লিবিয়া অভিযানের কোনো সময়সীমা নেই

ন্যাটো জোটের লিবিয়া অভিযানের কোনো সময়সীমা নেই বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ। তিনি বলেন, লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলতে থাকবে।
বিবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হেগ বলেন, ‘আমরা কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করছি না। আপনারা হয়তো এ ক্ষেত্রে বড়দিনের কথা বলতে পারেন। কিন্তু এটা কয়েক দিন, কয়েক সপ্তাহ অথবা কয়েক মাসব্যাপী চলতে পারে। সফলতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।’
এর আগে শনিবার লিবিয়ার বিদ্রোহী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বেনগাজিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিদ্রোহীদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তাদেরই গড়া সংগঠন ন্যাশনাল ট্র্যানজিশনাল কাউন্সিলের প্রধান মুস্তাফা আল-জলিল।
বৈঠক সম্পর্কে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রধান কারণে আমরা মিলিত হয়েছিলাম। তা হলো লিবিয়ার সাধারণ মানুষের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা প্রদর্শন।’ তিনি বলেন, লিবিয়ার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রূপরেখা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
বিদ্রোহী নেতাদের সঙ্গে হেগের এই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ন্যাটো জোটের হামলায় ফের কেঁপে ওঠে ত্রিপোলি। যুদ্ধবিমান ও অ্যাপাচি হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালানো হয় বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে।
ন্যাটো জোটের এই হেলিকপ্টার হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। মস্কো বলেছে, ন্যাটো এর মধ্য দিয়ে স্থল অভিযানের দিকে যাচ্ছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই লাভরভ বলেন, হেলিকপ্টার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ‘দুঃখজনক’। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সচেতনভাবে হোক আর অসচেতনভাবে হোক যা ঘটছে তা স্থল অভিযানের দিকে যাচ্ছে।’ মস্কো বরাবরই আলোচনার মাধ্যমে লিবিয়া সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে আসছে।
তবে হেগ বলেন, ‘আমরা এটা (অভিযান চালানো) না করলে গাদ্দাফি বাহিনী পুরো লিবিয়ায় দমনপীড়ন চালাত। এতে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় দেখা দিত। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ত সব খানে। তিউনিসিয়া ও মিসরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠত।’ রাশিয়ার অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলেন, ন্যাটো জোট স্থল অভিযান চালাচ্ছে না। তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত নীতিতে অটল থাকবে।
হেগ বলেন, ‘অভিযান জোরদারে হেলিকপ্টার ব্যবহার করছি আমরা। তার মানে এই নয় যে আমরা স্থল অভিযান চালাচ্ছি। অভিযানে সফলতা পেতে অভিযানের ধরন পরিবর্তন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, গাদ্দাফির এক্ষুনি সরে যাওয়া উচিত। তবে তিনি বলেন, ‘যত দিন দরকার হয় তত দিন লিবিয়ার সাধারণ মানুষের পাশে থাকবে যুক্তরাজ্য।
ন্যাটো জোট রোববার রাতে রাজধানী ত্রিপোলিসহ এর পূর্বাঞ্চলীয় শহরতলি এলাকায় হামলা চালায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ত্রিপোলির কেন্দ্রস্থলে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। পরে রাত আড়াইটার দিকে ঘটে আরও চারটি বড় বিস্ফোরণ। এর আগে কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা। তাঁরা বলেন, এই অভিযানের লক্ষ্য কী ছিল তা তাঁরা জানেন না।
উল্লেখ্য, গত শনিবার প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের অ্যাপাচি ও ফ্রান্সের গ্যাজেল হেলিকপ্টার দিয়ে লিবিয়ায় হামলা চালানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.