অপরাজেয় নিউজিল্যান্ড

গ্রুপ পর্বের বেড়া ডিঙোতে না পারাটা কি সব সময়ই বিষাদের? কখনোই না! বিশেষত বিশ্বকাপ-মঞ্চে নিউজিল্যান্ডের মতো ‘পুঁচকে’ দলের কাছে সেটাও হতে পারে গর্বের! হ্যাঁ, গর্বেরই। বিশ্বকাপ খেলতে আসাটাই যাদের কাছে স্বপ্নের মতো, রাগবির দেশ সেই নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের মঞ্চে এসে হারেনি এক ম্যাচেও। তিন ম্যাচের তিনটিতেই ড্র। প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায়ের পরও তাই গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে কিউইদের।
শেষ ষোলোতে উঠতে না পারার বেদনা যে একেবারেই নেই তা নয়। কিন্তু সেই দুঃখবোধটা হালকা হয়ে গেছে দলের বীরোচিত নৈপুণ্যে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী, দলের কোচ, মিডিয়া, সমর্থক—সবার মুখেই তাই দলের জয়গান। পরশু প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ড্র ম্যাচ শেষে কোচ রিকি হার্বার্টই যেমন বলে দিয়েছেন, ‘ছেলেরা যা করেছে, তাতে আমি পুলকিত। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে আমার।’
প্রধানমন্ত্রী জন কির উচ্ছ্বাসটা যেন আরও বেশি। দেশে ফিরলে নিউজিল্যান্ড দলকে বীরোচিত সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়েও সংবর্ধনা পাওয়া প্রথম দলও সম্ভবত হয়ে যাবে কিউইরাই! প্রধানমন্ত্রী কির কণ্ঠে উত্তেজনা, ‘দেশ কাঁপছে বিশ্বকাপ উত্তেজনায়। অল-হোয়াইটরা কাঁপছে টগবগে মনে দেশে ফেরার উত্তেজনায়। চ্যাম্পিয়নের মতোই দেশে ফিরবে তারা।’
এর আগে একবারই বিশ্বকাপে খেলেছিল নিউজিল্যান্ড। ১৯৮২ বিশ্বকাপের কোচ জন অ্যাডশিয়াড প্যারাগুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের পর বলেছেন, ‘আমার কাছে পুরোটাই অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। এক একটি মিনিট কেটে গেল, কেউ আমাদের বিপক্ষে গোল করতে পারল না। সত্যিই আমি বিস্ময়াভিভূত।’
নিউজিল্যান্ডের মিডিয়াও কম যায়নি। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড শিরোনাম করেছে ‘অপরাজিত, অদম্য।’ দ্য প্রেস লিখেছে, ‘অপরাজিত। কিন্তু এখন সময় বীরদের দেশে ফেরার।’ রাজধানী ওয়েলিংটনের এক সমর্থকের প্রতিক্রিয়া, ‘এটা বিস্ময়কর। আমরা হারিনি।’
গতবারের দুই ফাইনালিস্ট ইতালি আর ফ্রান্সের চেয়েও ওপরে অবস্থান নিউজিল্যান্ডের। কিউই কোচ তাই বলছেন, র‌্যাঙ্কিংয়ে ৭৮ নম্বর জায়গাটি মানায় না নিউজিল্যান্ডের, ‘ইতালি, ফ্রান্সের অবস্থান আমাদের পেছনে। আমি মনে করি, বিশ্বের শীর্ষ ২৫-এ থেকে শেষ করাটা আমাদের জন্য দারুণ ব্যাপার।’

No comments

Powered by Blogger.