কেন গেল না ভারত

ম্যাচ তো ছিলই না। ছিল না অনুশীলনও। ভারতীয় দল ছিল লন্ডনেই। কিন্তু পরশু সন্ধ্যায় লন্ডনের গ্রসভেনর হাউস হোটেলে আইসিসি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ছিলেন না ভারতীয় দলের একজনও!
অথচ তিনটি ক্যাটেগরিতে সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন ভারতের চারজন। অনুপস্থিতি নিয়ে ভারতীয় দল ও আইসিসি দায় চাপাচ্ছে পরস্পরের ওপর। তবে ব্রিটিশ মিডিয়ার ধারণা, পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা কম দেখেই আগ্রহ দেখাননি ভারতীয় ক্রিকেটাররা! আইসিসি অ্যাওয়ার্ডের অষ্টম আসরে পুরস্কৃত হয়েছেন কেবল একজন ভারতীয়। ট্রেন্টব্রিজ টেস্টে রান আউট হওয়া ইয়ান বেলকে ডেকে পাঠানোয় ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি।
ভারতের ম্যানেজার শিবলাল যাদবের দাবি, ‘অনুষ্ঠানের দিন বিকেলে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এত সংক্ষিপ্ত সময়ের নোটিশে এত বড় অনুষ্ঠানে যাওয়া সম্ভব ছিল না। আজই আমাদের কার্ডিফে চলে যাওয়ার কথা ছিল, শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনায় যাওয়া হয়নি।’ তবে ভারত ম্যানেজারের দাবিটা আবার উড়িয়ে দিলেন আইসিসির মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান কলিন গিবসন, ‘বিসিসিআইকে আমরা দুই মাস আগেই জানিয়েছিলাম। গত ২৬ আগস্ট পুরো দলকেই আবারও আমন্ত্রণ জানানো হয়। ভারতীয় দল না আসায় আমরা বরং অবাক হয়েছি।’
বিসিসিআই ভারতীয় দলের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে—প্রমাণস্বরূপ এমন একটা ই-মেলও নাকি আছে, জানালেন আইসিসির এক মুখপাত্র। ওই মুখপাত্রের দাবি, অনুষ্ঠানের কারণেই সোমবার কার্ডিফে যায়নি ভারত। কিন্তু অনুপস্থিতির কারণ রহস্যজনক। অনুষ্ঠানে থাকা বিসিসিআইয়ের সহসভাপতি রাজীব শুক্লা বললেন আবার অদ্ভুত কথা, ‘আমি ভেবেছিলাম যারা মনোনয়ন পেয়েছে, তারা অন্তত আসবে।’
মজার ব্যাপার, আইসিসির প্রধান ও বিসিসিআইয়ের সাবেক প্রধান শারদ পাওয়ার ছিলেন অনুষ্ঠানে, তুলে দিয়েছেন কিছু পুরস্কার। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ, বর্ষসেরা ক্রিকেটারের স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স ট্রফি জয়ী জোনাথন ট্রট হয়ে পড়েছিলেন আবেগ আপ্লুত, ‘কখনোই ভাবিনি এই অ্যাওয়ার্ড পাব। সাফল্যের এই স্বীকৃতি পাওয়ার অনুভূতি অসাধারণ।’ পুরস্কারের জন্য বিবেচনায় নেওয়া সময়কালে (৩১ আগস্ট ২০১০ থেকে ৩ আগস্ট ২০১১) ১২ টেস্টে ৬৫.১২ গড়ে ১০৪২ রান করেছেন ট্রট, ২৪ ওয়ানডেতে ৪৮.৩৬ গড়ে রান ১০৬৪।
ট্রটের সতীর্থ অ্যালিস্টার কুক বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের ট্রফি নিয়েছেন কার্টলি অ্যামব্রোসের হাত থেকে। ইংলিশ ওপেনার কৃতিত্ব দিলেন সতীর্থদের, ‘বছরটি ছিল অসাধারণ। এই পুরস্কার শুধু আমার নয়, পুরো দলের।’ পরশু দুটো পুরস্কার জেতা একমাত্র ক্রিকেটার (বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার ও পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ড) কুমার সাঙ্গাকারা অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভিডিও বার্তায়, ‘এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়াটাই দারুণ সম্মানের। পুরস্কার জেতা তো আরও বেশি সম্মানজনক।’ একই রকম প্রতিক্রিয়া ছিল বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটার দেবেন্দ্র বিশুর, ‘সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকাটাই বিশ্বাস হচ্ছিল না। সেখানে পুরস্কারও পেয়ে গেলাম, খুব ভালো লাগছে।’ বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স জয়ী টিম সাউদির কথা, ‘এই পুরস্কার জয়ের স্মৃতি কখনোই ভুলব না।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের কারণে অনুষ্ঠানে ছিলেন না বর্ষসেরা মহিলা ক্রিকেটার ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্টেফানি টেলর। থাকতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন সহযোগী ও অধিভুক্ত দেশগুলোর সেরা ক্রিকেটার রায়ান টেন ডেসকাট। গত চার বছরের মধ্যে তৃতীয়বার এই পুরস্কার জিতলেন ডাচ অলরাউন্ডার। বর্ষসেরা আম্পায়ারের ডেভিড শেফার্ড ট্রফি টানা তৃতীয়বার জিতেছেন পাকিস্তানের আলিম দার।

No comments

Powered by Blogger.