জেরুজালেম আমাদের রাজধানী

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘জেরুজালেমে বসতি নির্মাণের অধিকার ইসরায়েলিদের রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জেরুজালেম কোনো অধিকৃত বসতি নয়, এটি আমাদের রাজধানী।’ গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ইসরায়েলপন্থী লবিগোষ্ঠী এইপ্যাকের একটি সম্মেলনে বক্তৃতা দেয়ার সময় এ কথা বলেন তিনি। খবর বিবিসি ও এএফপির।
এর আগে একই সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ইসরায়েলকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি এলাকায় ইহুদি বসতি স্থাপন কার্যক্রমের সম্প্রসারণ শান্তিপ্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে খাটো করে ফেলছে। তবে দুজনই তাঁদের বক্তব্যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে একই ধরনের সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করেন এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নিরঙ্কুশ সমর্থনের কথা জানান।
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠকের আগে হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে আলাদা একটি বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকের একপর্যায়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাকও যোগ দেন।
হিলারির মুখপাত্র ফিলিপ ক্রাউলি বলেন, বৈঠকে তাঁরা পরিস্থিতি ভালো করার বিষয়ে সম্ভাব্য উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আস্থার একটি পরিবেশ তৈরি করার জন্যই মূলত আজ করছি আমরা। যাতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো পরোক্ষ আলোচনায় মূল বিষয়গুলো তুলে ধরতে পারে এবং যত দ্রুত সম্ভব সরাসরি আলোচনায় বসতে পারে।’ এই মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা, জেরুজালেম নিয়ে সিদ্ধান্ত, ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের ভাগ্য এবং ভবিষ্যত্ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সীমানা।
প্রভাবশালী আমেরিকান ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটির (এইপ্যাক) সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইহুদিরা তিন হাজার বছর আগে জেরুজালেম তৈরি করেছে এবং আজও তারা এই নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে।’ অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের বসতি জেরুজালেম শহরের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং যেকোনো শান্তি চুক্তিতেই এটি ইসরায়েলের অধীনে থাকবে। তাই এখানে বসতি নির্মাণ দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে শান্তি আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী হিসেবে চায় এবং চায় তারা স্বাধীনভাবে বসবাস করুক।’ সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বাইরে থেকে শান্তি চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
একই সম্মেলনে ক্লিনটন বলেন, শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতেই অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন কার্যক্রমের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি পশ্চিম তীরের পাশাপাশি পূর্ব জেরুজালেমেও বসতি স্থাপন কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানান। এ ছাড়া মানবিক দিক বিবেচনা করে গাজা থেকে ইসরায়েলের অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বানও জানান হিলারি।

No comments

Powered by Blogger.