টেকনাফে সাড়ে তিন কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার

দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন, সেই ধারণা লোপ পেতে চলেছে। সে কারণেই সম্ভবত কক্সবাজার-৪ আসনের সাংসদ আবদুর রহমান বদিকে কারাগারে প্রেরণের খবরটি গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। বদি কক্সবাজার অঞ্চলের একটি কৌতূহলোদ্দীপক রাজনৈতিক চরিত্র। তাঁকে আওয়ামী লীগ যাতে মনোনয়ন দেয়, সে জন্য তাঁর কর্মী বাহিনী তাঁর নির্বাচনী এলাকা টেকনাফ-উখিয়ায় কলাগাছ রোপণের মতো অভিনব কাণ্ড করেছিল। গতকাল তাঁকে কারাগারে প্রেরণের পর তাঁর বাহিনী টেকনাফ ও উখিয়ার সঙ্গে কক্সবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং দোকানপাট বন্ধ করে দিয়ে একটি ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ হরতালের পরিবেশ সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় বদির সমর্থন থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা স্বাভাবিক। আর তা সত্য হলে সেটা একটি গুরুতর অসদাচরণ। প্রচলিত আইনকানুন অমান্য করে তাঁর কর্মীরা জনজীবনে যে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে, তা তদন্তের দাবি রাখে। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দল এ ঘটনাকে উপেক্ষা করতে পারে না। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের জন্য দুই রকম আচরণ দেশে চলতে পারে না।
বিএনপির মনোনয়ন লাভের পর তা বাতিল হওয়ার ক্ষোভ নিয়ে বদি আওয়ামী লীগে ভিড়েছিলেন। টেকনাফের পৌর প্রশাসক থাকতে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের সুরাহা হয়নি। ‘ইয়াবা নিয়ন্ত্রক’ হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এর আগে উঠেছে, তা এখনো অমীমাংসিত। তাঁর পরিবারের অনেকের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকারও অভিযোগ অছে। তাঁর খোঁড়া যুক্তি হলো ‘তাঁর মা নয়জন, ভাইবোনের সংখ্যা বেশি। তাই তাঁদের নজরদারি তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়!’
ক্ষমতাসীন দলীয় এক সাংসদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের আশাব্যঞ্জক। তবে আদালতে যেকোনো মামলার সফল পরিসমাপ্তি উল্লেখযোগ্যভাবে রাষ্ট্রপক্ষের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। বদি কারাগারে গেলেও জামিন পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তাঁর বিরুদ্ধে দুদকের মামলার রায় কবে হবে? আমরা মনে রাখব, রাষ্ট্রের দুর্বলতার কারণে অনেক সময় প্রকৃত অপরাধীও রেহাই পেয়ে যায়।

No comments

Powered by Blogger.