যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই তদন্তকাজ শুরু করি

এম এ হান্নান খান আন্তর্জাতিক (অপরাধ) ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত তদন্ত সংস্থার সমন্বয়কারী। অতিরিক্ত ডিআইজি পদ থেকে অবসর গ্রহণকারী এই অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তা এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেলহত্যা মামলার তদন্তেও প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধাপরাধের বিচার ও তদন্ত বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন প্রথমআলোরসঙ্গে।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: সোহরাব হাসান
প্রথম আলো l যুদ্ধাপরাধ বিচারের তদন্ত কার্যক্রমে কীভাবে যুক্ত হলেন? এর প্রথম প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল মতিনকে নিয়ে তো বেশ বিতর্ক হয়েছিল। কীভাবে এ রকম একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে তদন্ত সংস্থার প্রধান করা হয়েছিল?
এম এ হান্নান খান l ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচার করা হবে বলে অঙ্গীকার ছিল। সংসদের প্রথম অধিবেশনে এ ব্যাপারে সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইনও পাস হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক (অপরাধ) আদালত গঠিত হয় ২০১০ সালের ২৫ মার্চ। বিচার বিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে আবদুল মতিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যখন জানা গেল, আবদুল মতিন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা ছিলেন এবং বরিশালের বিএম কলেজে তিনি বর্তমান শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন, তখন বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ উঠল এবং তিনি পদত্যাগ করলেন। এই প্রেক্ষাপটে তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠিত হয় এবং ২০১১ সালের জানুয়ারি আমি তদন্ত সংস্থার সমন্বয়কারী হিসেবে যোগ দিই।
প্রথম আলো l আপনাদের প্রথম তদন্তকাজ কোনটি ছিল?
হান্নান খান l আমি তদন্ত সংস্থায় যোগ দেওয়ার আগেই কিছু কিছু কাজ শুরু হয়েছিল। তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন স্থানে চিঠিপত্র লেখা হয়েছিল। ইতিমধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আইনে আছে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও তদন্তকাজে অংশ নিতে পারবেন। তাঁরা কাজটি শুরুও করলেন। এতে কিছুটা বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখা দেয়। তখন আমি তদন্ত সংস্থার পক্ষে চিঠি দিয়ে আইনের ধারা ও বিধি উল্লেখ করে চিঠি দিই। বিষয়টি তাঁরাও বুঝতে পারেন। অবশ্য আমরা তদন্তকাজে সহায়তার জন্য তাঁদের সঙ্গে নিয়ে যাই। আমাদের প্রথম তদন্ত হয় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার। তৃতীয় মামলা ছিল গোলাম আযমের।
প্রথম আলো l এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলাসহ যেসব মামলা তদন্ত করেছেন, প্রতিটিই ছিল প্রচলিত আইনে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিচার মামলার তদন্ত ছিল ব্যতিক্রম?
হান্নান খান l পুলিশ বিভাগের বা অন্য যেকোনো তদন্ত সংস্থা তদন্ত করে থাকে সিআরপিসির অধীনে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধ বিচার আইনে বলা আছে, সিআরপিসি চলবে না। প্রচলিত সাক্ষ্য আইনও এখানে প্রযোজ্য নয়। আমাদের তদন্ত করতে হয়েছে প্রধানত সাক্ষ্যসাবুদের ভিত্তিতে। এই মামলার ব্যাপারে সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন থাকলেও যাঁরা এসব ঘটনার শিকার হয়েছেন, তাঁদের স্বজনেরা ভয়ভীতিতে ছিলেন। আবার বিবাদীপক্ষও তৎপর ছিল। সাঈদীর মামলায় আমরা জানতে পারলাম, যে ভদ্রমহিলা সে সময়ে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন, তিনি ভারতে আছেন। আমরা লোক পাঠালাম। কিন্তু তাঁরা যাওয়ার আগে বিবাদীপক্ষ সেখানে গিয়ে হাজির হয়। সাঈদী বা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী উভয়েরই অর্থবিত্ত ও রাজনৈতিক প্রভাব ছিল। তাঁদের আন্তর্জাতিক লবিও বিচার–প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে চেষ্টা করেছে। ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যানকে বিবাদীপক্ষ লবিস্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। তিনি আদালতকক্ষেও গিয়েছেন। তাঁর আচরণের কারণে একবার তাঁকে কাঁধে করে আদালত কক্ষের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর আর তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আবার বিচার–প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কোনো কোনো বিদেশি লেখক লেখালেখিও করেছেন।
প্রথম আলো l প্রথম দিকে তদন্তের বাধাগুলো কী ছিল?
হান্নান খান l বাইরে থেকে অনেকে এসে বলতে থাকল, মানবাধিকারবিরোধী অপরাধ হয়েছে ঠিক, কিন্তু তোমাদের বিচারটি আন্তর্জাতিক মানের হচ্ছে না। আমাদের এখানে বিচার হচ্ছে, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক (অপরাধ) ট্রাইব্যুনাল আইনে। এই আইনটি যাঁরা করেছিলেন, তাঁরা অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান ও দূরদর্শী ছিলেন। এ আইন ও বিধিতে আসামিপক্ষের সব অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে এখন অনেক দেশ বাংলাদেশকে অনুসরণ করছে। উগান্ডা থেকে একটি দল আমাদের কাছে এসেছিল। বারাক ওবামার মানবাধিকার-সংক্রান্ত বিশেষ দূত স্টিফেন র‍্যাপ একাধিকবার এসেছেন। তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং শেষ পর্যন্ত তদন্ত সংস্থা ভালো কাজ করছে বলে স্বীকারও করেছেন।
প্রথম আলো l আওয়ামী লীগের সাংসদ মোসলেমউদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা হয়েছে। মামলা করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। এটি আপনারা তদন্ত করছেন কি না।
হান্নান খান l তদন্ত এখনো শুরু হয়নি। মামলাটি করেছে বিচারিক আদালতে এবং তাঁরা যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনাল আমাদের কাছে পাঠালে আমরা তদন্ত করব। এটা ঠিক যে মোসলেমউদ্দিন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ফুলবাড়িয়া থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক দিন পর তিনি পাকিস্তান বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন অথবা আত্মসমর্পণ করেন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
প্রথম আলো l অভিযোগ আছে তাঁর নির্দেশেই তিনজন মানুষকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল?
হান্নান খান l আমরা সেটি তদন্ত করে দেখব। তবে আমাদের কাছে তথ্য এসেছে যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করল আপনি সে সময় কোথায় ছিলেন, তিনি যেসব বাড়ির নাম বলেছেন, পাকিস্তানি বাহিনী সেসব বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল। এটি তাঁর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে হয়েছে, না হুমকির মুখে বলেছেন, সেটি দেখতে হবে।
প্রথম আলো l কীভাবে আপনারা মামলা তদন্ত করেন? আদালতের নির্দেশে না এফআইআরের ভিত্তিতে?
হান্নান খান l সিআরপিসির ভিত্তিতে করা এফআইআর এখানে প্রযোজ্য নয়। যখনই সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচার হবে বলে ঘোষণা দিল, তখন বিভিন্ন স্থানে মামলা হলো। মামলার পর আসামিদের কেউ কেউ হাইকোর্ট থেকে জামিনও নিলেন। কিন্তু বিচারিক আদালত তো এসব মামলা গ্রহণ করতে পারেন না। তাঁরা এগুলো আন্তর্জাতিক (অপরাধ) ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দিলেন। অভিযোগের হেফাজতকারী হলো তদন্ত সংস্থা। দু-তিনটি জায়গা থেকেই মামলাগুলো আসে। অনেক মামলা আদালতে হয় এবং আদালত তদন্তের জন্য আমাদের কাছে পাঠান। আবার কেউ সরাসরি আমাদের সঙ্গে অভিযোগ করে থাকেন। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তা কোনো মামলার তদন্ত করতে গিয়ে নতুন কারও সম্পর্কে তথ্য পেলে তা-ও তদন্ত করে দেখতে পারেন।
প্রথম আলো l মামলাটি সঠিক না উদ্দেশ্যমূলক কীভাবে নির্ধারণ করেন?
হান্নান খান l যুদ্ধাপরাধ বিচার আইনেই বলা আছে তদন্তকারী দল শীর্ষস্থানীয় অপরাধীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিচার করবে। এমনকি ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালেও কিন্তু একটি মামলায় ২৪ জনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় ২৪ জনই আসামি ছিলেন। কিন্তু আমাদের আইনে প্রিন্সিপাল অ্যাকিউজড বা মূল অপরাধী সম্পর্কে কিছু বলা নেই। সে ক্ষেত্রে আমরা দেখি, অপরাধটি কতটা ভয়াবহ ছিল। আমরা যখন তদন্তের দায়িত্ব নিই তখন ৪২৫টি মামলা ছিল। এখন মামলার সংখ্যা ৬৯১টি। আমরা যদি লঘু অভিযোগের মামলাগুলো নিতাম তাহলে সর্বোচ্চ শাস্তি হতো না। আমাদের প্রতি মানুষ আস্থা রাখত না। যে বিচারের সঙ্গে সমগ্র দেশবাসীর আবেগ জড়িত সেই বিচার নিয়ে আমরা ছেলেখেলা করতে পারি না। আমাদের লক্ষ্য ছিল মানুষের আস্থা অর্জন। এ কারণে যেসব মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি হবে সেই মামলাগুলোই তদন্ত করেছি।
প্রথম আলো l বিএনপি নেতা ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুকের মামলাটি কোন পর্যায়ে আছে?
হান্নান খান l এ মামলার তদন্ত একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কিছু শিক্ষকের স্বাধীনতাবিরোধী কাজের সূত্র ধরেই মামলার সূত্রপাত। তদন্ত সংস্থা ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি কাগজ সংগ্রহ করেছে, যাতে স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের নামধাম ছিল। তার মধ্যে ওসমান ফারুকের নামও আছে।
প্রথম আলো l অন্য কোনো দলের কোনো নেতা সম্পর্কে তদন্ত করছেন কি?
হান্নান খান l এখন কে কোন দল করছেন, সেটি আমরা দেখছি না। দেখার বিষয় একাত্তরে কার কী ভূমিকা ছিল। জামায়াতের সাবেক সাংসদ খালেক মণ্ডল ও আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে অনীত অভিযোগ আমরা তদন্ত করেছি। জাতীয় পার্টির সাংসদ এম এ হান্নানের বিচার চলছে। বিএনপির সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আবদুল আলীমের বিচার হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ আদালতে আওয়ামী লীগের নেতা মোবারকের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।
প্রথম আলো l বিভিন্ন মামলায় আদালত তাঁদের রায়ের পর্যবেক্ষণে তদন্ত কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের দুর্বলতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
হান্নান খান l যুদ্ধাপরাধ বিচার আদালত কিন্তু আমাদের ব্যর্থতার কথা বলেননি। আপিল বিভাগ বলেছেন। যেমন সাঈদীর বিরুদ্ধে আগে যে মামলা হয়েছিল, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য আমরা জেলা প্রশাসন থেকে পাইনি। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম নিজে মহাফেজখানায় গিয়ে কিছু পাননি। আমি বলব, আমরা বড় কোনো ভুল করিনি।
প্রথম আলো l মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্ত সংস্থা ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ছিল?
হান্নান খান l প্রথম দিকে থাকলেও পরবর্তীকালে কাটিয়ে উঠেছি। এখন কোনো সমন্বয়হীনতা নেই।
প্রথম আলো l তদন্ত করতে গিয়ে এখন কী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন?
হান্নান খান l ৪৫ বছর আগের ঘটনা। অনেক আলামতই খোয়া গেছে। অনেক আসামি মারা গেছেন। সাক্ষী ও ভুক্তভোগীও মারা গেছেন। পঁচাত্তরের পর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থানের ফলে অপরাধীরা অনেক আলামত নষ্ট করে ফেলেছেন। যখন কোনো মামলার ব্যাপারে তদবির বেশি হয়, আমরা ধরে নিই এর পেছনে উদ্দেশ্য আছে। প্রাথমিক তদন্ত করে যদি বুঝতে পারি মামলার ভিত্তি আছে, তাহলে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত  করি। আমাদের লোকবল খুবই কম। মোট ৭৪টি মামলা আমরা তদন্ত করেছি বা করছি। কিন্তু মোট মামলার সংখ্যা ৬৯১।
প্রথম আলো l তাহলে কি একসময় বিচার কার্যক্রম বন্ধ করতে বলবেন?
হান্নান খান l না, বন্ধ করতে বলব না। জার্মানিতে কিছুদিন আগেও ৯৩ বছর বয়সী এক যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছে। সরকার যদি এটি দ্রুত শেষ করতে চায়, তাহলে আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। অন্তত বিভাগীয় শহরে একটি করে আদালত স্থাপন করতে হবে। তদন্তের জন্য লোকবল বাড়াতে হবে। যে ব্যক্তি অভিযোগ করলেন, রাষ্ট্রের দায় আছে, তার প্রতিকার করার। না হলে রাষ্ট্র দায়বদ্ধ থাকবে।
প্রথম আলো l সাক্ষীদের নিরাপত্তার বিষয়ে আপনারা কী করেছেন?
হান্নান খান l অনেক সাক্ষীই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। আমরা সরকারকে সাক্ষী সুরক্ষা আইন করার জন্য লিখেছি। সরকার সেটি এখনো করেনি; তবে জেলা পর্যায়ে যে ডিসি-এসপির নেতৃত্বে সাক্ষী সুরক্ষা কমিটি আছে, তাদের ব্যবস্থা নিতে বলেছে। ওই কমিটির কাছে যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে কেউ আমাদের জানালে আমরাও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নিতে বলি। এতগুলো ঘটনার মধ্যে পিরোজপুরে মাহবুব নামে একজন সাক্ষী আক্রমণের শিকার হয়েছেন বলে মামলা হয়েছে।
প্রথম আলো l যুদ্ধাপরাধীর বিচার আদালতে যাঁরা সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়েছেন, তাঁদের কারও কারও নামে ১৯৭২ সালের দালাল আইনে মামলাই ছিল না। এর কারণ কী?
হান্নান খান l না হওয়ার একটা কারণ, এঁদের অনেকে দেশে ছিলেন না। অনেকের নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছিল। আবার সামাজিক-পারিবারিক কারণেও অনেকে সুবিধা পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে যত দ্রুত বিচার করা গেছে, দালাল আইনে সেটি সম্ভব ছিল না।
প্রথম আলো l আপনি বললেন, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের প্রধান লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী। তাদের বিচার করা যাবে কি?
হান্নান খান l ø আমি তো বাধা দেখছি না। তাদের অপরাধের তথ্য-উপাত্ত এখনো আসছে। সব মামলার তদন্তেই পাকিস্তানি বাহিনীর সেনা কর্মকর্তাদের নাম আসে। এসব তথ্য-উপাত্ত আমরা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছি। সরকার বিচারের সিদ্ধান্ত নিলে তাদেরও বিচার হতে পারে।
প্রথম আলো l আপনাকে ধন্যবাদ।
হান্নান খান l আপনাকেও ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.