শেয়ারের জোগান বৃদ্ধির সরকারি চেষ্টা গতিহীন

শেয়ারবাজারে সরবরাহ সংকটের বিষয়টি আবারও এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিনিয়োগকারীসহ সবার মাথাব্যথা একটাই, আর তাহলো— মূল্য। অর্থাৎ শেয়ারের দর বাড়ল কিংবা কমল কি না। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সব সময়ই একটি কথা বলে থাকেন, ‘বাজার এক জায়গায় থেমে থাকবে না। বাড়া-কমাই হলো শেয়ারবাজারের ধর্ম ও সৌন্দর্য।’
একটি পরিপক্ব আর্থিক বাজারে শেয়ার, ঋণপত্র (ডিবেঞ্চার ও বন্ড), মিউচুয়াল ফান্ড ইত্যাদি সিকিউরিটিজের দৈনন্দিন লেনদেন হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) শেয়ারের পাশাপাশি কিছু মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়। আর বন্ড আছে নামেমাত্র—কয়েকটি ট্রেজারি বন্ড। সিকিউরিটিজ হিসেবে ডিবেঞ্চার ‘নেই’ হয়ে যাওয়ার দশা হয়েছে। এভাবে দেশীয় বাজারে সিকিউরিটিজে বৈচিত্র্য নেই বললেই চলে।
মোদ্দা কথা হলো, সিকিউরিটিজের সরবরাহ। সন্দেহ নেই, গত কয়েক বছরে বাজারে বিনিয়োগকারী বেড়েছে অনেক গুণ। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজেই বলে থাকেন বাজারে এখন ৩৩ লাখ বেনিফিশিয়ারি ওনার (বিও) হিসাবধারী এবং তাঁদের স্বার্থের দিক দেখতে হবে। অবশ্য এই সংখ্যার ন্যূনতম অংশ প্রকৃত বিনিয়োগকারী। বাকিরা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদন করার জন্য বিও হিসাব পরিচালনা করেন। দৈনন্দিন লেনদেন কার্যক্রমে তাঁরা থাকেন না।
এবার সরবরাহ প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক। বিনিয়োগকারী বাড়ার পাশাপাশি সিকিউরিটিজের সরবরাহও বাড়ছে বৈ কমছে না। প্রশ্ন হলো, বাড়ার তালটা ঠিক আছে কি না। অর্থাৎ বিনিয়োগকারী বা শেয়ারের চাহিদা যে হারে বাড়ছে, সিকিউরিটিজ বা শেয়ারের সরবরাহ সে হারে বাড়ছে কি না। চাহিদা যদি বেশি বাড়ে, বুঝতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ারের পেছনে অধিক পরিমাণ বিনিয়োগকারী ছুটছেন। আর এতে স্বাভাবিক কারণেই শেয়ারের মূল্য বাড়বে। এই সহজ বিষয়টি বুঝতে অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ হতে হয় না।
শেয়ারের অতিমূল্য, বাজারের সার্বিক সূচক, বাজার মূলধন, সার্কিট ব্রেকার, আস্থা সংকট, দরপতন, পতন রোধে পদক্ষেপ ইত্যাদি নিয়ে দিনভর বৈঠক হয়েছে কয়েক দিন। কিন্তু আলোচনায় কার্যত স্থান পায়নি সরবরাহ বৃদ্ধির বিষয়টি।
শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক পতনোন্মুখ পরিস্থিতি মোকাবিলায় গ্রহণ করা পদক্ষেপের মধ্যে একটি হলো, শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত করে দেওয়া। সঙ্গে সঙ্গেই স্থগিত হয়ে গেল বেসরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির বাজারে আসা। আর সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো তো বাজারে আসি আসি করছে কয়েক বছর ধরেই।
যোগাযোগ করা হলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বৃহস্পতিবার টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেয়ারবাজারে সরবরাহ বাড়ানোর অংশ হিসেবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনবরত চাপ দেওয়া হচ্ছে।’
সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ছাড়া নিয়ে প্রথম উদ্যোগ শুরু হয় ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে। সরবরাহ বাড়ানোর গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান তখন সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সরবরাহ বাড়াতে হবে—এই যুক্তিতে সবাই একমত। সবারই একই ভাষ্য—নতুন নতুন বিনিয়োগকারী ঢুকছেন বাজারে, সে তুলনায় শেয়ারের সরবরাহ কম। তাই সরবরাহ বাড়ানোটা একেবারে জরুরি। মন্ত্রণালয়গুলোর সচিবেরাও সায় দিলেন এতে।
এর পরই তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এক মহাপরিকল্পনা (অ্যাকশন প্ল্যান) হাতে নেন। যার অংশ হিসেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ছেড়ে দেওয়া হবে। উদ্দেশ্য—পুঁজিবাজারে ভালো সিকিউরিটিজের সরবরাহ বাড়ানো। এ জন্য ৬২টি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা করা হয় তখন।
এর মধ্যে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকার আমলে ২০০৬ সালে তালিকাভুক্ত হয় ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডেসকো) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবিএল) নামের দুটি কোম্পানি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালে যমুনা অয়েল ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং ২০০৮ সালে তিতাস গ্যাস তালিকাভুক্ত হয়। অর্থাৎ পাঁচ বছরে মাত্র পাঁচটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ শেয়ার অবশ্য এখনো সরকারের হাতেই।
কেবলই সময়সীমা বাড়ানো: শেয়ার ছাড়তে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ২০০৫ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত চার বছরে আট দফা সময়সীমা বাড়িয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বর্তমান সরকারও চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কয়েক দফা। ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, শেয়ার ছাড়তে হবে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩২টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে ছয়টিতে কিছু আইনি ঝামেলা থাকায় শেষ পর্যন্ত শেয়ার ছাড়তে হবে ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে এবং ছাড়ার সময়সীমা পরবর্তী ছয় মাস।
পূর্বশর্ত হিসেবে এই সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে করপোরেট করা বা কোম্পানিতে রূপান্তরিত হওয়ার কথাও বলা হয়। এ জন্য কাউকে চার মাস আবার কাউকে সর্বোচ্চ ছয় মাস সময় দেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু কাজ হয়নি। জুনের মধ্যে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বা তালিকাবহির্ভূত প্রতিষ্ঠান—কেউই শেয়ার ছাড়তে পারেনি। বরং অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবারও ছয় মাস সময় বাড়ানোর আবেদন জানায় প্রায় সব মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া ১৫ দিনের সময় দিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যমুনা অয়েলের ১৭ শতাংশ, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ১৭ শতাংশ, তিতাস গ্যাসের ১৫ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবসের ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং রূপালী ব্যাংকের ২৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ, পাওয়ার গ্রিডের ১৬ দশমিক ২৫ এবং ডেসকোর ১৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত বছরের ২ নভেম্বর এদের চিঠি পাঠিয়েছিল। এর মধ্যে রূপালী ব্যাংক ছাড়া কেউই শেয়ার ছাড়তে পারেনি। অর্থমন্ত্রী এর আগে জানিয়েছিলেন, চাইলে এক দিনের মধ্যেই এদের শেয়ার ছেড়ে দেওয়া সম্ভব।
বেশি প্রতিষ্ঠান জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের: ২৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নয়টিই হলো জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের। বিদ্যুৎ বিভাগের দুটি। বাকি ১৫টি ছয় মন্ত্রণালয়ের। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, শেয়ার ছাড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টালবাহানা করছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এ বিভাগের আওতায় পদ্মা অয়েল একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি। এর রাইট শেয়ার ছাড়ার জন্য গত বছরের ১১ মে অর্থ মন্ত্রণালয় ১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু জ্বালানি বিভাগ ২১ জুন এক পত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানায়, এ অর্থ নিতে তারা রাজি নয়।
বাখরাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্টিবিউশনের শেয়ার ছাড়তে হলে ‘কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোং’ নামের একটি কোম্পানি গঠন করতে হবে। আর এ জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন জ্বালানিসচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন।
জানা গেছে, কোম্পানির জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হওয়ার কথা বলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিক্যুইটিফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস লিমিটেডের (এলপি গ্যাস) শেয়ার ছাড়তে পারছে না বলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। আর আন্তমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত থাকা সত্ত্বেও গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির পর্ষদ সভায় শেয়ার ছাড়ার কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।
জালালাবাদ গ্যাস টিঅ্যান্ডডি সিস্টেম, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি, রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস এবং রুরাল পাওয়ার কোম্পানি ৪৯ শতাংশ করে এবং ডেসকো আরও ১৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নিয়েছিল।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অজুহাত: শেয়ার না ছাড়ার যুক্তি হিসেবে নতুন এক তত্ত্ব দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। সেটি হলো, শেয়ার ছাড়লে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন গত জোট সরকার আমলেও শেয়ার ছাড়া নিয়ে নেতিবাচক অবস্থান ছিল শিল্প মন্ত্রণালয়ের। তখন অবশ্য শিল্পমন্ত্রী ছিলেন বর্তমানে কারাবন্দী জামায়াতে ইসলামীর নেতা মতিউর রহমান নিজামী। কিন্তু বর্তমান শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার সময়েও অবস্থার উন্নতি হয়নি।
সূত্রে জানা গেছে, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পর্কে শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, ২০১২ সালের মধ্যে সিডান গাড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। আর চিটাগাং ড্রাইডককে লাভজনক করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় শেয়ার ছাড়লে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া জিইএম কোম্পানি এবং বাংলাদেশ ব্লেড কারখানাকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) মাধ্যমে পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
তবে পুঞ্জীভূত লোকসানের কারণে কর্ণফুলী পেপার মিলস, বাংলাদেশ ইন্স্যুলেটর ও স্যানিটারি ওয়্যার এবং ছাতক সিমেন্ট কারখানার শেয়ার ছাড়ার বিপক্ষে মত দিয়েছে খোদ এসইসি। শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, এগুলো লাভজনক করার একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
আর উসমানিয়া গ্লাস, এটলাস বাংলাদেশ, ন্যাশনাল টিউবস ও ইস্টার্ন কেব্লসের বিষয়ে মামলা থাকায় এগুলোর শেয়ার ছাড়ার বিষয় আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
ক্রমাগত লোকসান দেওয়ায় ১৩টি চিনিকলকে পর্যায়ক্রমে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা-ও পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানায় শিল্প মন্ত্রণালয়।
বঙ্গবন্ধু সেতুর বন্ড ছাড়া স্থগিত: যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের অন্তর্গত বঙ্গবন্ধু সেতুর ভবিষ্যৎ টোল আয়ের বিপরীতে বন্ড ছাড়ার কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৮ সালে। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক, এসইসি, আইসিবি ও বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হয়। সেই কমিটি একটি প্রতিবেদন তৈরি করে সেতু বিভাগে পাঠালেও তা পড়ে রয়েছে।
বরং গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সেতু বিভাগ এক চিঠিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানায়, বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আয়ের বিপরীতে বন্ড ছাড়ার কার্যক্রম পর্ষদ সভায় স্থগিত হয়ে গেছে। তার চেয়ে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে অর্থের ঘাটতি হলে বন্ড ছাড়ার বিষয়ে ভাবা যাবে।
আটকে আছে সোনারগাঁও-শেরাটন: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে এ দুটি হোটেল—হোটেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (সোনারগাঁও হোটেল) এবং বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (শেরাটন হোটেল)।
পর্যটনসচিব শফিক আলম মেহেদী আন্তমন্ত্রণালয় সভায় জানিয়েছিলেন, মূলধন পুনর্মূল্যায়ন করে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেরাটনের শেয়ার ছাড়া হবে বাজারে। এ জন্য চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সোনারগাঁওয়ের ক্ষেত্রেও তাই। তবে সোনারগাঁওয়ের ভূমি নিয়ে কিছুটা সমস্যা রয়েছে বলে শেয়ার ছাড়তে সমস্যা হচ্ছে। গত বছরের মাঝামাঝি উভয় হোটেলের শেয়ার ছাড়ার জন্যই ২০১১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে।
আরও যেগুলো: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কোম্পানিগুলো হচ্ছে—টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এবং বাংলাদেশ কেব্ল শিল্প সংস্থা এবং বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন কোম্পানি হচ্ছে এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু এর শেয়ার ছাড়ার কার্যক্রমে কোনো অগ্রগতি নেই। আন্তমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত থাকলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, ‘এ কোম্পানিটির শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সমীচীন হবে।’
ডিএসইর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক সালাহউদ্দিন আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, শেয়ারবাজার হলো অর্থায়নের উৎস। সে হিসেবে অর্থনীতির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। অথচ বড় বড় বিশেষজ্ঞরা একে অনুৎপাদনশীল খাত বলে আখ্যা দিচ্ছেন। এই প্রচারণা উদ্যোক্তা তথা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজারবিমুখতা বাড়াবে, যা চূড়ান্ত অর্থে ক্ষতি বয়ে আনবে।
শেয়ারবাজারে সরবরাহের বিষয়টি সরকারের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘গাড়ি যেমন তেল বা গ্যাস ছাড়া চলে না, তেমনি তারল্য ছাড়া শেয়ারবাজার চলবে না। আর শেয়ারবাজার যদি তারল্য-সংকটে ভোগে, অর্থনীতিরও তাহলে সংকটে পড়া স্বাভাবিক।’

No comments

Powered by Blogger.