বৈশাখী মেলায় বোমা হামলা

যশোরের বেনাপোলের বলফিল মাঠে আয়োজিত বৈশাখী মেলায় বুধবারের বোমা হামলার ঘটনা যেকোনো নাগরিককে উদ্বিগ্ন করবে। দীর্ঘদিন দেশ বোমাবাজি থেকে মুক্ত ছিল। বেনাপোলের ঘটনায় বাড়তি উদ্বেগের কারণ, ১৯৯৯ সালে এ যশোরেই উদীচীর সম্মেলনে জঙ্গিরা বোমা হামলা চালিয়ে ১০ জন সংস্কৃতিসেবীকে হত্যা এবং বহু লোককে আহত করেছিল। সেই হামলায় আক্রান্ত অনেকে এখনো স্প্লিন্টারের আঘাতের দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করছেন। অপরাধীদের কেউ কেউ আটক হলেও বিচার শেষ হয়নি।
বেনাপোলে বোমা হামলাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি, যদিও সন্দেহভাজন চারজনকে পুলিশ আটক করেছে। তদন্ত শেষ হলে হামলাকারীদের পরিচয় জানা যাবে। ঘাতক জঙ্গি হোক বা জঙ্গিগোষ্ঠীর বাইরের কেউ হোক, তাতে অপরাধের মাত্রা কমে না। বোমা হামলায় স্থলবন্দরের যে শ্রমিক মারা গেলেন, তাঁর শোক স্বজনদেরই বয়ে বেড়াতে হবে। সাধারণ নাগরিকদের প্রত্যাশা রাষ্ট্রের কাছে, তাদের জানমালের নিরাপত্তা দেবে। এর আগের আওয়ামী লীগ ও চারদলীয় জোট সরকারের আমলে জঙ্গিদের উপর্যুপরি বোমা হামলায় বহু মানুষ মারা গেছেন। চারদলীয় জোটের কেউ কেউ জঙ্গিদের মদদ জুগিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বোমা হামলা হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলেও এত দিন বোমা হামলার ঘটনা ঘটেনি।
ধারণা করা গিয়েছিল, বাংলাদেশে বোমা হামলার যুগ শেষ হয়েছে। কিন্তু বেনাপোলের ঘটনা দেশবাসীকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। অবশ্য গ্রামাঞ্চলের মেলা-প্রদর্শনীতে অন্য কারণেও সংঘাত-সংঘর্ষ ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটে থাকে, বিশেষ করে রাজনৈতিক সংগঠন বা তাদের অনুসারীরা এসব আয়োজন করলে প্রতিপক্ষ তা ভণ্ডুল করার চেষ্টা চালায়। এটি হয়ে থাকে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই সংগঠন কিংবা একই সংগঠনের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের মধ্যে। যে কারণেই বেনাপোলে বোমাবাজির ঘটনা ঘটুক না কেন, অপরাধীদের খুঁজে বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের বিকল্প নেই। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই পারে এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে

No comments

Powered by Blogger.