ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপক্রমণিকা by সাদেক খান

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা রূপান্তরের দিগবলয় ক্ষীণ রেখাপাতে দৃষ্টিগোচর হতে শুরু করেছে, যাকে ইংরেজিতে বলা যায় সিলভার লাইনিং বা রুপালি রোশনাই। বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা নাগরিকদের জন্য সেটা আশার আলো, এ দেশের জনমনে সেটা নাগরিক নিরাপত্তার আশ্বাস এবং অকল্যাণের অবসানের দিশা হয়ে উঠতে পারে। তবে রাষ্ট্রনৈতিকভাবে এখনো তার কোনো সঙ্কেত আসেনি, সরকারিপর্যায়ে বা রাজনৈতিক নেতৃত্বের পর্যায়েও তার কোনো প্রতিভাত ঘটেনি। এসেছে আধা সরকারিভাবে কিংবা নিমরাজনৈতিক পর্যায়ে। এখনো সমানে বহাল বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর কাঁটাতারের বেড়ার পাশে যথেচ্ছ গুলি চালিয়ে বাংলাদেশী শিকারের বধ্যভূমি, ‘কিলিং ফিল্ডস’ বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যার নামডাক হয়েছে। এখনো ৪০ বছর আগে দুই রাষ্ট্রের শীর্ষপর্যায়ে সই করা স্থলসীমা চুক্তির বাস্তবায়ন ঘটেনি, ভারতীয় লোকসভার ছাড়পত্র মেলেনি। তিস্তা চুক্তি নিয়ে দীর্ঘসূত্রতার বয়সও একই মাপের। জাতিসঙ্ঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশ-ভারত প্রধানমন্ত্রী-পর্যায়ে বৈঠকের যে আয়োজন করা হয়েছিল, তার আলোচ্যসূচি নির্ধারণের প্রস্তুতিপর্বে দিল্লিতে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নেতৃত্বে যৌথ পরামর্শক কমিটির বৈঠক বসেছিল ২০ সেপ্টেম্বর। ওই বৈঠক সম্পর্কে বিবিসির খোলামেলা রিপোর্ট ছিল : আশার বাণী শোনাতে পারেনি ভারত। দিল্লি বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দীর্ঘ দিনের তিক্ততার দুটো বিষয় তিস্তার পানি বণ্টন ও সীমান্তচুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের তরফে কোনো অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের তরফে ভারতীয় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে ভারত জানিয়েছে, তিস্তা ও স্থলসীমান্ত চুক্তি দুটোর ব্যাপারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। দ্রুত সেই ঐকমত্য তৈরি হবে বলে বর্তমান ভারত সরকার আশা করছে। তবে এখনই বাংলাদেশকে কোনো আশার কথা ভারত শোনাতে অপারগ। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তিনি হতাশ নন। শেখ হাসিনার সরকার এ কথা বোঝেন যে, ভারতের কিছু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা আছে; সমঝোতার জন্য অপেক্ষা করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ সরকার।
ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বাধ্যবাধকতার ধুয়া মেনে নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে ভারতের ‘ধীরে চলো’ নীতির কাছে মাথানত করলেন শেখ হাসিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি তার প্রশ্নবিদ্ধ সরকার ভারতকে যেভাবে আগবাড়িয়ে একের পর এক ‘কনশেসন’ বা সুবিধা দিয়ে চলেছে, সেটা দিল্লিকে খুশি রেখে ঢাকায় দমননীতির স্টিমরোলার চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার তাড়না থেকেই ঘটছেÑ এমন ধারণা করছেন ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। একজন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সময় যিনি সংগ্রামী ছাত্রনেতৃত্বের এক ‘খলিফা’ ছিলেন, টেলিটকে তিনি প্রকারান্তরে বলেই ফেললেন, ক্ষমতাসীনেরা গদি রক্ষায় বাংলাদেশকে ভারতের ‘অঙ্গরাজ্য’ বানাতেও দ্বিধাবোধ করবে না। তবে সান্ত্বনার কথা, ক্ষমতাসীনদের কথিত দেশ বিক্রির এমন তাড়নার ওপর আর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নির্ভরশীল নয়। বস্তুত দেশ ‘কেনাবেচার’ ধ্যানধারণা ২১ শতকে এসে তামাদি হয়ে গেছে। ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞীও আমলে না নিয়ে পারেননি যে, তার অবশিষ্ট রাজ্য গ্রেট ব্রিটেনের অঙ্গরাজ্য স্কটল্যান্ড নিয়মতান্ত্রিকভাবেই বিচ্ছিন্নতার নোটিশ দিয়েছিল, ভোটাভুটির সময় জোর প্রচার চালিয়ে তাদের নিবৃত্ত করতে হয়েছে। ইউরোপে একইভাবে নিয়মতান্ত্রিক বিচ্ছিন্নতাবাদের ঢেউ উঠেছে কয়েকটি রাষ্ট্রে। আর অনিয়মিত বিচ্ছিন্নতাবাদ তো ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর বিন্যাস কিংবা ঔপনিবেশিক আমলের উত্তরাধিকারজাত সীমারেখাগুলোকে পাল্টাতে কোথাও সশস্ত্র সংগ্রাম, কোথাও শক্তিদ্বন্দ্বের মহড়া, কোথাও সন্ত্রাসী হিংসা-প্রতিহিংসার আগুন জ্বেলেছে। বিশ্বজুড়ে তারা ঘোর অস্থিরতা পাকিয়ে তুলেছে। মধ্যপ্রাচ্যে একটি ‘জেনারেশনাল ওয়ার’ বা প্রজন্মব্যাপৃত যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে একক পরাশক্তি। ওদিকে পাশ্চাত্যের মারণাস্ত্র শক্তি এবং বিশ্বপুঁজি ও মুদ্রা ব্যবসায় একাধিপত্যের মোকাবেলায় প্রতিশক্তি হিসেবে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে বিকল্প ইউরোশিয়ার সাংহাই সহযোগিতা এবং চীন-রাশিয়া-ভারত-ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা সহযোগে ব্রিকস সমমনা পুঁজি ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা। এক কথায়, বিশ্বব্যবস্থা একটি বহুমুখী রূপান্তরের প্রক্রিয়াধীন। আর খোদ ভারতের ভূখণ্ড বিদারিত করে বিদ্রোহী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী বিচরণ ও অনিয়মিত যুদ্ধ এখনো সমানে চলেছে।
নিয়মতান্ত্রিক ভারত যেমন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কথা বলছে, ভূরাজনৈতিক বিশ্ব পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের স্রোতধারা তেমনি ভারতের জন্য একটি বহির্দেশীয় বাধ্যবাধকতারও আগমন ঘটিয়েছে। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শক্তিদ্বন্দ্ব ও সহযোগিতার তাগিদ এখন ছোটবড় সব দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব বিস্তার করছে। অতীতে উদীয়মান বৃহৎ শক্তি ভারত যেভাবে অভ্যন্তরীণ বা আঞ্চলিক বিরোধে ‘হাতির মতো’ ওজন নিয়ে চেপে বসে থেকে অমীমাংসায় ুদ্রশক্তিকে কাতর করতে পারত, এখন সেই কৌশল বুমেরাং হওয়ার সম্ভাবনার কথা ভাবতে হচ্ছে ভারতশক্তিকে। কারণ যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধির জন্য সামান্য হলেও যে বাধার সৃষ্টি করতে পারে, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় সাফল্যের জন্য তার তাৎক্ষণিক মোকাবেলা প্রয়োজন হয়ে পড়ছে।
ভারতে নব্য ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেতৃত্ব এ কথা বুঝেছে বলেই হয়তো ক্ষমতা গ্রহণের শুরুতেই প্রতিবেশীদের সাথে শুধু বাহ্যিক সুসম্পর্ক নয়, ‘হার্মনি’ বা ঐকতানের সম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে; বৃহৎ শক্তির দরবারভুক্ত হতে প্রতিবেশীদের মাথার ওপর দিয়ে দূরের বাণিজ্যযাত্রায় কতটা ফললাভ হবে তা নিয়ে হিসাব কষছে ভারতের নব্য নেতৃত্ব।
অন্য দিকে বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণ করেছে, ভারতের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই বাংলাদেশের শ্রমশক্তি ও বাণিজ্যিক উদ্যোগ এ দেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করতে সক্ষম হয়েছে, ভারত ও চীন দুই বড় প্রতিবেশীর জন্য ক্রয়ক্ষমতাসম্পন্ন একটি মুক্তবাজার দিচ্ছে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা উভয়েরই কাম্য হয়ে পড়েছে। ধোঁকাবাজ চাঁদাবাজদের পুতুল সরকার আর ‘পছন্দের রাজনৈতিক দল’কে প্রতিবেশী দেশে ক্ষমতা কব্জা করে রাখতে সহায়তা দিয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষা হবে না, এমন একটা উপলব্ধি ভারতের নব্য রাজনৈতিক নেতৃত্বে ঘটেছে বলে ইঙ্গিত এসেছে। দিল্লির বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হওয়ার আগেই ভারতের ‘দি হিন্দু’ পত্রিকার একটা সম্পাদকীয় মন্তব্যে এই উপলব্ধির প্রতিফলন ঘটেছিল। বেসরকারিভাবে হলেও ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় মুখপাত্র সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে বাংলাদেশ সফরে এসে এমন বার্তা দিয়েছেন টেলিভিশনে, ভারতীয় দূতাবাসেরই সহায়তায় বৈঠক করেছিলেন মূলধারার বিরোধী জোটের কয়েকজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির সাথে। কিন্তু বাদ সাধলো, সাঁকো নাড়াল নিরাপত্তারাষ্ট্রমনা ভারতশক্তির আমলাতান্ত্রিক উত্তরাধিকার। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র দলের নেতাদের অপরিবর্তিত এবং সেটা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে পূর্ণ সমর্থন দানের নীতি, এই মর্মে দিল্লির গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে খবর ‘ফাঁস’ ও প্রচারযুদ্ধের মহড়া চলল বাংলাদেশে ও ভারতীয় কিছু কিছু সংবাদপত্রে। দেখা গেল, ওই ‘গোয়েন্দা সূত্রে’ও বিভ্রান্তি বা বিভক্তি দেখা দিয়েছে। দিল্লিতে সীমান্ত নিরাপত্তায় নিযুক্ত দুই দেশের বিজিবি-বিএসএফ বাহিনীর পর্যায়ে একটি নিয়মিত বৈঠকের পর একটি বিশেষ ধরনের ‘সংবাদ ভাষ্যে’ একাধিক ভারতীয় পত্রিকায় কথা উঠল : বিজেপির দীর্ঘ দিনের ব্যক্ত উদ্বেগ বাংলাদেশ থেকে আসাম-পশ্চিমবঙ্গে অবৈধ অনুপ্রবেশের কথা শেখ হাসিনা অস্বীকার করছেন, তাকে বিশ্বাস করা যায় না, তার ৫ জানুয়ারির বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন পাশ্চাত্য বিশ্বে অগ্রহণযোগ্য ইত্যাদি। এরপর ক’দিন যেতে না যেতেই পাল্টা সুর উঠল : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি মহল শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত; পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে ওই মহল প্রচুর অর্থ ব্যয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, তেমনি বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত নেত্রী খালেদাকে ক্ষমতায় বসাতে ওই মহল তৎপর। জাতিসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি শেখ হাসিনাকে এ নিয়ে  হয়তো সতর্ক আভাস দিয়েছেন। প্রতিদানে শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল নেতা ও ভারতের রাজসভা সদস্য আহমেদ হাসান ইমরানের তরফে সারদা কেলেঙ্কারির কালো টাকা বিএনপি-জামায়াতের কাছে পাচার করার ‘প্রামাণ্য তথ্যাদি’ মোদির হাতে তুলে দিতে আগ্রহী হবেন।  বিভিন্নভাবে পল্লবিত হয়ে বাংলাদেশে মার্কিন মদদে ক্যুদেতা ঘটানোর কাহিনীকল্প বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের পত্রপত্রিকায় ক’দিন ধরেই শোরগোল পাকাল। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথাটা এড়িয়ে শুধু বললেন, সারদা কেলেঙ্কারির জের ধরে ইমরানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তবে আইন আইনের পথে চলবে। তথা, দিল্লির রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোনো মাথাব্যথা নেই এ নিয়ে।
নিউ ইয়র্কে মোদি-হাসিনা সাক্ষাৎকার ঘটেছে। ভারতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র স্পষ্ট করে বলেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সরকারপ্রধান যারা মোদির সাক্ষাৎকার চেয়েছেন, তাদের সবাইকেই দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সময় দিয়েছেন মোদি। এমন সাক্ষাৎকার চেয়েছেন বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের সরকারপ্রধান, চাননি পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা মালদ্বীপের নেতারা কেউ। সাক্ষাৎপ্রার্থী তিন সরকারপ্রধানকে সব মিলিয়ে এক ঘণ্টার মতো তথা কমবেশি ২০ মিনিট করে সময় দিয়েছেন মোদি’ জি। শেখ হাসিনার সাথে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ পরামর্শক সভায় ভারতের প্রকাশ্য অবস্থানগুলোরই পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি। শেখ হাসিনাকে উৎখাতের কোনো ষড়যন্ত্রের আভাস তিনি দেননি কিংবা আসামে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশের কথাও তিনি তোলেননি। কার্যত মোদি নিউ ইয়র্কে ও ওয়াশিংটনে যারপরনাই ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করেছেন প্রবাসী ভারতীয় সমাজে সাড়া জাগিয়ে ভারতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে, মার্কিন ব্যবসায়ী সমাজে ভারতীয় আমলাতন্ত্রভীতি দূর করতে, আর প্রবৃদ্ধিতে ভাটা পড়া ভারতের নব্য নেতৃত্বে বিশ্বসমাজের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে। সে কাজ তিনি সুনিপুণভাবেই করেছেন। বাংলাদেশের জন্য সান্ত্বনার কথা, এ দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পানি ঘোলা করে শখের মাছ শিকারের প্রবৃত্তি থেকে আপাতত তিনি বিরত থাকছেন।
লেখক : বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট

No comments

Powered by Blogger.