হাই অ্যালার্ট তবুও উদ্বেগ by নুরুজ্জামান লাবু

একের পর এক খুনের ঘটনা। হামলা। খুন হয়েছেন বিদেশী নাগরিক, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ব্লগার ও প্রকাশক। খুনের ধরনও প্রায় অভিন্ন। বোমা হামলা হয়েছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী শিয়া সম্প্রদায়ের আশুরার শোক মিছিলে। একের পর এক ঘটনায় চারদিকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। উদ্বেগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যেও। নাশকতার আশঙ্কা উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের তথ্যে। বিদেশী দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিদেশীদের ওপর হামলার নির্ভরযোগ্য তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। এমন অবস্থায় দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দেশের সব কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল দুর্বৃত্তদের হামলায় পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর পুলিশকেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকার ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হলেও থামছে না হামলা ও খুনের ঘটনা। এতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা উদ্বেগ কাটছে না কিছুতেই।
এদিকে জনসমাগমস্থল, বাস, রেল, নৌ-টার্মিনাল, পাওয়ার স্টেশন, গ্যাস বিতরণকেন্দ্র, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বিনোদনকেন্দ্র, বিদেশী নাগরিকদের অফিস ও বাসভবনে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পুলিশের চেকপোস্টগুলোকে। সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকতে বলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। প্রয়োজনের সময় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্যই একটি মহল এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। সকল ঘটনারই রহস্য উদঘাটন এবং প্রতিরোধে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, হামলাকারীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে হামলা করলেও তারা সবাই আসলে এক। একই কায়দায় সব ঘটনা ঘটছে। একারণে পুলিশকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজিপি জাভেদ পাটোয়ারী বলেছেন, এসব হামলা পরিকল্পিত। পুলিশকে সতর্কতার সঙ্গে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নানাভাবে চেষ্টা করেও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর টার্গেট কিলিং কিংবা বোমা হামলা ঠেকাতে পারছেন না। ১৩ দিন আগে রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রবেশ পথ গাবতলী ও গতকাল আশুলিয়ায় পুলিশের চেকপোস্টে হামলা চালিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যার বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। আলোচনা চলছে কর্মকৌশল নিয়ে। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পুলিশি চেকপোস্টে সদা সতর্ক থাকার জন্য। এছাড়া, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বাস-রেল-নৌ টার্মিনালেও নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সময় পার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এমনিতেই দুই বিদেশী নাগরিক খুন হওয়ার কারণে বিশ্বে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় আবার যদি কোন বিদেশী নাগরিক খুন হন তাহলে পরিসি্থিত আরও বেশি ঘোলাটে হয়ে যাবে। তৃতীয় কোন পক্ষ এই সুযোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একারণে বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। একইভাবে দেশের আন্তর্জাতিক তিন বিমানবন্দরেও হামলার আশঙ্কা রয়েছে। কোন দেশের বিমানবন্দরে হামলা মানে ওই দেশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা তলানিতে ঠেকেছে বলে মনে করা হয়। একারণে যে কোন ধরনের হামলা ঠেকাতে তিন বিমানবন্দরেই নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। গত সোমবার থেকে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পুলিশের চেকপোস্টে হামলার ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে চেকপোস্টে দায়িত্বপালনকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মনোবল ভেঙে যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, রাজধানী ঢাকার পর আশুলিয়ায় পুলিশের চেকপোস্টে হামলার ঘটনা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এসব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে রাতের বেলা চেকপোস্টে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শতভাগ সতর্কতা থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে কাউকে তল্লাশির সময় ‘গান পয়েন্টে’ থাকাসহ বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেটসহ আত্মরক্ষামূলক সব ধরনের সরঞ্জাম রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া চেকপোস্টে দায়িত্বরতরা এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে যাতে চারদিকই নজরদারি করা যায়।
এদিকে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যার পর আরও এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কূটনৈতিক পাড়ায় কড়া তল্লাশিসহ গোয়েন্দা নজরদারি, প্রতিটি রাস্তায় চেকপোস্ট এবং বিদেশী নাগরিকরা যেসব এলাকায় যাতায়াত বা অবস্থান করেন সেসব এলাকাতেও কড়া গোয়েন্দা নজরদারি ও নিরাপত্তা বিধান করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দা তথ্যে তারা বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করতে একটি গোষ্ঠী উঠে পড়ে লেগেছে। তারা যে কোন মূল্যে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চায়-এমন তথ্য রয়েছে গোয়েন্দা ভাষ্যে। একারণে কারাগারগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বা স্থাপনা, জনসমাগমস্থল, পাওয়ার  স্টেশন, গ্যাস বিতরণকেন্দ্র, বিনোদন কেন্দ্রে নাশকতার আশঙ্কা থাকায় এসব স্থানগুলোতে কড়া গোয়েন্দা নজরদারির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।  এসব স্থানের বহিঃবেষ্টনী ও আন্তঃবেষ্টনীতে নিরাপত্তা দেয়াল, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, গমনাগমন নিয়ন্ত্রণ ও ওয়াচ টাওয়ার বা সমজাতীয় ব্যবস্থাপনায় সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সিসিটিভি মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়, রাজনৈতিক বিরোধী জোটের পাশাপাশি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একারণে জঙ্গি সংগঠনগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য বলা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, গত ২৬শে অক্টোবর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেশের ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার, সব পুলিশ কমিশনার, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, র‌্যাবসহ পুলিশের সব ইউনিটে একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে কারাবন্দি যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করতে এবং বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে একটি ‘সন্ত্রাসী গ্রুপ’ যে কোন ভিআইপিকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এই গ্রুপটি দেশের যে কোন বিমানবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাইয়েরও নীলনকশা করেছে বলে ওই চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। চিঠিতে সারা দেশে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীকে এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে গতকাল সরজমিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বিমানবন্দর এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা পালন করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যেকোন ধরনের নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর ভূমিকা পালন করছে। চেকপোস্টের মাধ্যমে জনসাধারণকে তল্লাশির পর বিমানবন্দর এরিয়ায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। পুরো বিমানবন্দর এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশে এখনও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালক জাকির হোসেন মানবজমিনকে জানান, উপরের নির্দেশ ছাড়া দর্শনার্থীদের নিষেধাজ্ঞা আপাতত তোলা হচ্ছে না। এছাড়া, বাকি সবকিছু নরমাল রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, নিরাপত্তায়  দায়িত্বরতদের একটু সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়। পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তা জোরদারের আদেশ আমরা সচরাচর পেয়ে থাকি। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা একটু বেশি সতর্ক থাকছি। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা তৎপর রয়েছি। বিমানবন্দর এবং এর আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পরিস্থিতি উদ্বেগজনক
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা
সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, নির্দিষ্ট একটি পক্ষ ধারাবাহিকভাবে খুনের শিকার হওয়ায় উদ্বেগ বহু গুণ বেড়ে গেছে। এ উদ্বেগ নিরসন করতে হবে। দ্রুত ও যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিরোধ করতে হবে টার্গেট কিলিং। মানবজমিনকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পরও ব্লগার নীলাদ্রি খুন হন। হামলার শিকার হন শুদ্ধস্বরের প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল। তারা যেহেতু চেয়েছিলেন, তাই তাদের তো সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেয়ার প্রয়োজন ছিল। নিরাপত্তার শৈথিল্যের কারণেই তারা খুন ও হামলার শিকার হয়েছেন। যারা খুনের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন তাদের তো প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতেই হবে। আর টার্গেট কিলিং চলছেই। বন্ধ করা যাচ্ছে না। এটাকে আমি পুলিশের অসহায়ত্ব হিসেবে দেখি না। তবে ঘাটতি আছে। গোয়েন্দা তথ্যে ঘাটতি থাকতে পারে। তা কাটিয়ে উঠতে হবে। প্রয়োজন হলে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। তবে যে আসামি ধরা পড়ছে না তাও নয়।
তিনি বলেন, কারা, কেন এ হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটাচ্ছে তা জানা যাচ্ছে না। রহস্য অনেক সময় অনুদ্ঘাটিত রয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হলো হোতারা নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য। আন্ডারগ্রাউন্ডে কাজ করে। তারা নিজেরা প্রকাশ না করলে, তা অনেক সময় জানা যায় না। আবার পুলিশও অনেক সময় স্পর্শকাতর তথ্যগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রকাশ করে না। বাধ্যবাধকতাও নেই। তবে তথ্য না জানালে যে নিরাপত্তা দেবে না, তা তো নয়।
ঘটনার পর পর সরকারের পক্ষ থেকে এসব হামলাকে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা বলে দাবি করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নুরুল হুদা বলেন, যারা এসব কথা বলছেন তারাই ভালো বলতে পারবেন। তাদের এমন বক্তব্যের পেছনে ওই দলগুলোর আন্ডারগ্রাউন্ডের তৎপরতা সম্পর্কে তথ্য থাকতে পারে। সন্দেহও থাকতে পারে। তবে শুধু সন্দেহ থেকে কারও দিকে আঙুল তুললে চলবে না। প্রমাণ থাকতে হবে। রাজনীতিবিদরা রাজনৈতিক বক্তব্য দেবেন, তা-ই স্বাভাবিক। তা চলছে। চলবে। কিন্তু বেফাঁস বক্তব্য দেয়া ঠিক নয়। এতে তদন্ত ব্যাহত হয়। অপরাধীরা সুযোগ নেয়। আবার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যাদের বিচার হচ্ছে তাদের বাঁচানোর তৎপরতা থাকতে পারে। তাদের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে এমন গোষ্ঠীও তাদের সমর্থন নিয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। কাছাকাছি মতাদর্শের গোষ্ঠীর মধ্যে সহানুভূতি ও সাদৃশ্য থেকে এমন হামলা ও খুনের তৎপরতা অস্বাভাবিক নয়। কারণ উদ্দেশ্য একটাই। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তোলা। সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলা।
সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশে পুলিশ বিভাগে বিশেষ কোনো টিম নেই উল্লেখ করে বলেন, অন্যান্য দায়িত্বের পাশাপাশি পুলিশকে ওই দায়িত্বও পালন করতে হয়। কিন্তু ইদানীং সন্ত্রাসী ঘটনা বেশি ঘটছে। বাড়ছে জঙ্গি তৎপরতা। এ অবস্থায় সন্ত্রাস দমনে পৃথক টিম গঠন প্রয়োজন বলে মনে হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.