উত্তপ্ত গাজা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭

ফিলিস্তিনে ‘ভূমি দিবসের’ পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিবর্ষণে নিহতের সংখ্যা ১৭ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছে প্রায় দেড় হাজার ফিলিস্তিনি। বছরের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে শনিবার ‘জাতীয় শোক’ ঘোষণা করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এদিকে, সংঘর্ষের পর আবারো বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। সীমান্তের কাছে অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা তাঁবুতে ফিরে নতুন উদ্যমে বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা করছে তারা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি ও আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়, ভূমি দিবসকে ঘিরে শুক্রবার থেকে ছয়দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে ফিলিস্তিনিরা। তারা ইসরাইলের দেয়া সীমান্ত বেড়ার কাছে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। শুক্রবার গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সীমান্ত বেড়ার কাছে ৬টি স্থানে বিক্ষোভ করে ফিলিস্তিনিরা। এসময় ইসরাইলি সেনারা বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনিদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও গুলি ছুড়তে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ৬ ফিলিস্তিনি। এছাড়া দিনের প্রথমভাগে বিক্ষোভ শুরুর পূর্বেই গাজার খান ইউনুস শহরে এক ফিলিস্তিনি কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সারা দিন ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রাখে ইসরাইলি সেনারা। এতে এখন পর্যন্ত ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আশঙ্কা করা হচ্ছে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ভূমি দিবসের বিক্ষোভে ১৪শ’রও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিনের ভূমিতে ইসরাইলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারী ছয় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা। নিহতদের স্মরণে একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, শনিবার সারা দেশে সকল সরকারি কার্যালয়, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
এদিকে, ইসরাইল অভিযোগ করেছে, বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর পাথর ও জ্বলন্ত টায়ার নিক্ষেপ করেছে। পরে বাধ্য হয়ে তারা ফাঁকা গুলি চালিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলের সীমান্ত বেড়া ভাঙার চেষ্টা করছিল বলেও অভিযোগ করেছে তারা। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রোনেন ম্যানেলিস বলেন, শুক্রবারের বিক্ষোভ কোনো প্রতিবাদ ছিল না। এটা ছিল পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা। এর জন্য ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দল হামাসকে দায়ী করেন তিনি। পাশাপাশি সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রাখলে ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের সেনা অভিযানের হুমকি দেন। গাজায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ। তিনি একটি স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানান। এছাড়া, বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করায় ইসরাইলের নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

No comments

Powered by Blogger.