অবশেষে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো অবৈধ দোকানপাট

রাজশাহী নিউমার্কেটের সামনে ফুটপাতের
ওপরের ২৩টি অবৈধ দোকান গতকাল উচ্ছেদ
করেছে সিটি করপোরেশন l প্রথম আলো
রাজশাহী নিউমার্কেটের নকশা ভেঙে প্রধান ফটকের দুই পাশে গড়ে তোলা অবৈধ দোকানগুলো পাঁচ বছর পর গতকাল সোমবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তিন দফা নোটিশ দেওয়ার পরও দোকানগুলো সরিয়ে না নেওয়ায় এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলো।
সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাজশাহীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোর্তুজা আল মুহিত। অভিযানে সহযোগিতা করে র‌্যাব ও পুলিশ।
মার্কেট ঘিরে এসব অবৈধ দোকান নিয়ে ২৩ অক্টোবর প্রথম আলোয় ‘রাজশাহী নিউমার্কেট ঘিরে অবৈধ দোকান: পাঁচ বছর পর উচ্ছেদ নোটিশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর দোকানগুলো সাত কার্যদিবসের মধ্যে সরিয়ে নিতে নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তখন একটি দোকানও সরানো হয়নি। পরে ২২ সেপ্টেম্বর আবার নোটিশ দিয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে দোকান সরিয়ে নিতে বলা হয়। এবারও কোনো সাড়া নেই। এরপর ৮ অক্টোবর চূড়ান্ত নোটিশ দেয় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
সূত্রটি জানায়, এরপর গতকাল উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। অভিযানের দুই দিন আগে এলাকায় মাইকিং করে দোকানের মালামাল সরিয়ে নিতে বলা হয়। দোকানিরা তাঁদের মালামাল সরিয়ে নিলেও কয়েকটি দোকান ছাড়া আর কেউই দোকানের সাজসজ্জা খুলে নেয়নি।
এ বিষয়ে কয়েকজন দোকানমালিক বলেন, তাঁরা আশা করেছিলেন, শেষ পর্যন্ত অভিযান না-ও হতে পারে। কিন্তু অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাঁরা তড়িঘড়ি করে দোকানের সাজসজ্জা খুলে নেন।
অভিযান চালিয়ে মোট ২৩টি দোকান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় নিউমার্কেটের সামনের একটি লেনের গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শত শত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে অভিযানের দৃশ্য দেখে।
২০০৯ সালে নিউমার্কেটের পশ্চিম পাশে ‘দারুচিনি প্লাজা’র কাজ শুরু হয়। ৩৬ মাসে এর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নিউমার্কেটের কাঁচা বাজারের জায়গায় নয়তলা এ মার্কেটের নির্মাণকাজ শুরুর ফলে কিছু সবজি ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাময়িকভাবে পুনর্বাসনের জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
ওই ঘোষণার সুযোগে মার্কেটের বাইরের পূর্ব পাশের দেয়াল ঘেঁষে ২৩টি দোকান গড়ে ওঠে। উত্তর পাশেও তৈরি হয় আরও কয়েকটি দোকান। এর মধ্যে দু-একটি সবজির দোকান ছাড়া অন্যগুলো ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর দোকান। সে সময় অভিযোগ উঠেছিল, প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত সবজি ব্যবসায়ীরা দোকান পাননি। একটি প্রভাবশালী মহল ‘পজিশন’ দখল করে অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেয়। রহস্যজনক কারণে এত দিন দোকানগুলো ভাঙা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.