স্ট্যানচার্ট তিন বছরের মধ্যে এ দেশে ব্যবসা দ্বিগুণ করবে

সম্প্রতি ঢাকা সফরকালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের গ্রুপ নির্বাহী পরিচালক ও গ্লোবাল কনজ্যুমার ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভ বের্টামিনি প্রথম আলোর সঙ্গে বাংলাদেশে ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আসজাদুল কিবরিয়া।

বাংলাদেশের আর্থিক বাজারকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কীভাবে দেখছে?
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের কাছে বাংলাদেশের বাজার গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ব্যাংকের কিছু সেবা ও পণ্য পরীক্ষামূলকভাবে এখানে প্রথম চালু করা হয়। তারপর সেই অভিজ্ঞতার আলোকে অন্য দেশে তার বিস্তার ঘটানো হয়। হংকং ও সিঙ্গাপুরের মতো বাংলাদেশের বাজারও এখন স্ট্যানচার্টের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিকভাবে ঋণমান (ক্রেডিট রেটিং) প্রকাশ করাও বাংলাদেশের জন্য এখন সহায়ক হবে।
তাহলে আগামী দিনগুলোয় এই দেশে কীভাবে বাজার সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছেন?
আগামী তিন বছরের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বর্তমানের দ্বিগুণ করতে চায়। এ জন্য একদিকে যেমন উন্নততর প্রযুক্তিতে ব্যাংকে বিনিয়োগ করা হবে, অন্যদিকে গড়ে তুলবে দক্ষ মানবসম্পদ। আর এই মানবসম্পদ গড়ার পদক্ষেপ হিসেবে আগামী ছয় মাসে প্রায় ৪০০ নতুন লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ও কার্যক্রমে। মানবসম্পদকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিই। সে কারণেই একটি প্রশিক্ষণ একাডেমি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর কর্মীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণকে জোরদার করতে একটি শাখাও করা হচ্ছে। মূলত ছয় মাসে আগে স্ট্যানচার্ট কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তা নেওয়া হয়েছে ভবিষ্যৎ বাজার সম্ভাবনা যাচাই করে।
কী কী ধরনের পণ্য-সেবা নিয়ে আপনারা অগ্রসর হচ্ছেন?
বর্তমানে আমরা ফিন্যান্সিয়াল কিয়স্ক চালু করেছি। এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ঢাকাসহ সারা দেশে ৩০টি কিয়স্ক খোলা হবে। কিয়স্ক হলো একধরনের সীমিত সেবাকেন্দ্র, যেখানে এটিএমের পাশাপাশি বিল পরিশোধ, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ইত্যাদি সুবিধা থাকছে। এখানে নিযুক্ত কর্মীরা গ্রাহকদের বিভিন্ন প্রয়োজন মেটানোর জন্য সব ধরনের সহযোগিতাও দিচ্ছেন। সার্বিকভাবে আমরা এখন আরও গ্রাহকমুখী হচ্ছি। অর্থাৎ গ্রাহকের প্রয়োজন মেটানোর দিকে আগের তুলনায় অনেক বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। এ জন্যই আমরা কনজ্যুমার ব্যাংকিং কার্যক্রম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও দেশে এখন ভালো করছে। তাহলে কী প্রতিযোগিতা বাড়ছে?
প্রতিযোগিতা আছে। তবে স্ট্যানচার্ট প্রতিযোগিতা নিয়ে চিন্তিত নয়। যদি গ্রাহকের প্রয়োজনমতো সেবা দেওয়া যায়, গ্রাহকের চাহিদা সময়মতো মেটানো যায়, তাহলে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে।
কিন্তু আপনারা তো চড়া সুদ আরোপ করে, উচ্চ হারে বিভিন্ন সেবা মাশুল নেন।
আমরা যদি বাজারের প্রচলিত সুদ বা মাশুলের চেয়ে বেশি হারে মাশুল নিই, তাহলে তো গ্রাহক আমাদের কাছে আসবে না। তাদের যাচাই-বাছাই করার সুযোগ আছে। তবে শুধু ক্রেডিট কার্ডেই আমাদের গ্রাহকসংখ্যা প্রায় চার লাখ, যা এ দেশে ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রতিবছর গড়ে আমাদের ব্যবসা ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ হারে বাড়ছে।

No comments

Powered by Blogger.