এসইসির বিভ্রান্তিকর নির্দেশনা

দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে গতকাল মঙ্গলবার লেনদেন শুরু হয়েছিল সূচকের ঊর্ধ্বগতি দিয়ে।
কিন্তু বেলা দেড়টার পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ঋণসুবিধাসংক্রান্ত একটি আদেশকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ফলে দ্রুত কমতে থাকে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ সময় বিনিয়োগকারীদের একটা অংশ রাস্তায় নেমে এসে এসইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে তারা রাজধানীর দিলকুশায় এসইসির কার্যালয়ে গিয়ে আদেশটি প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
তবে এসইসি বলেছে, আদেশটির ভুল ব্যাখ্যার কারণে বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। সিদ্ধান্তটি বরং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয়েছে।
এসইসির আদেশে বলা হয়েছে, ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে তাদের গ্রাহকদের ঋণ রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনে পোর্টফোলিও বা শেয়ারের মূল্যায়নের জন্য একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শেয়ারের সর্বশেষ বাজারমূল্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভি) যোগ করে দুই দিয়ে ভাগ দিয়ে যে অঙ্কটি দাঁড়াবে, সেটিই হবে ঋণ রক্ষণাবেক্ষণের ভিত্তি। অর্থাৎ কোনো শেয়ারের বাজারমূল্য এক হাজার টাকা ও এনএভি ৪০০ টাকা হলে এসইসির পদ্ধতি অনুযায়ী ঋণ রক্ষণাবেক্ষণের সময় শেয়ারটির মূল্য ৭০০ টাকা ধরে নেওয়া হবে।
যোগাযোগ করা হলে এসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন এ আদেশ ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে যে হারে ঋণসুবিধা পাচ্ছেন সে হারেই পাবেন। পদ্ধতিটি কেবল মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের গ্রাহকদের ঋণ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রযোজ্য হবে।’
কিন্তু এসইসিরই অনেক কর্মকর্তা এ পদ্ধতিকে হাস্যকর বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁরা বলেন, নিজের মূলধনের দেড় গুণ (১:১.৫) ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করার পর এ পদ্ধতিতে শেয়ারের মূল্যায়ন করা অনেক ক্ষেত্রে প্রথম দিনেই গ্রাহককে বিক্রির চাপে পড়তে হবে।
লেনদেন চলাকালীন এমন একটি আদেশ দেওয়ার জন্য কঠোর সমালোচনা করেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে লেনদেন চলাকালীন কোনো তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার কথা বললেও এসইসি নিজেই তা মানছে না।
বাজার পরিস্থিতি: গতকাল দিন শেষে ডিএসইর সাধারণ সূচক ৪৩ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টে নেমে আসে।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৯০ কোটি টাকা বেড়ে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক ২৫ পয়েন্ট কমে হয়েছে ১৬ হাজার ৬৮। লেনদেন হয়েছে ৯৪ কোটি টাকার শেয়ার।

No comments

Powered by Blogger.