‘ইউসুফ একা পারবেন না’

ইংল্যান্ডের কাছে ৩৫৪ রানে বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই যেভাবে তড়িঘড়ি মোহাম্মদ ইউসুফকে দলে ফেরানো হলো, মনে হচ্ছে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান এসেই ভোজভাজির মতো সব পাল্টে দেবেন। পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে অভিজ্ঞ নামের অবশ্যই প্রয়োজন। সন্দেহ নেই ইউসুফের সামর্থ্য নিয়েও। তবে সাবেক অধিনায়ক একাই দলের চেহারা পাল্টে দেবেন, এটা ভাবা অবান্তর। সবার প্রতি তাই সালমান বাটের সতর্কবার্তা, ইউসুফ একা পাকিস্তানকে বাঁচাতে পারবেন না, প্রয়োজন দলীয় প্রচেষ্টা।
অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার পর গত ২৯ মার্চ ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন ইউসুফ। কিন্তু তাঁর ফেরার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল অবসরের পর থেকেই। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই টেস্টে দলের ব্যাটিং-দুর্দশা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই ইউসুফ ও ইউনুসের ফেরার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল। সেটা না হলেও ট্রেন্টব্রিজে ব্যাটিং-ব্যর্থতার পর আর দেরি করেনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউসুফকে ইংল্যান্ড পাঠানোর। ট্রেন্টব্রিজে ৩৩ ওভারে ১৭১ রান খরচায় ১ উইকেট পাওয়া দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার দানিশ কানেরিয়াকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এসেক্সের হয়ে কাউন্টি খেলার জন্য। বদলে ইংল্যান্ড যাচ্ছেন মাত্র দুটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা ১৮ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার রাজা হাসান। সারের হয়ে কাউন্টি খেলতে ইংল্যান্ডেই থাকা ইউনুসের ব্যাপারে অবশ্য কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
শুধু ইউসুফকে নিয়ে সতর্কবার্তাই নয়, ট্রেন্টব্রিজের হারের পর যারা তরুণ দলটির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তাদেরও একহাত নিয়েছেন সালমান বাট, ‘পাকিস্তান দলে যারা খেলছে, সামর্থ্য আছে বলেই খেলছে। সামর্থ্যের পুরোটা দেখানোর জন্য তাঁদের সময় দেওয়া উচিত। অধিনায়ক হিসেবে আমার বয়স মাত্র দুই টেস্ট, একটিতে জিতেছি, একটিতে হেরেছি। সবাই কী চায় আমরা প্রতি ম্যাচই জিতব? এটা তো হতে পারে না। এই ছেলেরাই ১৫ বছর পর দলকে একটা জয় এনে দিয়েছে। এখন সময় তাদের পুরো সমর্থন দেওয়া। আমার বিশ্বাস, দল ঘুরে দাঁড়াবে।’
হারের জন্য দায় দেওয়া হচ্ছে তারুণ্যকে। কিন্তু যখন অভিজ্ঞরা ছিলেন, তাঁরা কতটুকু করতে পেরেছেন, প্রশ্ন বাটের, ‘আগে যাঁরা খেলতেন তাঁরা পাকিস্তানকে কয়টা জয় এনে দিয়েছেন? এমন যদি হতো গত দুই বছরে তাঁরা দলকে অনেক জয় এনে দিয়েছেন, তাহলে না হয় একটা কথা ছিল। কিন্তু সত্যিটা হলো, অবস্থা ওই একই ছিল।’ সর্বশেষ ২১ টেস্টের মাত্র তিনটিতে জিতেছে পাকিস্তান, বাটের ইঙ্গিত সেদিকেই।
হুট করে ইউসুফকে ফেরানোর সিদ্ধান্তে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট মহলে। বরাবরই এসব ক্ষেত্রে অগ্রণী আমির সোহেল দায় চাপিয়েছেন বোর্ডের ওপর, ‘বোর্ড কর্তারা নিজেরাও জানে না, তারা কী চায়। প্রথমে তারা ইউসুফ-ইউনুসের বদলে তরুণদের ইংল্যান্ড নিয়ে গেল, এখন আবার সেখান থেকে পিছু হটছে।’ সাবেক লেগ স্পিনার ও নির্বাচক আবদুল কাদিরের কথা, ‘ইউসুফ ও রাজাকে ইংল্যান্ড পাঠানোর সিদ্ধান্ত অনাবশ্যক এবং জাতীয় দলের পুনর্গঠন-প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। একটা পরাজয়ের পর এতটা অস্থির হওয়ার দরকার ছিল না।’ আর সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজা তুলেছেন একটি সম্পূরক প্রশ্ন, ‘ইউসুফকে ফেরানো হলে ইউনুস কী দোষ করল? ও দলের সেরা ব্যাটসম্যান, ওকে অবশ্যই ফেরানো উচিত।

No comments

Powered by Blogger.