ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন হোসি কোনিও

শনিবার রংপুর মহানগরীর উপকণ্ঠ কাচু আলুটারী এলাকায় দৃর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হোসি কোনিও (৬৬) এলাকায় ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ২৭ রমজান তিনি স্থানীয় কাদেরীয়া মসজিদে ইসলাম ধর্ম গ্রহণও করেছিলেন। তার এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি এলাকার কেই মেনে নিতে পারছেন না। রংপুর পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে প্রকাশ, খুন হওয়া জাপানি নাগরিক হোসি কোনিও চলতি বছরের ১৪ মে এক বছরের ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর তিনি রংপুর নগরীর মুন্সিপাড়ার জাকারিয়া বালার বাড়িতে উঠেন। ওই বাড়ির ওয়াল ঘেষেই আছে কাদেরীয়া জামে মসজিদ।
জাকারিয়া বালার স্ত্রী আয়শা জাকারিয়া জানান, জাকারিয়া পরিবারের চার ভাই সবাই থাকেন জাপানে। এর মধ্যে জাকারিয়ার ভাই বর্তমানে জাপান প্রবাসী মিশনের সাথে হোসি কোনিওর সুসম্পর্কের সুবাধে তিনি রংপুরে আসেন এবং জাকারিয়া বালার বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকেন। কয়েক বছর আগেও তিনি রংপুরে এসেছিলেন এবং ওই বাড়িতেই পেয়িং গেস্ট হিসেবে ছয় মাস অবস্থান করেন। এবার রংপুরে এসে আবারও ওই বাড়িতে উঠেন। তিনি থাকতেন ওই বাড়ির দোতালায়। বাসায় অবস্থানকালে শুধু খাওয়ার সময় নিচে নামতেন। তিনি জানান, হোসি কোনিও খুব ভালো লোক ছিলেন।
রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সোহেল রানা ইমন জানান, হোসি কোনিও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি শুক্রবারে মসজিদে এসে নামাজ পড়তেন। এবার কোরবানীর ঈদে কারামতিয়া কবরস্থান ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজও পড়েছেন। তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন।
অন্যদিকে স্থানীয় কামরুল ইসলাম অন্তু, মিজানুর রহমান রিপু, ইমন, নান্টুসহ এলাকার অনেকেই জানান, গত ২৭ রমজান কাদেরীয়া মসজিদে আসরের নামাজের সময় তিনি মসজিদের ইমাম সিদ্দিক হোসেনের কাছে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন। এসময় ১৪/১৫ মুসল্লি মসজিদে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় কাদেরিয়া জামে মসজিদের ভারপ্রাপ্ত ঈমাম মাওলানা তাজুল ইসলাম জানান, আমি এই মসজিদে মাঝে মাঝে নামাজ পড়াই। কিছুদিন হোসি কোনিও আমার পেছনে বাম পাশে মাগরিবের নামাজ আদায় করেছেন। পুলিশের উদ্ধারকৃত পাসপোর্টে তার জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ৩১-০৫-১৯৪৯।
স্থানীয়রা জানান, রংপুরে এসে কাচু আলুটারি এলাকার শাহ আলম নামের এক কৃষকের দুই একর জমি রংপুর মহানগরীর রবার্টসন্সগঞ্জ পানির ট্যাংক এলাকার রজব আলীর পুত্র হীরার সাথে অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে লিজ নেন। সেখানে তিনি ও হীরা বিভিন্ন কোয়েল ঘাসের গাছ লাগিয়ে গড়ে তোলেন ফার্ম। নিজের হাতে সেগুলো পরিচর্যাও করতেন।
তবে পরিচর্যার জন্য মাস খানেক আগে হীরাসহ ফার্মে এলেও কিছুদিন থেকে তিনি একাই ফার্মে যাতায়াত করতেন বলে জানায় স্থানীয়রা। তবে ওই ঘাসের খামার পরিদর্শনে গিয়ে রংপুর প্রানী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা জানান, ওই ঘাসের পরিচয় তিনি জানেন না।

No comments

Powered by Blogger.