হারার ভয়ে অনেক মন্ত্রী চান না বিধানসভার নির্বাচনে দাঁড়াতে

পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তনের হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শাসক জোট বামফ্রন্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের অগ্রযাত্রায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রাজ্যের অনেক মন্ত্রী। তাঁরা এতটাই শঙ্কিত যে অনেক মন্ত্রী আগামী বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইছেন না।
গত লোকসভা নির্বাচনের সময় বিধানসভার আসনভিত্তিক ফলাফলে দেখা গিয়েছিল বামফ্রন্ট ২৯৪টি আসনের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে পিছিয়ে। এতে আরও দেখা যায়, বর্তমান বাম মন্ত্রিসভার অন্তত ২২ জন সদস্য লোকসভার ভোটের হিসাবে পিছিয়ে রয়েছেন। এবার আবার ৮১টি পৌরসভার নির্বাচনের পর দেখা গেছে, এসব পৌর এলাকায় অন্তত ১০ জন মন্ত্রী পিছিয়ে রয়েছেন। এই পিছিয়ে পড়ার তালিকায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও। এ ছাড়া রয়েছেন অর্থমন্ত্রী অসীম দাসগুপ্ত, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ দে, পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী, তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী দেবেশ দাস, বিদ্যালয় শিক্ষামন্ত্রী অনাদি সাহু, কৃষিমন্ত্রী নরেন দে, দমকলমন্ত্রী প্রতীম চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
বামফ্রন্টের শরিকেরা ভোটের এই অঙ্কটি ভালোভাবে পর্যালোচনা করে এটুকু বুঝেছে যে সামনে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে দুঃসময়। ক্ষমতায় টিকে থাকাই কঠিন হবে। তাই এখনই রাজ্য মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই হারের ভয়ে প্রার্থী হতে চাইছেন না। বলছেন, আসুক নতুন মুখ।
রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা ২০১১ সালের মে মাসে। কিন্তু তৃণমূল চাইছে এর আগেই বিধানসভা ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচন করতে। তাতে অবশ্য সায় দিচ্ছে না বামফ্রন্ট।
এদিকে পিছিয়ে পড়া মন্ত্রী ছাড়াও অনেক মন্ত্রী আছেন যাঁরা আর চাইছেন না আগামী বছরের নির্বাচনে অংশ নিতে। তাঁদের মধ্যে আবার অনেকে বলতে শুরু করেছেন, অনেক দিন তো হলো, এবার না হয় ওরা ক্ষমতায় আসুক। এই মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন, ভূমি সংস্কারমন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা, পরিবেশমন্ত্রী শৈলেন সরকার, বিদ্যালয় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ দে, অনুন্নত সম্প্রদায় কল্যাণমন্ত্রী যোগেশ বর্মণ, পৌরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ প্রমুখ।
মন্ত্রিসভার অনেকেই এখন চাইছেন বামফ্রন্ট ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনে এসে মানুষের রায় নিক। রাজ্যের পানিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী নন্দগোপাল ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘জোর করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। একের পর এক নির্বাচনে মানুষ আমাদের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছে। আমি মনে করি এই জনাদেশকে আমাদের সম্মান জানানো উচিত।’

No comments

Powered by Blogger.