গাদ্দাফি ক্ষমতা না ছাড়া পর্যন্ত লিবিয়ায় হামলা চলবে

মার্কিন, ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের নেতারা বলেছেন, মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতা না ছাড়া পর্যন্ত লিবিয়ায় তাঁর অনুগত বাহিনীর ওপর হামলা চালাবে ন্যাটো। গাদ্দাফিকে ক্ষমতায় রেখে লিবিয়ার ভবিষ্যতের কথা ভাবা ‘অচিন্তনীয়’। তাঁকে ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে লিবিয়ার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার শামিল। ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন, লি ফিগারো ও টাইমস অব লন্ডন-এ প্রকাশিত তিন নেতার যৌথ আর্টিকেলে এসব কথা বলা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি ওই আর্টিকেলে স্বাক্ষর করেন।
মিসরের রাজধানী কায়রোতে এক আলোচনায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ও আরব লিগের মহাসচিব আমর মুসা যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে লিবিয়া-সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
লিবিয়ায় হামলা জোরদার করতে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বার্লিনে বৈঠক করেছেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনে লিবিয়া অভিযান শুরু হওয়ার পর গাদ্দাফিকে গত বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো রাজধানী ত্রিপোলির রাজপথে দেখা গেছে।
ওবামা, ক্যামেরন ও সারকোজি ওই আর্টিকেলে বলেন, লিবিয়ার মিসরাতা ও আজদাবিয়া শহরে গাদ্দাফির অনুগত বাহিনী এখনো নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। গাদ্দাফি ক্ষমতায় থাকলে লিবিয়া একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তাই তিনি যত দিন ক্ষমতায় থাকবেন, তত দিন ন্যাটো অভিযান চালিয়ে যাবে। লিবিয়ার জনগণকে রক্ষায় এ অভিযান চলবে। আর্টিকেলে বলা হয়, সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় একনায়ক গাদ্দাফির হাত থেকে ক্ষমতা লিবিয়ার নতুন প্রজন্মের কাছে যাবে। লিবিয়া পুনর্গঠনে জাতিসংঘ ও এর সদস্যরাষ্ট্রগুলো সহায়তা দেবে।
কায়রোতে এক আলোচনায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, ‘নিজ দেশের জনগণকে হত্যা করে গাদ্দাফি মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। আন্তর্জাতিক আইনও অমান্য করেছেন। তাঁর আর ক্ষমতায় থাকার বৈধতা নেই।’ তবে তিনি বলেন, লিবিয়া-সংকট উত্তরণে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছাতে হবে।
আরব লিগের মহাসচিব আমর মুসা বলেন, লিবিয়ায় মূলত মানবিক সংকট চলছে। তিনি যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে রাজনৈতিক সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। আমর মুসা বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ লিবিয়া অভিযানের অনুমোদন দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটির সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
কায়রো আলোচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাস্টন, ওআইসির প্রধান একমেলেদ্দিন এহসানেগলু, আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) চেয়ারম্যান জিন পিং উপস্থিত ছিলেন।
ন্যাটোর হামলার মধ্যেও গাদ্দাফিকে বৃহস্পতিবার ত্রিপোলির রাজপথে দেখা গেছে। ছাদ খোলা একটি গাড়িতে করে তিনি রাজপথে ঘোরেন। এ সময় সমর্থকেরা তাঁকে ঘিরে রাখে। তারা স্লোগান দেয়—‘আল্লাহ, লিবিয়া ও গাদ্দাফি ছাড়া আর কিছু নয়’।

No comments

Powered by Blogger.