পান চাষীরা সংকটে

দেশের সর্ববৃহৎ চুয়াডাঙ্গার পানহাটগুলো ব্যাপারী সংকটে পড়েছে। হরতাল-অবরোধের কারণে হাটে দিন দিন পানব্যাপারীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। পান কিনতে আসা ব্যাপারীরা লোকসান গুনতে গুনতে নিঃস্ব হয়ে যেতে বসেছেন। প্রত্যাশিত মূল্য না পেয়ে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এভাবে হরতাল-অবরোধ চলতে থাকলে তাদের পথে নামা ছাড়া উপায় থাকবে না বলে আশংকা করছেন। হরতাল-অবরোধের কারণে তাদের কয়েকগুণ গাড়িভাড়া দিতে হচ্ছে। ফলে ভাড়া বেশি দিতে গিয়ে লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা জেলার পানচাষীরাও হতাশ হয়ে পড়েছেন। চুয়াডাঙ্গার পান দেশ-বিদেশে প্রসিদ্ধ হিসেবে পরিচিত। পানচাষের মাধ্যমে এলাকার বহু কৃষক তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। ছোট-বড় মিলে চুয়াডাঙ্গায় প্রতি সপ্তাহে ২০টি পানের হাট বসে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে ট্রাক ট্রাক পান কিনে নিয়ে যান। অথচ অবরোধ-হরতালের উত্তাপে পান ব্যবসা দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গার পান দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। বিদেশেও রফতানি হয়। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে পানচাষীরা বিক্রির জন্য পান হাটে তুলে অর্ধেক দামও পাচ্ছেন না। এ কারণে পানচাষীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তারা বলছেন, ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পানের বাজার সবচেয়ে থাকে চড়া। অথচ এখন তাদের পান বিক্রি হচ্ছে না। যে পান ৮০ টাকায় বিক্রির কথা, তা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে। এ সময় যে সংখ্যক পান ক্রেতা বা ব্যাপারী হাটে আসার কথা তার অর্ধেকও আসছেন না। ফলে হাটে পানের আমদানি হলেও ক্রেতার অভাবে দাম পাচ্ছেন না পানচাষীরা। চুয়াডাঙ্গার জুগিরহুদা গ্রামের পানব্যাপারী সারজেত। তিনি চুয়াডাঙ্গা থেকে পান কিনে শেরপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করেন। তিনি বললেন, কি আর করব। চলমান হরতাল-অবরোধে ব্যবসায় লোকসান দিতে দিতে কাহিল হয়ে পড়েছি।

No comments

Powered by Blogger.