চার সিটি নির্বাচন-অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হোক

কয়েক সপ্তাহের উত্তাপ-উত্তেজনার আজ শেষদিন। দেশের চার সিটি করপোরেশন এলাকার মানুষ আজ বেছে নেবে তাদের আগামী দিনের প্রতিনিধি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারে প্রার্থীদের ব্যস্ত সময় কেটেছে।
সব অপেক্ষার অবসান আজ। সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ।
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও এর রাজনৈতিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই চার সিটি করপোরেশন নির্বাচন সরকারের শেষ সময়ে এসে অন্য রকম গুরুত্ব বহন করে। একদিকে বর্তমান নির্বাচন কমিশন এই প্রথমবারের মতো একসঙ্গে চারটি বড় ধরনের নির্বাচন পরিচালনা করতে যাচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রমাণেরও বড় পরীক্ষা এই চার সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আর বিরোধী দলের জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সুযোগ এই নির্বাচন। কাজেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও এই চার সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আগামী জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে। তাই এই নির্বাচনকে সরকারি ও বিরোধী দল সমান গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচনা করেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে আগে থেকেই এলাকায় গিয়ে প্রচারে অংশ নিয়েছেন। দলীয় সমর্থন ছিল প্রকাশ্য।
চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীরা যথাসম্ভব প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। বিশেষ করে মেয়র প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনা করতে গিয়ে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরেছেন। চারটি সিটি করপোরেশনেই গতবারের নির্বাচিত মেয়ররা এবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা তাঁদের সময়ে সিটি করপোরেশন এলাকায় উন্নয়নের কথা বলছেন।
যেকোনো নির্বাচনের আগে উত্তাপ-উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তার ব্যত্যয় এই চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ক্ষেত্রেও ঘটেনি। নির্বাচন নিয়ে টাকার খেলার অভিযোগ বরাবরই পাওয়া যায়। এই চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও টাকার খেলা হয়েছে, এমন অভিযোগ উঠেছিল। ছোটখাটো অভিযোগ থাকলেও প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবেই মেনে চলেছেন। তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা খুব একটা ঘটতে দেখা যায়নি। তবে নির্বাচনের দিন, অর্থাৎ আজ কোথাও কোথাও সহিংসতা বা নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে বলে ধারণা করা যেতে পারে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এই চার সিটি করপোরেশনের নির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের শেষ সুযোগ। কাজেই চার সিটি করপোরেশন এলাকা তো বটেই, জাতীয় নির্বাচনেও এই নির্বাচনের ফল প্রভাব ফেলবে। স্বাভাবিকভাবেই সারা দেশের দৃষ্টি এই চার সিটি করপোরেশনের দিকে। আজকের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আমরা আশা করি। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.