আগ্রাসনের ভয়াবহতা বুঝতে নথির প্রয়োজন হয় না তাঁর

ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের ভয়াবহতা বুঝতে উইকিলিকসের গোপন নথি প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না বাগদাদের স্কুলশিক্ষিকা ফাতিমা রাজাকের। প্রতিদিন সকালে আয়নায় মুখ রাখলেই তাঁর মনে ভেসে ওঠে এক দুঃসহ স্মৃতি।
২০০৭ সালের ঘটনা। একটি কাজে বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বের হন ফাতিমা। পথে মার্কিন বাহিনীর এক চেকপয়েন্টে অনেক গাড়ি থেমে থাকতে দেখে নিজের গাড়িও থামান তিনি। জানতে পারেন, এই গাড়িগুলোর মধ্যে কোনো একটিতে আত্মঘাতী হামলাকারী ওত পেতে আছে। তাই প্রতিটি গাড়িতে কঠোরভাবে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। উদ্বিগ্ন হয়ে গাড়ির ভেতরে বসেই অপেক্ষা করতে লাগলেন তিনি।
ফাতিমা জানান, অপেক্ষার একপর্যায়ে হঠাৎ করে একজন মার্কিন সেনা তাঁর বন্দুক গাড়িগুলোর দিকে তাক করলেন। যুক্তিযুক্ত কোনো কারণ ছাড়াই ওই সেনা গুলি ছোড়া শুরু করলেন। ফাতিমা তাঁর মুখ থেকে কান পর্যন্ত লম্বা ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে বলেন, ‘ওই বন্দুকের একটি বুলেট আমার মুখের পাশে লেগে কানের পাশ দিয়ে চলে যায়।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে গেলেই আমি শিউরে ওঠি। আমি একজন মা, একজন স্ত্রী।’
৪২ বছর বয়সী ফাতিমা জানান, এ পর্যন্ত তাঁকে ছয়বার প্লাস্টিক সার্জারি করতে হয়েছে। সপ্তমবারের মতো সার্জারি করতে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি।
গত শুক্রবার উইকিলিকসে প্রকাশিত মার্কিন বাহিনীর ইরাক যুদ্ধের গোপন নথিতে দেখা যায়, ইরাকে বিভিন্ন চেকপয়েন্টে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে বেসামরিক জনগণকে হত্যা করা হয়। এই সংখ্যা ৬৬ হাজার ৮১ জন।

No comments

Powered by Blogger.