লজ্জ উপনিবেশবাদের বহিঃপ্রকাশ।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর বেনগাজির আশপাশের ৪০০ কিলোমিটার আকাশপথকে নো ফ্লাই জোন বা বিমান উড্ডয়নমুক্ত এলাকা ঘোষণা ও সেখানকার বেসামরিক লোকজনকে রক্ষায় সামরিক হামলা চালানোসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব করে।
গাদ্দাফি বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ লিবিয়ায় নো ফ্লাই জোন আরোপ ও সেনা অভিযানের অনুমোদন দিয়ে যে প্রস্তাব পাস করেছে, তার কোনো ন্যায্যতা নেই। এটা উপনিবেশবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তিনি বলেন, জাতিসংঘের ওই সিদ্ধান্তের কারণে ভূ-মধ্যসাগরীয় ও ইউরোপের দেশগুলোকে কঠিন পরিণতি বরণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পশ্চিমারা যা-ই করুক না কেন, লিবিয়ার আকাশ ও নৌপথ নিরাপদ থাকবে। তার দেশের ওপর হামলার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে পস্তাতে হবে।
এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক মুখপাত্র মিলিসা ফ্লেমিং গত শুক্রবার জানান, গাদ্দাফি বাহিনীকে রুখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিলম্ব করায় এ পর্যন্ত তিন লাখ ৩০৭ জন লোক প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে। এর মধ্যে এক লাখ ৫৮ হাজার ৭২১ জন তিউনিসিয়ায় এবং এক লাখ ২৮ হাজার ৮১৪ জন মিসরে আশ্রয় নিয়েছে। আরও অনেকে নাইজেরিয়া ও আলজেরিয়ায় চলে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.