ছাত্রলীগের হানাহানি- বিচারহীনতার সংস্কৃতির আরেক ফসল হলো সন্ত্রাস

দেশে একদিকে চাপাতির কোপে লেখকেরা নিহত হচ্ছেন, অন্যদিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরাও রামদা সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সপ্তাহজুড়েই চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিবদমান পক্ষের সংঘর্ষ চলেছে। এতে চবিতে পুলিশের চার সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন এবং নগরে নয়জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগের এই পরিণতির পেছনে আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রশ্রয় ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির দায় রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোর নামে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই। পুলিশ ৭৯টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। পরে তল্লাশি চালিয়ে ৩৫ জন নেতা-কর্মীকে আটক এবং একটি এলজি, একটি কাটাবন্দুক, প্রায় ৭০টি রামদাসহ কয়েক বস্তা লাঠিসোঁটা ও পাথর উদ্ধার করা হয়।
ছাত্রলীগের ‘শুভেচ্ছা’ সংঘর্ষে আহত ৫০
এদিকে চট্টগ্রাম নগরে তিন সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার সংঘর্ষে জড়ালেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত দুই নেতার অনুসারীরা। রাবার বুলেট, ইটের আঘাত ও দায়ের কোপে আহত হন নয়জন। ২০১৩ সালের ২৪ জুন এই সিআরবি এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে শিশুসহ দুজন খুন হন। তখন কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। উল্লেখ্য, এই দুই পক্ষের নেতারাই বহিষ্কৃত। অর্থাৎ বহিষ্কৃত হলেও দলীয় খুঁটির জোর বহালই থাকে। ছাত্রলীগে এখন ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় দশা৷
ছাত্রলীগ নিয়মিতভাবে অপকর্মের জন্য খবরের শিরোনাম হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের কাজ উন্নয়ন ও নিয়োগ-বাণিজ্যের বখরা আদায়৷ এই অবস্থায় ছাত্রলীগ কীভাবে ছাত্রদের অধিকার রক্ষা কিংবা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শ বাস্তবায়নের সহায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করবে? এভাবে চলতে থাকলে তাদের দ্বারা কল্যাণকর আর কিছু করা সম্ভব কি না, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন৷
এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফলে ছাত্ররাজনীতি তো বটেই, জাতীয় রাজনীতিকেও মূল্য দিতে হচ্ছে। এসব অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.