যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর আট লেন প্রকল্প: ৩ বছরের কাজ ৫ বছরেও হয়নি

সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর
কাভার্ড ভ্যান। এই মহাসড়কের আট লেন প্রকল্পের
কাজে কোনো অগ্রগতি নেই। ছবি: আসিফ হোসেন
তিন বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রাজধানীর কুতুবখালী থেকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত ৭ দশমিক ২ কিলোমিটার অংশ চার লেন থেকে আট লেনে উন্নীত করার কাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আফতাব হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে কাজ এই সময়ের আগেই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩০ জুন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৮০ শতাংশ। কাগজে-কলমে বাকি ২০ শতাংশ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কারণ, গত তিন মাসে প্রকল্পের কাজে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।
সওজ সূত্র বলছে, যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত নয় কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেন থেকে আট লেনে উন্নীত করতে ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছিল ১২০ কোটি ২৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরে শুরু হয়ে ২০১২-১৩ অর্থবছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তী সময়ে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার কমিয়ে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী) উড়ালসড়কের পূর্ব প্রান্ত (কুতুবখালী) থেকে কাঁচপুর সেতুর পশ্চিমে শিমরাইল ইউটার্ন পর্যন্ত করা হয়। প্রকল্পের নির্ধারিত মহাসড়কের দৈর্ঘ্য কমলেও দরপত্র মূল্য সমন্বয় করে এর ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১৩১ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি।
নারায়ণগঞ্জ সওজের প্রতিবেদনে দুই কিলোমিটারের ফুটপাত ও রেলিং নির্মাণে ৪০ লাখ, এক হাজার মিটার নালা নির্মাণে ৯৩ লাখ ও একটি ইন্টারসেকশন আংশিক নির্মাণে ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। এই বরাদ্দ ইতিমধ্যে খরচ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের কাজের এখনো ২০ শতাংশ বাকি রয়ে গেছে। সড়ক প্রশস্ত করার জন্য প্রকল্পে ৫ লাখ ২২ হাজার ঘনমিটার মাটি ভরাটের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ কোটি ৫১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। মাটি ভরাটকাজে ইতিমধ্যে ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি ৯৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। প্রকল্পে সানারপাড় থেকে শিমরাইল অংশে একটি কালভার্ট ১০ মিটার বাড়ানোর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু দরপত্র আহ্বানের সময় সেটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর ফলে কালভার্টের কাজ এখনো শুরু হয়নি। অথচ সেটি না হওয়া পর্যন্ত এই অংশে আট লেনের কাজ শেষ করা যাবে না।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামছ্ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য জানতে একাধিকবার তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধরেননি। মুঠোফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

No comments

Powered by Blogger.