মিয়ানমার পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে

মিয়ানমার তার অস্ত্রভান্ডার সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে পরমাণু অস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছে উত্তর কোরিয়া। মিয়ানমার থেকে গোপনে নিয়ে আসা কিছু নথিপত্র ও ছবিতে এমন আভাস পাওয়া গেছে। সে দেশের একজন দলত্যাগী সেনা কর্মকর্তা এসব নথি ও ছবি গোপনে সরিয়ে নিয়ে আসেন। গতকাল শুক্রবার নরওয়ে ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডেমোক্রেটিক ভয়েস অব বার্মা থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা জানা যায়। পাঁচ বছর ধরে সমীক্ষা চালানোর পর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় বলে সংস্থাটির দাবি।
মিয়ানমার তার পরমাণু কর্মসূচি এগিয়ে নিতে উত্তর কোরিয়ার সহায়তা নিচ্ছে—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটর জিম ওয়েব তাঁর মিয়ানমার সফর স্থগিত করেন। সিনেটে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাসংক্রান্ত বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান ওয়েব। মিয়ানমারের পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক তথ্যের ব্যাপারে তিনি ওই দেশের স্বপক্ষত্যাগী সেনা কর্মকর্তার কথা উল্লেখ করেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দলত্যাগী ওই সেনা কর্মকর্তার নাম সেই থিন উইন। প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রকৌশল হিসেবে তিনি মিয়ানমারে প্রশিক্ষণ নেন। পরে রাশিয়া গিয়ে একজন ক্ষেপণাস্ত্রবিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। মিয়ানমারের গোপন পরমাণু স্থাপনায় যাতায়াতের সুযোগ হয় তাঁর। থিন উইন মিয়ানমারের পরমাণু কর্মসূচিকে এগিয়ে নেওয়ার কাজে নিয়োজিত একটি সামরিক কারাখানার উপ-অধিনায়ক ছিলেন। তাঁর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘তারা সত্যিই পরমাণু বোমা তৈরি করতে চায়। এটাই তাদের মূল লক্ষ্য।’
থিন উইন গোপনে এমন কিছু নথিপত্র সরিয়ে আনেন, যার মধ্যে পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। রয়েছে এ সংক্রান্ত বেশ কিছু ছবিও। এ ছাড়া পরমাণু চুল্লি তৈরিতে যেসব সরঞ্জাম লাগে, সেসবের ছবিও রয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পরমাণু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গেলেও পরমাণু অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা অর্জনের ক্ষেত্রে মিয়ানমার এখনো অনেক দূরে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু বিজ্ঞানী ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সাবেক পরিচালক রবার্ট কেলি এসব নথিপত্র পর্যবেক্ষণ করে বলেন, মিয়ানমার সম্ভবত ইউরেনিয়াম আহরণ করছে এবং এমন পরমাণু প্রযুক্তি খুঁজছে, যার মাধ্যমে অস্ত্র তৈরি করা যায়।

No comments

Powered by Blogger.