বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলার অবকাশ নেই: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার কোনো অবকাশ নেই বাংলাদেশের। কিন্তু বিশ্বব্যাংক আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের আইনি পরামর্শ নেওয়া উচিত। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ল রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা বলেছিলেন, দুর্নীতির ষড়যন্ত্র নিয়ে বিশ্বব্যাংক দুদকের মাধ্যমে তাদের লোক দিয়ে তদন্ত করাবে। অনুসন্ধান করবে। আমরা তখন বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসলাম। বললাম, যে বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত করার কথা, সেটা অন্য কোনো বিদেশি সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানোর নিয়ম নেই। এ রকম হলে মামলাই করা যাবে না। মামলা টিকবে না। এটা যখন বললাম, তখন তাঁরা বললেন, ঋণ দেবে না বিশ্বব্যাংক। পরে ঋণ বাতিল করা হলো।’ আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে আসামি করতে বলে। এজাহারে তাঁর নাম দিতে বলে। প্রতিনিধিদলের একজন বললেন, এজাহারে আবুল হোসেনের নাম দিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করিয়ে রিমান্ডে নিলে সব বের হয়ে যাবে। বিশ্বব্যাংকের দলিলপত্রে আছে, আবুল হোসেনের সঙ্গে একটা কোম্পানির চারজন দেখা করেছেন।
এ ছাড়া আর কোনো কথা সেখানে নেই।’ অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুর মামলা নিয়ে দুদকের কাছে যেসব দলিলপত্র রয়েছে, তা প্রকাশ করতে অনুরোধ করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিচার বিভাগের জন্য যা যা করা দরকার, তা এই সরকার করবে। কিন্তু সেটা প্রয়োজন মাফিক। বিচারিক কাজে বিচার বিভাগের যে স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতার ওপর সরকার কিন্তু কখনোই কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। আমরা শুধু দাপ্তরিক কাজ করে থাকি। সেটা আমরা করে যাব।’ হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগে আইন করার প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে একটা আইন করার কথা আছে। সেই ব্যাপারে আমরা ইতিমধ্যে একটা আইনের খসড়া দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। এই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এ রকম একটা আইন করে ফেলব।’ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকার, সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলমসহ আরও অনেকে।

No comments

Powered by Blogger.