নিউজিল্যান্ডকে সাকিবদের সতর্কবার্তা

সফরের প্রথম তিন ম্যাচে ল্যাজ গুটিয়ে থাকা ‘বাঘ’ হঠাত্ শেষ ওয়ানডেতে থাবা মেলে ধরায় নিউজিল্যান্ড একটু বিস্মিত। নিউজিল্যান্ডেরই একটি দৈনিক যেমন লিখেছে, অবশেষে থাবা থেকে কয়েকটি নখ বের করে দেখাল ‘টাইগার’রা। স্টাফ নামের পত্রিকাটির মন্তব্য, ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটা আসলে নিউজিল্যান্ডের জন্য সতর্কবার্তা।
আসলেই কি তা-ই? অপরিচিত কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া বাংলাদেশ কি তাহলে সফরের একমাত্র টেস্টে দারুণ লড়াইয়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে? ক্রাইস্টচার্চের গত ওয়ানডেটার কারণেই আসলে এই সব জিজ্ঞাসা। কিন্তু ড্যানিয়েল ভেট্টোরি আশ্বস্ত করছেন, আগামী পরশু থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্টে কোনো অঘটনের আশঙ্কা তাঁরা করছেন না। দ্রুতই ক্রিকেটের দীর্ঘ সংস্করণের সঙ্গে মানিয়ে নেবে তাঁর দল।
‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটাই এমন। খেলাটা যে সংস্করণেরই হোক, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভালো খেলোয়াড়েরা সেটি ঠিকই মানিয়ে নেয়। এভাবেই ক্রিকেট হচ্ছে এখন। তাই ভালো খেলোয়াড় হতে চাইলে আপনাকে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে পারফর্ম করতে হবে। খেলাটা ক্রিকেটের কোন ফর্মে হচ্ছে সেটা নিয়ে ভাবলে চলবে না’—বলেছেন ভেট্টোরি।
ওয়ানডে সিরিজের পর মাঝখানে তিন দিনের বিরতি। এই বিরতিতে বাংলাদেশ দল বা নিউজিল্যান্ড কেউই কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে না। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের জন্য এটা কোনো সমস্যা হবে না বলে তো ভেট্টোরি জানিয়েই দিলেন। কিন্তু অভিজ্ঞতার ঘাটতি নিয়ে সফর করা তরুণ বাংলাদেশ দলটি পারবে তো?
হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের এই দলটির মধ্যে আছে কেবল মোহাম্মদ আশরাফুলের। ২০০১ সালের ওই সফরে বাংলাদেশ অবশ্য শুরুতে চমকে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। ৫১ রানে তুলে নিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের প্রথম ৪ উইকেট। যদিও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ইনিংস ব্যবধানেই হারতে হয়েছে। তখনকার বাংলাদেশ দলের এটাই ছিল ধরাবাঁধা পরিণতি।
এই বাংলাদেশ অবশ্য ‘নতুন বাংলাদেশের’ ধ্বজা উড়িয়ে এবার সফর করছে নিউজিল্যান্ডে। ওয়ানডে সিরিজ জেতার হুমকিও শোনা গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত শেষ ম্যাচে ওই খানিকটা লড়াই বাদ দিলে বাকি থাকে শুধু লজ্জা। শেষ ম্যাচের লড়াইটাও হয়েছে উইকেট স্পিন-সহায়ক হওয়ায়। ভেট্টোরি নিজে স্বীকার করেছেন, উইকেটের চরিত্র আসলে তাঁরা বুঝতে ভুল করেছেন।
খানিকটা স্পিন-সহায়ক উইকেট পেতেই ওয়ানডেতে নিজের ক্যারিয়ার-সেরা বোলিং করেছেন সাকিব আল হাসান। তাঁর টেস্ট-সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটাও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এই দুই প্রেরণা নিয়ে হ্যামিল্টনে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অবশ্য স্পিন-সহায়ক উইকেট তিনি এবার পাবেন কি না, সেই নিশ্চয়তা নেই। হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ড সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে গত মার্চে, ভারতের বিপক্ষে। তখন উইকেটের চরিত্র মিশ্র বলেই মনে হয়েছিল। প্রথম ইনিংসে ভারতের তিন পেসার যেমন ৯ উইকেট নিয়েছিলেন, তেমনই দ্বিতীয় ইনিংসে হরভজন সিং একাই তুলেছিলেন ৬ উইকেট। ওই ম্যাচটাও ১০ উইকেটে হেরেছিল নিউজিল্যান্ড। এ মাঠে সর্বশেষ চার টেস্টের মাত্র একটা জিতেছে স্বাগতিকেরা। হেরেছেও অবশ্য ওই একটিতে।

No comments

Powered by Blogger.