ভিয়েতনামে হিলারি ক্লিনটন -মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর আহ্বান

ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে গতকাল
এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর মার্কিন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে ফুলের তোড়া
উপহার দেন একজন ভিয়েতনামি
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ভিয়েতনামে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় ছিটানো বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান ‘এজেন্ট অরেঞ্জ’-এর দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে আরও বেশি সহযোগিতা দেওয়ার ব্যাপারে তিনি অঙ্গীকার করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান ও অঙ্গীকার করেন।
ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ১৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে হিলারি ভিয়েতনাম সফর করছেন। সংবাদ সম্মেলনে হিলারি বলেন, অসাধারণ কর্মশক্তিসম্পন্ন জনগোষ্ঠী নিয়ে ভিয়েতনাম এখন অপার সম্ভাবনার দারুণ এক দেশ হওয়ার পথে অগ্রসরমাণ। এর পরও কিছু বিষয় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা হচ্ছে শান্তিকামী ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা ও তাদের গ্রেপ্তার, ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা ও ইন্টারনেট স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। সংবাদ সম্মেলনে হিলারির বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ভিয়েতনামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফাম জিয়া খিয়েম বলেন, ‘ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তার মধ্যে ফারাক আছে বলে আমি মনে করি।’ তিনি বলেন, মানবাধিকারের ব্যাপারে মূল্যবোধ অভিন্ন হলেও সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক পটভূমির ওপর তা ব্যাপকভাবে নির্ভর করে। এ প্রসঙ্গে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, মানবাধিকার মূল্যায়ন বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।সম্মেলনে এজেন্ট অরেঞ্জের বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেন ক্লিনটন। ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলাকালে ১৯৬২ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে ওই দেশের দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামীণ এলাকায় মার্কিন সেনারা প্রায় এক কোটি ১০ লাখ গ্যালন এজেন্ট অরেঞ্জ নামে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ছিটায়। বনের গাছপালার পাতা আড়াল ঝরিয়ে সরিয়ে দিয়ে ভিয়েতনামি গেরিলাদের খাদ্য ও আশ্রয় ধ্বংস করতে এই রাসায়নিক উপাদান ছিটানো হয়। পরবর্তী সময়ে বিষাক্ত এই রাসায়নিকের প্রভাবে ওই অঞ্চলের মানুষের ক্যানসার, জন্মগত ত্রুটিসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।

No comments

Powered by Blogger.