বিশ্বকাপের আরেক সমস্যা উচ্চতা

উচ্চতা-আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না আর্জেন্টিনার। বাছাইপর্বে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৬৩৭ মিটার উঁচু স্টেডিয়ামে খেলতে গিয়ে আর্জেন্টিনা তো ১-৬ গোলের লজ্জা নিয়ে ফিরেছিল বলিভিয়া থেকে। আগামী বিশ্বকাপেও ‘বি’ গ্রুপে পড়া আর্জেন্টিনার জন্য অপেক্ষা করছে এই উচ্চতা-সমস্যা।
লা পাজের মতো না হলেও দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে নিশ্চিতভাবেই উচ্চতাজনিত সমস্যায় ভুগতে হবে আর্জেন্টিনাকে। কারণ গ্রুপ পর্বে তাদের দুটো ম্যাচ জোহানেসবার্গে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যে ভেন্যু ১৭০০ মিটার উঁচুতে। অন্য ম্যাচটি পোলকওয়েনে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যেটির উচ্চতা ১২৩০ মিটার।
এবারের অন্যতম দুই ফেবারিট স্পেন, ব্রাজিলকেও দুটো ম্যাচ খেলতে হবে উঁচুতে। সাবেক চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের জন্যও অপেক্ষা করছে উচ্চতা-সমস্যা। ইংল্যান্ড, জার্মানি আর নেদারল্যান্ডকে মাত্র একটা ম্যাচ খেলতে হবে উঁচুতে। এদিক দিয়ে চরম সুবিধাভোগী দল হবে পর্তুগাল। পোর্ট এলিজাবেথ, কেপটাউন আর ডারবানে তাদের সবগুলো গ্রুপ ম্যাচ হওয়ায় দ্বিতীয় রাউন্ডের আগে উঁচুতে কোনো ম্যাচ খেলতে হবে না ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইতালির হবে মিশ্র অনভূতি। তাদের একটা ম্যাচ সমুদ্রতীরে, একটা ম্যাচ জোহানেসবার্গে আর একটা ম্যাচ ৬০০ মিটার উঁচু মালভূমিতে।
উচ্চতা-সমস্যা এই দলগুলোর জন্য যে কতটা কঠিন তার বড় প্রমাণ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার গত কনফেডারেশনস কাপ। গত জুনে বিশ্বকাপের পোশাকি মহড়াখ্যাত ওই টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বই পেরোতে পারেনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ইতালি কোচ মার্সেলো লিপ্পি তখন উচ্চতাকেই দায়ী করেছিলেন। তবে এবার তারা ভালো প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘উচ্চতা কোনো সমস্যা নয়। গত গ্রীষ্মে সেটি ছিল, কারণ আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু এবার আমরা বেশ ভালোমতোই প্রস্তুতি নিয়ে আসব।’
শুধু ইতালি নয়, বাকি দেশগুলোকেও এই দিকটায় বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে। অনেকেই প্রস্তুতি ম্যাচগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচুতে রাখার ব্যবস্থা করছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে আর্জেন্টিনাকে!
এদিকে বিশ্বকাপের বল নির্মাতা অ্যাডিডাসের একটি গবেষণার ফলও বলছে, আগামী বিশ্বকাপে উচ্চতা একটা বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। বলের গতিতে প্রভাব ফেলবে ৫ শতাংশ। ফলে সতর্ক থাকতে হবে গোলরক্ষকদেরও। কারণ ফাইনালের ভেন্যু জোহানেসবার্গের সকার সিটি স্টেডিয়ামে ২০ গজ দূরত্ব থেকে নেওয়া কোনো ফ্রি-কিক ৫ শতাংশ দ্রুতগতিতে পৌঁছাবে গোলরক্ষকের কাছে। সাধারণ উচ্চতায় যে বল ঘণ্টায় ৭৪ মাইল গতিতে ছুটত, সেটিই উঁচুতে ছুটবে ঘণ্টায় ৭৮ মাইল গতিতে।

No comments

Powered by Blogger.