মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের জয়ে বাধা হতে পারে বিজেপি!

চলতি মাসের শেষে এবং আগামী মাসের প্রথম দিকে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বিহার রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিছু সমস্যা সত্ত্বেও নির্বাচন সামনে রেখে বিহারের ক্ষমতাসীন জোট ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও জনতা দল (ইউনাইটেড) বা জেডি (ইউ) একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে—গুজরাটের মুখমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপির সাংসদ বরুণ গান্ধীকে তারা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করবে না। এ দুজনই কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসেবে পরিচিত। কাজেই তাঁদের উপস্থিতি কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষ যাতে মুসলিম ভোট টানতে না পারে, সে জন্য এই কৌশল।
তবে বিজেপি-জেডির (ইউ) যৌথ নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে আরেকটি সমস্যা রয়ে গেছে। রামমন্দির নিয়ে আন্দোলনের প্রধান প্রচারক এল কে আদভানি এবং অযোধ্যা মামলার কৌঁসুলি রবিশঙ্কর প্রসাদকে নিয়ে প্রচারণা চালাতেও সমস্যার মুখে পড়তে হবে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে। কেননা অযোধ্যা মামলার রায় হলো সবে। অযোধ্যায় সেই জমির তিন ভাগের এক ভাগ পেয়েছে মুসলিমরা অন্য দুই ভাগ হিন্দুরা। কাজেই মুসলিমরা এটাকে সহজভাবে নেবে না। আর সে বিষয়টি ভোলার আগেই এ নির্বাচনে বিজেপি যতই হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের কথা বলুক, তা কাজে আসবে বলে মনে হয় না। বিশেষ করে আদভানি ও রবিশঙ্করেরা যদি প্রাচারণায় যোগ দেন, তাহলে সেটা আরও কঠিন হবে।
বিজেপি আগেই ঘোষণা দিয়েছে, জেডির (ইউ) সঙ্গে তারা যৌথভাবে অনেক সমাবেশ করবে। কিন্তু জেডির (ইউ) নেতারা এখন বলছেন, এ ধরনের সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। এর আগে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন ও ২০০৫ সালের রাজ্যসভা নির্বাচনে দেখা গেছে, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ও লোক জন শক্তি (এলজেপি) ভালো করতে পারেনি মুসলিমদের কাছে টানতে না পেরে। তবে আরজেডি ও এলজেপি আশা করছে, আযোধ্যা মামলার রায়ের পর সংখ্যালঘু ভোটাররা এবার ক্ষমতাসীন জোটের বিপক্ষে রায় দেবে। রায়ের পর আরজেডির নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের আচরণে পরিবর্তন এসেছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, আদভানি ও রবিশঙ্করের উপস্থিতিকে তিনি পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাইবেন।
তবে জেডি (ইউ) মনে করে, এবার নির্বাচনে বিহারে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার দুজন, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার (জেডি-ইউ) ও লালুপ্রসাদ (আরজেডি)। অযোধ্যার বিষয়টি ইস্যু হোক বা না হোক, এ দুজনের মধ্য থেকেই একজনকে বেছে নেবে ভোটাররা। আর এ ক্ষেত্রে নীতিশ কুমারই এগিয়ে থাকবেন তাঁর উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে। যদিও অযোধ্যা মামলার রায়কে নির্বাচনী প্রচারণায় কাজে লাগানো বিজেপির জন্য কঠিন হবে।
ঠিক এ কারণেই বিজেপি ছাড় দিতে রাজি হয়েছে নরেন্দ্র মোদি ও বরুণ গান্ধীকে ব্যবহার না করার ক্ষেত্রে আপস করে। তবে আদভানি ও রবিশঙ্কর প্রসাদ তো রইলেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তাঁদের উপস্থিতি আসলে কী ফল দেবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

No comments

Powered by Blogger.