উল্টা পথে চালাও রিকশা তুমি ঢাকা শহরে...by মোকাম্মেল হোসেন

দ্রুত যাওয়া দরকার। রিকশায় রকেটের গতি তুলতে পারলে ভালো হতো। সেটা সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা শহরের রাস্তায় সারাক্ষণ বিসকাউচ লেগে থাকে। আজ এটা বেশি মনে হচ্ছে। মকবুল সাপের মতো ক্যারাবেরা ভঙ্গিতে এগোনোর চেষ্টা করছিল, বেমক্কা তার গতিরোধ করা হল। একজন ট্রাফিক কনস্টেবল মকবুলের রিকশার গতি জিরো মিটারে নামিয়ে আনলেন। শহর-বন্দরের রাস্তাঘাটগুলোর মা-বাপ হচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ।
মকবুল ট্রাফিক শব্দটা ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারে না; সে বলে ট্যাপা পুলিশ। শরীরে বাঘু মামার নখের আঁচড় লাগলে ১ ঘা, আর ট্যাপাদের বদনজর পড়লে সেটা যে ৮১-তে উন্নীত হয়, এটা মকবুলের অজানা নয়। সে আতঙ্কিত বোধ করল। রিকশা থেকে লাফ দিয়ে নামার পর মকবুল দেখল- ট্যাপা একজন নয়, একাধিক এবং তাদের একজন সর্দার রয়েছে। হাতের ইশারায় মকবুলকে কাছে আসতে বললেন ট্যাপা সর্দার। সর্দারের খাদ্য তালিকায় রিকশা নেই। রিকশা হচ্ছে চুনোপুঁটি জাতীয় খাবার। সড়কে দায়িত্ব পালনকারী আনসার বা কনস্টেবলরা এসব চুনোপুঁটির দিকে হাত বাড়ায়। সর্দারদের দৃষ্টি থাকে টেম্পো, মাইক্রোবাস, বাস, ট্রাক ইত্যাদি বড় খাবারের প্রতি। এ ব্যাটাকে তিনি ডেকেছেন শীতের সকালে তার সঙ্গে মজা করে একটু উষ্ণ হওয়ার আশায়। সিংহ কখনও কখনও ইঁদুরের সঙ্গে ক্রীড়ায় মত্ত হয়। এ হচ্ছে রিকশাচালকের সঙ্গে তার এক ধরনের খেলা। মকবুল কাচুমাচু ভঙ্গিতে সামনে এসে দাঁড়াতেই ট্যাপা সর্দার জিজ্ঞেস করলেন-
: নাম কী তর?
: মকবুল খান।
ট্যাপা সর্দার মুখ ভেংচালেন। বললেন-
: ইঃ। নদীতে নাই হাঁটু পানি, নাম তার ধলেশ্বরী! তুই ব্যাটা রিকশাওয়ালা- তর নাম হবে মকবুইল্যা, মকবুল খান হইতে গেছস কোন কামে? মকবুল কিছু না বলে ঢোক গিলল। ট্যাপা সর্দার পকেট থেকে কাগজ-কলম বের করলেন। কোনো রিকশাচালক অন্যায় বা অনিয়ম করলে সাধারণত রিকশার সিট খুলে নেয়া হয়। মকবুলের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটল না। তার বদলে একটি ‘চাহিদাপত্র’ তৈরি হল। ট্যাপা সর্দার সেটা মকবুলের হাতে ধরিয়ে দিতেই আর্তনাদের সুরে সে বলল-
: এইডা কী দিলেন ছার! আমি তো চক্ষে দেখি না।
যে খেলাটা শুরু হয়েছিল নিছক মজা করার উদ্দেশ্যে, মকবুলের বক্তব্য সেটাকে মারাত্মক পরিণতির দিকে নিয়ে গেল। মকবুলের কথা শুনে চোখ ট্যারা হয়ে গেল ট্যাপা সর্দারের। বিমূঢ় ভাব কেটে যাওয়ার পর মকবুলের গালে আড়াই টন ওজনের একটা থাপ্পড় দিয়ে তিনি বললেন-
: হারামজাদা! চক্ষে না দেখলে রিকশা চালাস ক্যামনে?
মকবুল নিঃশ্বাস বন্ধ করে থাপ্পড়ের ওজন সামাল দেয়ার করছিল। ভোদরের মতো নাক দিয়ে ফোঁস করে দম ছেড়ে কোনোমতে বলল-
: দশজনে যেমন কইরা চালায়!
ট্যাপা সর্দার সামান্য উষ্ণতা চাচ্ছিলেন। মকবুলের উত্তর শুনে তিনি গরম তেলের মতো ফুটতে লাগলেন। সহকর্মীদের উদ্দেশে বললেন-
: এই বেইন্যা কী বলতেছে, শুনছেন আপনেরা!
বসের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ট্যাপার দল মুখটিপে হাসতে লাগল। মকবুলের সামনে ডান হাত মেলে দিয়ে ট্যাপা সর্দার বললেন-
: এই ব্যাটা, এদিকে তাকা। এই যে আমার ডান হাত, দেখতেছস?
: দেখতাছি ছার।
: এইবার ক’, হাতে মোট কয়টা আঙ্গুল?
: ৫টা।
দ্বিতীয় থাপ্পড়ের ওজন বেড়ে দাঁড়াল ৩ টন এবং সেট মকবুলের অন্য গালে আঘাত হানল। ট্যাপা সর্দার চোখ পিটপিট করে বললেন-
: ফকিন্নির পুত, এইবার লাইনে আইছস! ক’, চক্ষে দেখস না- এই কথাটা ক্যান কইলি? ফাইজলামি?
: না ছার, ফাইজকামি না!
: তাইলে?
: আমি তো লেখাপড়া করি নাই, তাই কোনো কিছু পড়তে পারি না। হের লাইগা কইছি, চক্ষে দেখি না।
: অঃ। কবিত্ব ফলাবার গেছস। দে, ডাবল টাকা দে!
: টেকা দেওন লাগব কেন ছার!
: টাকা দেওন লাগব, কারণ তুই নিষেধ অমান্য করছস। শহরের রাস্তায় উল্টাপথে যানবাহন চালানো নিষেধ।
: কবে নিষেধ করল! আমি তো কিছু হুনি নাই।
: তুই শুনবি ক্যামনে? পত্রিকা পড়স?
পত্রিকা পড়ার কথা শুনে মকবুল খুবই লজ্জা পেল। সাড়ে পাঁচ টন ওজনের চাপে চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া গালে হাত বুলিয়ে বলল-
: ছার যে কী কয়!
ট্যাপা সর্দার দেখলেন, মজার প্রজাপতিরা পাখা মেলতে শুরু করেছে। তিনি মুচকি হেসে মকবুলের কাছে জানতে চাইলেন-
: বিবিসি শুনস?
: এইডা কী জিনিস ছার!
: কী জিনিস, সেইটা জানা জরুরি না। তর কাছে জানতে চাইছি বিবিসি শুনস কিনা? হা অথবা না।
: না।
: তাইলে আর কথা বাড়াইয়া লাভ নাই। পকেটে কী আছে, বাইর কর।
মকবুল পকেট থেকে বিড়ির প্যাকেট বের করল। ট্যাপা সর্দারের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল-
: এই যে ছার, নেন।
ট্যাপা সর্দার চিকন স্বরে জানতে চাইলেন-
: এইগুলা কী?
: বিড়ি।
: অই ব্যাটা, তর কাছে আমি বিড়ি চাইছি?
: কী করমু ছার, পয়সার অভাবে সিগ্রেট কিনবার পারি না!
সহকর্মীদের দিকে ফিরে চোখ টিপলেন ট্যাপা সর্দার। তারপর মকবুলের উদ্দেশে বললেন-
: গুলি মার তর বিড়ি-সিগারেটের। টাকা কত আছে, বাইর কর।
: টেকা তো নাই ছার!
: মিছা কথা কীজন্য কইতেছস? টাকা দে।
: টেকা আসলেই নাই ছার।
: টাকা নাই ক্যান? খেপ মারস নাই?
: খেপ লইয়াই যাইতেছিলাম। অর্ধেক পথ যাওয়ার পর প্যাসেঞ্জার নামাইয়া দিয়া দৌড় দিছি।
: দৌড় দিছস ক্যান? রাস্তায় গোলমাল লাগছিল?
: না।
: তাইলে?
: ডাইরেক্ট হইয়া গেছে।
: কী ডাইরেক্ট হইয়া গেছে?
: পেট।
মকবুলের কথা শুনে ট্যাপা সর্দার অট্টহাসি দিলেন। বললেন-
: পেট ডাইরেক্ট হইল কীজন্য! বিরানি খাইছিলি নাকি?
: ভাতই জোটে না; বিরানি খামু কেমনে?
: তাইলে কী খাইছিলি?
: ট্রাকসেল থেইকা চাউল কিনছিলাম গতকাইল। সকালবেলা অই চাউলের ভাত খাইয়া রাস্তায় বাইর হওয়ার পর টের পাইলাম, পেটের বদ্দিনাশ হইয়া গেছে।
মাথার চুলে আঙুল চালাতে চালাতে ট্যাপা সর্দার বললেন-
: ঢাকা শহরে রিকশাচালকদের যে ইনকাম, তা দিয়া তো তিনবেলা মিনিকেট চালের ভাত খাওয়া যায়। তুই ওএমএসের চাল কিনতে গেছস কোন দুঃখে?
: আয় যেমন, ব্যয়ও তেমন।
: এত ব্যয় কিসের? বৌ কয়টা?
: বৌ একটাই। পোলাপানের লেখাপড়ার খরচ আছে। বাজারে জিনিসপত্রে দাম অত্যধিক। ঘরভাড়াও অত্যধিক। নয়-ছয় কইরা ব্যবসায়ীদের টাকা কামানোর সুযোগ আছে। চাকরিজীবীদের ঘুষ খাওয়ার বন্দোবস্ত আছে। রিকশার ড্রাইভারদের তো এই রকম কোনো সুযোগ নাই।
ট্যাপা সর্দার হেসে ফেললেন। বললেন-
: হালকা একটা খোঁচা মারলি মনে হয়!
কে কাকে খোঁচা মারবে? মকবুল নিজেই একটু পরপর তলপেটে খোঁচা খাচ্ছিল। আকুতি মেশানো সুরে ট্যাপা সর্দারের উদ্দেশে সে বলল-
: ছার! এতক্ষণ বেরেক দিয়া দিয়া কোনোমতে আটকাইয়া রাখছি। বেরেক ফেল করলে কাপড়চোপড় ছেড়াবেড়া হইয়া যাবে। রিকশা এইখানে রইল। আমি আগে খালাস হইয়া আসি।
মকবুলের ঘোষণা শুনে ট্যাপা সর্দার চারদিক পর্যবেক্ষণ করে বললেন-
: আশেপাশে কোনো ঝোপঝাড় নাই; সব ফকফকা। কোনখানে ডেলিভারি দিবি?
মকবুল ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দৌড় দেয়ার আগে ট্যাপা সর্দারের উদ্দেশে সে বলল-
: এই রাস্তার পরের রাস্তায় মোবাইল টাট্টিখানা আছে...
মোবাইল টয়লেটের কথা শুনে ট্যাপা সর্দার নাক সিঁটকালেন। আগারগাঁও এলাকায় জৈতুন নামে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। কয়েকদিন আগে বান্ধবীকে নিয়ে সেখানে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন ট্যাপা সর্দার। নৈশভোজকে আরও বর্ণিল করতে রাস্তার মোড়ের একটা ফুলের দোকানে যাওয়ার পর বান্ধবী বলে উঠল-
: তুমি আমারে কোথায় নিয়া আসলা! মনে হইতেছে ফুলের দোকানে আসি নাই, বাস টার্মিনালের পাবলিক টয়লেটের সামনে আইসা দাঁড়াইছি।
বান্ধবীর কথা শুনে রোমান্টিকতার রুমাল দুই টুকরা হয়ে গেল। তিনি ফুলের দোকানদারকে পাকড়াও করলেন। বললেন-
: অই মিয়া, দোকানে পচা ফুল রাখছো কীজন্য!
দোকানদার মুচকি হেসে বলল-
: স্যার, আমার দোকানে কোনো বাসি ফুল নাই।
: তাইলে দুর্গন্ধ কিসের?
: বাম পাশের ফুটপাতে একটা মোবাইল টয়লেট স্থাপন করা হইছে। সেইখান থেইকা দুর্গন্ধ আসতেছে।
ট্যাপা সর্দার খুবই অবাক হলেন। ঢাকা শহরের কাজ-কারবার বুঝতে পারছেন না তিনি। ঢাকা নাকি দিন দিন আধুনিক হচ্ছে। কোথায় আধুনিকতা? আধুনিকতার নমুনা এটা? ভাসমান টয়লেট তো অনেক বছর আগের কারবার। যে সময়টায় আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল না, তখন কলের নিচে গামলা-বালতি রাখার মতো টাট্টিখানার নিচে একটা পাত্র রাখা হতো। মেথররা প্রতিদিন পেছনের দরজা দিয়ে এসে জমা হওয়া মলমূত্র সংগ্রহ করে লোকালয়ের বাইরে ফেলে আসত। আধুনিক শহরে আধুনিক পাবলিক টয়লেট স্থাপন না করে ভাসমান টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে কোন প্রকল্পবিদের পরামর্শে, খুব জানতে ইচ্ছে করছিল ট্যাপা সর্দারের। প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষের হাতে লোডা ধরিয়ে দেয়ার এ প্রকল্প নিশ্চয়ই কোনো ধান্ধাবাজের মাথা থেকে বের হয়েছে এবং সরকারের কিছু ধান্ধাবাজ এটার অনুমোদন দিয়েছে। নতুন প্রকল্প মানেই নতুন ধান্ধাবাজি। ট্যাপা সর্দার ভেবে পাচ্ছেন না, এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর একটি প্রকল্প নগর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেল কী করে? সেখানে কি একজনও সুস্থ চিন্তার মানুষ নেই? এ ধান্ধাবাজরা জাতিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে নতুন একটি প্রকল্প খাড়া করলে ট্যাপা সর্দার মোটেই অবাক হবেন না। নতুন সেই প্রকল্পের আওতায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে সুতা দিয়ে ব্লেড বেঁধে রাখা হবে। পাশে থাকবে একটা সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ডে লেখা থাকবে-
: আমাদের সেবা নিন। এখানে আসুন। কাটুন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন। উন্নত ও সৃজনশীল জাতি গঠনে ভূমিকা রাখুন...
মকবুল ফিরে এসেছে ঝরঝরা হয়ে। একজন অপরাধী তার দ্বারা সংঘটিত অপরাধের স্বপক্ষে নানা যুক্তি দাঁড় করায়। পাশাপাশি দেখে, আর কেউ এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত কিনা! যুক্ত থাকলে সে তখন সেটাকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে শাস্তি এড়ানোর চেষ্টা করে। মকবুলের জন্য কী শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে, তা জানা নেই তার। সে শাস্তি এড়াতে চায়। রিকশা ফেরত চায়। উল্টো পথ ধরে কালো রঙের একটা পাজেরো জিপ আসতে দেখে ট্যাপা সর্দারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সে বলল-
: ছার! ওই যে দেখেন- উল্টাপথে আসতেছে!
সহি-সালামতে পাজেরোর রাস্তা অতিক্রমের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ট্যাপা সর্দার আগের জায়গায় ফিরে এলেন। মকবুলের কথার সূত্র ধরে বললেন-
: আরে ব্যাটা! কোথায় আইয়ুব খান, আর কোথায় খিলিপান। গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উড়তেছিল, দেখছস?
মকবুল মাথা নাড়ল। ট্যাপা সর্দার বললেন-
: পতাকা বান্ধা থাকে মন্ত্রি-মিনিস্টারদের গাড়িতে। মিনিস্টারসাবরা জরুরি রাষ্ট্রীয় কাজকর্মে নিযুক্ত। মিনিস্টারসাবের মতো তর কি জরুরি কোনো কাম ছিল?
জরুরি ছিল না মানে? এর চেয়ে জরুরি কোনো কাজ জগতে আছে? মকবুল গলায় জোর এনে বলল-
: আমারটা তো আরও জরুরি ছিল।
এসময় একটা মোটরসাইকেলকে নিয়ম ভঙ্গ করে উল্টোপথে আসতে দেখা গেল। সেদিকে ট্যাপা সর্দারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মকবুল বলল-
: ছার, দেখেন...
ট্যাপা সর্দার দেখলেন, মোটরসাইকেল আরোহী স্বয়ং পুলিশের লোক। নিজ গোত্রের এক ভাইয়ের আইনভঙ্গের অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার জন্য তিনি বললেন-
: তুই ভাবছস, হোন্ডার দোহাই দিয়া পার পাবি? হোন্ডা হইল দুই চাক্কার গাড়ি; তরটা তিন চাক্কার। অইটার সঙ্গে তাল মিলাইলে চলব?
মকবুল তিন চাকার কোনো যানবাহনকে নিয়মভঙ্গকারী হিসেবে দেখতে চাচ্ছিল। বিধাতা তার মনোবাঞ্ছা পূরণ করলেন। একটা সিএনজি আটোরিকশা উল্টাপথ ধরে অগ্রসর হচ্ছে দেখে সে চেঁচিয়ে বলল-
: ছার! এইবার?
নিয়ম ভঙ্গকারী সিএনজি অটোরিকশা কাছাকাছি আসার পর সেটার নম্বরপ্লেট দেখে ট্যাপা সর্দার লবঙ্গ হাসি হাসলেন। সিলভার রঙের ‘প্রাইভেট’ লেখা অথচ সাধারণ যাত্রী পরিবহনের কাজে নিয়োজিত এ বাহনটির মালিক তার ভায়রা ভাই। তিনি নতুন ছলচাতুরির আশ্রয় নিলেন। বললেন-
: তিন চাক্কার হইলেও ওইটা গ্যাসে চলে। তর রিকশা কি গ্যাসে চলে?
মকবুল মাথা নাড়ল। বলল-
: না।
সিএনজি অটোরিকশা নির্বিঘ্নে চলে যাওয়ার পর মকবুলকে ট্যাপা সর্দার বললেন-
: তর কেলামিটি কোন জায়গায়, বুঝতে পারছস তো!
: পারছি ছার। তবে আপনের কাছে আমার একটা প্রশ্ন আছে।
: কী প্রশ্ন?
: এই দেশে যত নিয়ম-কানুন আর আইন কি কেবল গরিবের জন্য?
জটিল প্রশ্ন। বাংলাদেশের বয়স ৪৬ প্লাস। সাড়ে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে অনেক জ্ঞানী-গুণী-পণ্ডিতের মাথা গোল হয়ে গেছে। অকালে মাথা গোল হোক, এটা ট্যাপা সর্দার চান না। কক্ষনো না। নেভার...
মোকাম্মেল হোসেন : সাংবাদিক
mokamia@hotmail.com

No comments

Powered by Blogger.